সরকারি পাটকল কেন অলাভজনক জানতে চান বাসদ নেতারা

প্রকাশ | ১৫ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সরকারি পাটকল কেন অলাভজনক তা জানতে চেয়ে সরকারের কাছে প্রশ্ন করেছেন বাসদ নেতারা। তারা বলেন, সরকারি পাটকল কেন অলাভজনক তার কোনো সঠিক রিপোর্ট আজ পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু ঢালাওভাবে শ্রমিকদের ওপর দায় চাপিয়ে আদমজীসহ বেশিরভাগ পাটকল বন্ধ করা হয়েছে। যেগুলো বর্তমানে চালু আছে সেগুলোকেও বেসরকারি খাতে মুষ্টিমেয় মুনাফালোভী গোষ্ঠীর হাতে ছেড়ে দেয়ার চক্রান্তের অংশ হিসেবেই শ্রমিকদের মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না এবং বকেয়া বেতন দেয়া হচ্ছে না। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাসদ ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ পাটকল শ্রমিকদের ৯ দফা দাবিতে ধর্মঘটের সমর্থনে এবং শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবি মেনে নেয়ার দাবিতে মানববন্ধন, সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। নেতারা বলেন, শুধু খুলনা অঞ্চলের ৯টি পাটকল শ্রমিকদের ১২ সপ্তাহের মজুরি ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের ৩-৪ মাসের বকেয়া বেতন বাবদ পাওনা ৭৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। কিন্তু ওই ৯টি পাটকলে ৩২৫ কোটি টাকার পাট পণ্য মজুত আছে। ৯টি পাটকলের প্রতিদিনের উৎপাদন ক্ষমতা ২৭২ টন কিন্তু সেখানে প্রতিদিন উৎপাদন করা হচ্ছে ১০০.২৯ টন। এখানে প্রতিদিন যে ১৭২ টন কম উৎপাদন হচ্ছে, রাষ্ট্রের ক্ষতি হচ্ছে তার দায় দায়িত্ব কার। মৌসুমে ১২০০/১৫০০ টাকা মণ দরের পাট সময়মতো না কিনে পরে ২৫০০/৩০০০ টাকা দিয়ে ব্যবসায়ী ও ফড়িয়াদের কাছ থেকে কেনার ফলে যে ক্ষতি হয় তার দায়িত্ব কেন শ্রমিকরা নেবে। অর্থ মন্ত্রণালয় কেন সময়মতো অর্থ ছাড় করে না। এসবই শাসক-লুটেরাদের চক্রান্ত। তারা আরও বলেন, সারা বিশ্বে সবুজায়নের জন্য ও পরিবেশ রক্ষা জন্য আন্দোলন হচ্ছে। এর ফলে পাট পণ্যের ব্যাপক বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। সারা বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন পিস শপিং ব্যাগের চাহিদা রয়েছে। এর মাত্র ৫ শতাংশ যদি আমরা রফতনি করতে পারি তাহলে হাজার হাজার কোটি টাকার রফতানি আয় করা সম্ভব। কিন্তু সরকারের নীতি সেই মুখী নয়। বক্তারা সরকারের এই ভুলনীতি পরিহার ও দুর্নীতি বন্ধ করে পাটকল ও পাট চাষীদের রক্ষা এবং ধর্মঘটি পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতনসহ ৯ দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান। একই সঙ্গে পাটশিল্পের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় পাটকল শ্রমিক, পাট চাষী ও দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আহ্বান জানান। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসদ ঢাকা মহানগর শাখার আহ্‌বায়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাসদ মহানগর শাখার সদস্য সচিব জুলফিকার আলী, সদস্য খালেকুজ্জামান লিপন, আহসান হাবিব বুলবুল, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুর রাজ্জাক, সহ-সম্পাদক ইমাম হোসেন খোকনসহ অন্য নেতারা।