বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইতিহাস গড়ার লড়াইয়ে বসুন্ধরা-রহমতগঞ্জ

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বিকাল ৪টায় স্বপ্নের ফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বসুন্ধরা কিংস ও রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। দুই দলেরই স্বপ্ন পূরণের ম্যাচ এটি। কারণ ম্যাচ জিতলে এবারই প্রথম শিরোপা ছুঁয়ে দেখার সৌভাগ্য হবে দু'দলের একটির। নতুন শিরোপাধারী হয়ে গড়বে নতুন ইতিহাস
ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ০৫ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ফেডারেশন কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের পর্দা নামতে যাচ্ছে আজ। ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বিকাল ৪টায় স্বপ্নের ফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বসুন্ধরা কিংস ও রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। দুই দলেরই স্বপ্ন পূরণের ম্যাচ এটি। কারণ ম্যাচ জিতলে এবারই প্রথম শিরোপা ছুঁয়ে দেখার সৌভাগ্য হবে দু'দলের একটির। নতুন শিরোপাধারী হয়ে গড়বে নতুন ইতিহাস। ঘরোয়া ফুটবলে বলতে গেলে নতুন মুখই বসুন্ধরা কিংস। পেশাদার ফুটবল লিগে তাদের যাত্রা শুরু হয়েছে গত মৌসুম থেকে। তবে শুরুর মৌসুমেই নিজেদের শক্তিধর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিল কিংসরা। পেশাদার লিগ ও স্বাধীনতা কাপের শিরোপাও জিতেছিল। অপূর্ণতা বলতে ছিল কেবল ফেডারেশন কাপের শিরোপা না জিততে পারা। গত মৌসুমের শুরুর টুর্নামেন্ট ফেডারেশন কাপে এসেই ফাইনাল খেলেছিল বসুন্ধরা কিংস। কিন্তু শিরোপা লড়াইয়ে ১১টি আসরের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনীর সঙ্গে পেরে উঠেনি তারা। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ওই ফাইনাল ম্যাচে ৩-১ গোলে হেরে বসুন্ধরা হয়েছিল টুর্নামেন্টের রানার্স আপ। এবারের আসরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী। যে কারণে এবার শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে ক্লাবটির সামনে। অন্যদিকে রহমতগঞ্জ এবারই প্রথম খেলছে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে। কিন্তু ঘরোয়া ফুটবলে তারা অনেক পুরাতন আর ঐতিহ্যবাহী দল। ফেডারেশন কাপের ৩৯ বছরের ইতিহাসে কখনো ফাইনাল খেলতে পারেনি এই ক্লাবটি। যদিও শুরু থেকেই জায়ান্ট কিলার হিসেবে সুখ্যাতি আছে তাদের। তবে এবারের মৌসুমে সেই চমকটিই দেখিয়েছে রহমতগঞ্জ। প্রতিপক্ষ কঠিন হলেও ক্লাবের কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানী জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে চান, 'আলস্নাহ্‌র কাছে শুকরিয়া। আমার কোচিংয়ে রহমতগঞ্জ এই প্রথম কোন টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছে। আমার একটা স্বপ্ন ছিল এই আসরের সেমিতে সরাসরি জিতেই ফাইনালে ওঠা। কেননা গ্রম্নপপর্বে আমরা দুই ম্যাচেই ড্র করি। কোয়ার্টারে জিতি টাইব্রেকারে। সেই অর্থে এই আসরে আমাদের কোনো জয়ই ছিল না। বলা যায় সেমিতেই প্রথম জয় ছিল আমাদের। ফাইনালে খেলতে আমরা প্রস্তুত আছি। আমাদের আসলে হারানোর কিছু নেই, তবে পাওয়ার অনেক কিছুই আছে।' জয় চাই বসুন্ধরা কিংসের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রোজনেরও, 'আগের ম্যাচে দল পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলেছে। সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে গোল আদায় করে নিতে পেরেছে। ফাইনালেও এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই। ফাইনালে আমাদের লক্ষ্য ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়া।' ঐতিহ্য থাকলেও কাগজে কলমে তেমন বড় কোনো দল নয় রহমতগঞ্জ। তবে এবারের আসরের ফাইনালে তারা এসেছে একের পর এক চমক দেখিয়ে। গ্রম্নপপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা গোলশূন্য (০-০) ড্র করে সাইফের সঙ্গে। এরপর ১-১ গোলে ড্র করে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সঙ্গে। ২ খেলায় ২ পয়েন্ট নিয়ে গ্রম্নপ রানার্সআপ হয়ে কোয়ার্টারে খেলা নিশ্চিত করে। এরপর ঢাকা আবাহনীর সঙ্গে নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলের ড্র করে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে। সেমিতে আরেক ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহামেডানকেও বিদায় করে দেয় তারা। ওই ম্যাচটি রহমতগঞ্জ জিতে ১-০ গোলের ব্যবধানে। সাদা-কালোদের হারিয়ে ৩৯ বছরের না পাবার আক্ষেপ ঘুচিয়েছে জায়ান্ট কিলার খ্যাত পুরানো ঢাকার দলটি। এখন স্বপ্ন শিরোপা জিতে নতুন ইতিহাস রচনার। আর টুর্নামেন্টের বর্তমান রানার্সআপ দল বসুন্ধরা কিংসও অপেক্ষা করছে গত আসরের অপূর্ণতা ঘুচাতে। প্রথমবারের মতো শিরোপা জিততে মরিয়া তারাও। এবার ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে শুরু করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে ২-০ গোলে হেরে গিয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। কোয়ার্টার ফাইনালেও মুক্তিযোদ্ধার মতো দলের বিপক্ষে কঠিন লড়াই করতে হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে ১-১ এর সমতায় থাকা ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ৪-১ গোলে জিতে সেমি নিশ্চিত করে বসুন্ধরা কিংস। তবে সেমিতে পুলিশের বিপক্ষে ৩-০ গোলের বড় জয়ে ফাইনালে নাম লেখায় তারকা সমৃদ্ধ দলটি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে