পাঠক মত

দেশের স্বাস্থ্যসেবা

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০১৮, ১৯:০৭

আবুল কাশেম ঢাকা
আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা একেবারে নাজুক। ডাক্তাদের সিংহভাগ দায়ীত্বজ্ঞানহীন নিজেদের স্বাথর্/অথর্ ছাড়া আর কিছু বুঝে না। ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসার কারণে অনেক রোগী পঙ্গু হয়ে যায় এবং কারও কারও জীবনের অবসান ঘটে। বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে চায়। আমার ছেলে একটি বেসরাকরি প্রতিষ্ঠানে কমর্রত ১৮ জুলাই তার কমর্স্থলে জ্বরে আক্রান্ত হলে তার সহকমীর্রা তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়, দেখি জ্বর অনেক বেশি বাসার সামনে একজন ডাক্তার বসেন বক্ষব্যাধি হাসপাতালে কমর্রত ডাক্তার, (ডিগ্রিও কম নয়) ডাক্তার রোগী দেখে একগাদা ওষুধ লিখে দিল ২ দিনে রোগের উপসম হলো না বরং বেড়ে গেল রোগ। তৎক্ষণাৎ অন্য ডাক্তারের কাছে যাই সে ডাক্তার বলল চিকিৎসাপত্র যথাথর্ হয়নি, চিকিৎসা পত্রের ওষুধ বন্ধ করতে বললেন, আমি সন্দেহমুক্ত হতে পারলাম না। রাত ১১টায় ৩য় ডাক্তারের কাছে যাই ৩য় ডাক্তার ২য় ডাক্তারের সঙ্গে সহমত পোষণ করলেন আরও বললেন প্রথম ডাক্তারের ওষুধে ক্ষতি করেছে। ইতিমধ্যে বার বার নানা টেস্ট দেয়া হয়েছে মেডিনোভায় টেস্ট করালাম রিপোটর্ যথাথর্ হল না রোগ নিণর্য় হলো না, তাতে আরও ক্ষতি হলো টাকাও গেল। জনগণের টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্যই কি তাদের প্রতিষ্ঠান? রোগীর রোগ উপসম হচ্ছে না দেখে ২ ডাক্তার বললেন আমাদের চিকিৎসার বাইরে আপনি একজন বড় নাম করা ডাক্তার দেখান কিছু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নাম বলেছেন দু’জনে। আমি সরাসরি বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কতৃর্পক্ষ কিছু টেস্ট দেয় সে টেস্টে ডেঙ্গুজ্বর নিশ্চিত করা হয়। বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের ডাক্তাদের পরামশের্ ঢাকা মেডিকেলে ভতির্ করি ছেলেকে। এ এক বিড়ম্বনা! ছেলেকে ভতির্ করালাম যেন সমুদ্রের মাঝে নিজেদেরকে সঁপে দিলাম। পেয়িং বেড নিলাম, বেড দেয়ার মালিক ওয়াডর্বয়Ñ কতৃর্পক্ষ নয়। কমর্চারী বলল এ বেড খালি এই বেডে থাকতে পারেন বেডের ভাড়া ২৭৫ টাকা। টাকা দেবেন না হয় রোগীকে বাইরে রাখেন, কারো কথা চলবে না। কমর্চারীকে টাকা দিয়ে বেড নিলাম। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পেয়িং বেডের ভাড়া ২৫০ টাকা/পরিবেশও উন্নত। বিছানা পেলাম, চাদর পেলাম, বালিশ পেলাম না। বালিশ আনতে হবে, এটা কেমন কথা? সব হাসপাতালে বিছানার সঙ্গে রোগীকে বালিশ দেয়া হয়, কিন্তু ঢাকা মেডিকেলে বালিশ দেয়া হয় না রোগীকে বালিশ ছাড়া বিছানা। ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রশাসনিক কোনো কাযর্ক্রম নেই। পরের দিন বেডভাড়া বাবদ ব্যাংকে টাকা জমা দিলাম রোগী ছাড় দেয়ার পর বেডভাড়া বাবদ অগ্রিম নেয়া টাকা রোগীকে ফেরত দেয়া হলো না। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ডাক্তররা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের পরিবেশ নোংরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার লোকের বড় অভাব। টয়লেট ব্যবহারের উপযোগী নয়। পানি দূষিত। নানা অনিয়মে ভরা (মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হিসাবে কোনো প্রকার সুবিধা পাইনি) বিছানায় খাবার পেঁৗছে দেয়া হয় না ঢাকা মেডিকেলে। অন্য হাসাপাতালে তা নয়। বারান্দায় গিয়ে লাইন ধরে খাবার নিতে হবে রোগীকে ঢাকা মেডিকেলে। ৪ হাজারের বেশি রোগী ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভতির্ থাকে বলে জানা গেছে। বহিরাগত রোগী তো আছেই। রোগীদের সেবার প্রয়োজনে কমর্কতার্ ও কমর্চারীর সংখ্যা বাড়ানো অতি প্রয়োজন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেদিকে নজর দেয়া উচিত। দুঃখজনক হলো কোনো প্রকার টেস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজে করা যায় না। যে কোনো রোগী যাওয়ামাত্র ডাক্তাররা নানা টেস্ট দিয়ে থাকেন। সে সব টেস্ট বাহির থেকে করতে হয় রোগীদের। ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করে জানা গেল টেস্ট করার যন্ত্রপাতি ও মেশিন মানসম্মত নয়, টেস্টের রিপোটর্ মানসম্মত হয় না। ঢাকা মেডিকেল কলেজে টেস্ট করা হলে রোগীর চিকিৎসা মানসম্মত হবে না। রোগী ক্ষতিগ্রস্ত হবে, রোগীদের ভোগান্তিও বাড়বে। বাইরের লোকেরা ঘুর ঘুর করতে থাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে। রোগীদের কাড়ি কাড়ি টাকা বাইরে চলে যাচ্ছে মানসম্মত টেস্ট না থাকার ফলে। মানসম্মত টেস্ট ব্যবস্থা থাকলে সে টাকা ঢাকা মেডিকেল কলেজের আয় হতো যেমন বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে হয়ে থাকে, রোগীদের টাকাও সাশ্রয় হতো এবং সহসা টেষ্টের রিপোটর্ পাওয়া যেত, রোগীদের চিকিৎসাও হতো ভালো। এমনকি রোগীদের ওজন মাপার যন্ত্রটিও অচল, সেবিকারা বলেন, আমাদের কিছু করণীয় নেই। অনিয়ম/দুনীির্ত রয়েছে বলে অভিযোগ আছে, তা দুরীকরণে যথাযথ ব্যবস্থা নেয় জরুরি। রোগীরা বড় আশা নিয়ে হাসপাতালে আসে চিকিৎসা নিতে, হয়রানি হবে কেন। রোগীদের প্রতি যতœশীল হওয়া হসপাতাল কতৃর্পক্ষের দায়িত্ব। সারাদেশের সকল হাসপাতালে একই অবস্থা বিরাজমান বলে জানা গেছে। রোগীদের সেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। রোগীর সেবায় কাযর্কর ব্যবস্থা জনগণের চাহিদা। মন্ত্রী মহোদয়েরা অনেক কথা বলেন কাজ হয় কতটুকু? মন্ত্রী মহোদয়ের কথা ও কাজে মিল থাকা দরকার।