ছেলেকে হত্যা করেছেন মা

যথাযথ পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০৪ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছেই। কখনো শত্রম্নতার জের ধরে হত্যা করছেন কেউ, আবার কখনো বা হতাশা অবসাদের কারণেও হত্যার ঘটনা ঘটছে। সন্তান পিতা-মাতাকে খুন করছে, পিতা-মাতা সন্তানকে খুন করছে। ভাইয়ের হাতে খুনের শিকার হচ্ছে ভাই- এমন বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটছেই। কোনো কোনো ঘটনায় আবার কেউ আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে। পারিবারিক কলহ, অনৈতিক সম্পর্কসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। অথচ মানুষের স্বাভাবিক বসবাস এবং সুস্থ জীবনযাপনের জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত এই ধরনের ঘটনা রোধ হওয়া জরুরি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, অসুস্থ রাফির চিকিৎসার ব্যয় মেটানো ও ধার করা টাকা পরিশোধে ব্যর্থতায় মানসিক হতাশা থেকে মা-ই তাকে হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার এক সংবাদ সম্মেলনে শিশু রাফি হত্যার বিষয়ে এ তথ্য জানান। উলেস্নখ্য, গত বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আড়াই বছর বয়সী শিশু মো. রাফিকে হত্যার ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, ৩০ অক্টোবর সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রূপসদী গ্রামের একটি বিল থেকে শিশু রাফির লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই দিন শিশুটির দাদা আশ্রাফ জালালী বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা লোকজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। প্রসঙ্গত বলা দরকার, সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেছেন- বিয়ের পর রাফির মা সেনোয়ারা কিছু দিন শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন। এরপর তার স্বামী ফারুক ঢাকায় একটি কারখানায় শ্রমিক হিসেবে যোগ দেন। সেনোয়ারা স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় চলে যান। তিন বছর আগে আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা ধার করে কারখানার কাজ ছেড়ে ফারুক সৌদি আরবে পাড়ি জমান। দুই সন্তান নিয়ে সেনোয়ারা বাবার বাড়িতে চলে আসেন। চাচার ঘরে তিনি সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। ছোট ছেলে রাফি বিরল রোগে আক্রান্ত ছিল। কোথাও সামান্য আঘাত পেলে শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে কালসিটে দাগ পড়ত। কোথাও কেটে গেলে রাফির ক্ষত স্থান দিয়ে অনবরত রক্ত ঝরত। এর জন্য সময়ে সময়ে রাফিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করা হতো। রাফির চিকিৎসার পেছনে কয়েক লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পরিবারটি। জানা গেছে, প্রবাসী স্বামী সন্তানের চিকিৎসার খরচ ও সাংসারিক খরচ সামলাতে হিমশিম খেতেন। তিন বছরেও ধার করা টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ করতে পারেননি আর এ নিয়ে চরম হতাশায় ভুগতেন সেনোয়ারা এমনটিও আলোচনায় এসেছে। আমরা বলতে চাই, এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া সমাজে প্রতিনিয়ত এমনসব ঘটনা ঘটছে যা অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা মনে করি, যে কোনো কারণেই হোক না কেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কাম্য হতে পারে না। পারিবারিক কলহ, অনৈতিক সম্পর্ক কিংবা যে কোনো কারণেই যখন হত্যার মতো ঘটনা ঘটে তখন তা অত্যন্ত ভীতিপ্রদ। সঙ্গত কারণেই এ ধরনের ঘটনাগুলোকে আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হতে হবে। মনে রাখা দরকার- একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে যে চিত্র পরিলক্ষিত হয় তা পরিতাপের। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত হোক এবং সেই মোতাবেক আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হোক। পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, প্রতিনিয়ত যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে এগুলোর কারণ শনাক্ত করে তার পরিপ্রেক্ষিতে পদক্ষেপ নেয়া। অনাকাঙ্ক্ষিত এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।