ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফেরার ইঙ্গিত ডিএসইর

বেড়েছে মূল্য আয় অনুপাত

প্রকাশ | ৩০ জুন ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি রিপোর্ট দরপতনের বৃত্ত থেকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। তবে লেনদেন হওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। এরপরও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) আগের সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৩২ পয়েন্ট বা প্রায় এক শতাংশ। সূচকের এই উত্থান হলেও বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৪৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে। এরপরও বেড়েছে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্সসহ অপর দুটি সূচক। সবকটি মূল্যসূচকের উত্থানের প্রভাবে বেড়েছে ডিএসইর পিই রেশিও। গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই ছিল ১৪ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্ট। যা সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ১৪ দশমিক ১৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ ডিএসইর পিই রেশিও আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে দশমিক ১১ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৮ শতাংশ। খাতভিত্তিক তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বরাবরের মতো সব থেকে কম পিই রেশিও রয়েছে ব্যাংক খাতের। সপ্তাহ শেষে ব্যাংক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৯ দশমিক ৫৫ পয়েন্টে। এর পরেই রয়েছে বিমা খাত। এই খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৩ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্টে। এ ছাড়া বিদুৎ ও জ্বালানি খাতের ১৩ দশমিক ৩১ পয়েন্ট, খাদ্য খাতের ১৩ দশমিক ৮০ পয়েন্টে, টেলিযোগাযোগ খাতের ১৪ দশমিক ২৪ পয়েন্ট, প্রকৌশল খাতের ১৫ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে, বস্ত্র খাতের ১৬ দশমিক ৯৬ পয়েন্টে, সেবা ও আবাসন খাতের ১৭ দশমিক শূন্য ১ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৮ পয়েন্টে, সিরামিক খাতের ১৯ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্টে, আর্থিক খাতের ১৯ দশমিক ২৫ পয়েন্টে এবং তথ্য প্রযুক্তি খাতের ১৯ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে পিই রেশিও অবস্থান করছে। বাকি খাতগুলোর ইপি ২০-এর ওপরে অবস্থান করছে। এর মধ্যে- ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের ২২ দশমিক ২৫ পয়েন্টে, বিবিধ খাতের ২৪ দশমিক ২৫ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতের ২৬ দশমিক ৮০ পয়েন্টে, চামড়া খাতের ৩২ দশমিক ৬২ পয়েন্টে, পেপার খাতের ৩৫ দশমিক ৯৭ পয়েন্টে এবং পাট খাতের পিই ৪৯৫ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তিন দিন সূচকের উত্থান আর দুদিন পতনের মধ্যে আরও একটি সপ্তাহ পার করল দেশের দুই পুঁজিবাজার। ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পাসের আগের সপ্তাহে উভয় বাজারে সূচক বেড়েছে। সূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেন ও বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। তাতে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি অর্থাৎ বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের মূলধন বেড়েছে দুই হাজার ৫৮০ কোটি ৯৪ লাখ ৩৮ হাজার ৩৫২ টাকা। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) বিনিয়োগকারীদের মূলধন বেড়েছে দুই হাজার ৯৩১ কোটি আট লাখ পাঁচ হাজার টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সাড়ে ২৮ লাখ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি বেড়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানির বোনাস শেয়ার ও কোম্পানির রিজার্ভের ওপর ১৫ শতাংশ কর প্রস্তাব ইসু্যতে দরপতন হয়েছে। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের পাশাপাশি সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির রির্জাভের ওপর ১৫ শতাংশ করে প্রস্তাব পুনঃবিবেচনা করার আশ্বাসে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ডিএসইর তথ্যমতে, গেল সপ্তাহে (২৩-২৭ জুন) ডিএসইতে মোট লেনদেন দুই হাজার ১১৮ কোটি ৭৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫৬ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ৫৯৮কোটি ১৩ লাখ ২৩ হাজার ২৮৪ টাকা। অর্থাৎ ৪০০ কোটি টাকা কমেছে। তিন দিন সূচকের উত্থানের ফলে আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ডিএসইএক্স সূচক দাঁড়ায় ৫ হাজার ৪৩০পয়েন্ট। সূচক বাড়লেও কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ও লেনদেন। লেনদেন হওয়া ৩৫৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫৯টির, কমেছে ১৭২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। এর আগের সপ্তাহে দাম বেড়েছিল ১০২টির, কমেছিল ২২৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। অপর বাজার সিএসইতে গত সপ্তাহে সিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ১১৯ পয়েন্ট ১৬ হাজার ৬৪২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩৭১ কোটি ৩৯ লাখ ৯১ হাজার ৭৫৫ টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১২৮টির, কমেছে ১৫০টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।