রপ্তানি আয়ে সুখবর

এ ধারা অব্যাহত থাক

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০১৮, ১৯:১১

অনলাইন ডেস্ক
রপ্তানি আয়ে সুখবর নিয়ে শুরু হলো ২০১৮-১৯ অথর্বছর। পণ্য রপ্তানি থেকে অথর্বছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি অথর্ দেশে এসেছে। এর মধ্যে পোশাক রপ্তানি ২২ শতাংশের মতো বেড়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। বাংলাদেশের রপ্তানি আয় লক্ষ্যমাত্রা অজর্ন করতে না পারলেও আগের অথর্বছরের চেয়ে বেড়েছে, এই তথ্য নিঃসন্দেহে সুখবর। তবে, এ বছর জুলাই মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৭ শতাংশ আয় বেড়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ তথ্য থেকে জানা যায়, চলতি ২০১৮-১৯ অথর্বছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৩৫৮ কোটি ১৫ লাখ ডলার আয় করেছে। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘এক মাসের তথ্য দিয়ে বলা যাবে না পুরো অথর্বছর কেমন যাবে। তবে শুরুটা বেশ ভালোই হয়েছে।’ আর শুরুটা ভালো হওয়ায় চলতি বছর রপ্তানি আয় আরও বাড়বে, রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা এমনটিই আশা করছেন। তথ্য অনুযায়ী, চলতি অথর্বছরের প্রথম মাসে যে অথর্ এসেছে, তা গত অথর্বছরের জুলাই মাসের চেয়ে ১৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি। ২০১৭-১৮ অথর্বছরের প্রথম মাসে ২৯৮ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল বাংলাদেশ। ইপিবির তথ্য পযাের্লাচনায় দেখা যায়, জুলাইয়ে মোট রপ্তানি আয়ের ৮৪ দশমিক ২৫ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। অথার্ৎ ৩৫৮ কোটি ১৫ লাখ ডলারের মধ্যে ৩০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলারই এ খাত থেকে এসেছে। এর মধ্যে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ১৫২ কোটি ৭১ লাখ ডলার। যাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এ ছাড়া ওভেন পোশাক রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১৪৯ কোটি ডলার। এতে প্রবৃদ্ধি ২২ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এই অজের্নর পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের শীষর্ সংগঠন বিজিএমইএ সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ‘কারখানাগুলোর উন্নয়নে পোশাকশিল্প মালিকরা গত কয়েক বছরে অনেক টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কষ্টও করেছেন। ৮০ শতাংশের বেশি কারখানা উন্নত কমর্পরিবেশের (কমপ্লায়েন্স) আওতায় চলে এসেছে। এতে বায়াররাও খুশি।’ মূলত এ কারণে বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা বেড়েছে এবং ক্রয় আদেশ ও রপ্তানি বেড়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে কিছু দিন আগে গণমাধ্যমের খবরে জানা গিয়েছিল, ‘পোশাক খাতে বিলম্ব রপ্তানি’র কারণে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অজের্ন পিছিয়ে পড়ছে দেশ। পাশাপাশি বিনিয়োগও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা মনে করি, এ বিষয়টিও সংশ্লিষ্টদের বিবেচনায় নেয়া জরুরি। অন্যান্য পণ্যের মধ্যে, পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি ১৫ শতাংশ, স্পেশালাইজড টেক্সটাইল রপ্তানি ৫৩ শতাংশ, হোম টেক্সটাইলে ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ, ওষুধ রপ্তানি ২২ শতাংশ এবং হস্তশিল্প থেকে আয় বেড়েছে ১১ শতাংশ। এ ছাড়া প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি ১৩ শতাংশ, তামাক ৯৭ শতাংশ, শাকসবজি ৪৭ শতাংশ এবং শুকনো খাবার রপ্তানি ১৩৪ শতাংশ বেড়েছে। তবে হিমায়িত মাছ রপ্তানি ৩১ শতাংশ কমেছে। চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ২২ শতাংশ। চা রপ্তানি কমেছে ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০১৭-১৮ অথর্বছরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ তিন হাজার ৬৬৬ কোটি ৮২ লাখ (৩৬.৬৬ বিলিয়ন) ডলার আয় করে। এর মধ্যে ৩০ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারই এসেছে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। বাংলাদেশের রপ্তানি আয় যে এখনো তৈরি পোশাকনিভর্র তা ইপিবির রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ তথ্য থেকেও স্পষ্ট হতে পারে। আশার কথা যে, তৈরি পোশাক ছাড়াও ওষুধসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানি বাড়ছে। রপ্তানি আয় বাড়াতে ওষুধসহ অপ্রচলিত পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। ল্যাটিন আমেরিকা ও আফ্রিকার বাজারে পণ্য প্রবেশের উদ্যোগ নেয়া দরকার। যুক্তরাষ্ট্রসহ ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া ও রাশিয়ায় বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির তথ্য জানা যায়। তবে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি করে চীন থেকে। দুই দেশের অথৈর্নতিক সম্পকর্ দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু চীনে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি আয়ে সুখবর নেই। চীন যাতে আরও বেশি বাংলাদেশি পণ্য আমদানি করে সে ব্যাপারে বাণিজ্য ক‚টনীতি জোরদার করার উদ্যোগ গ্রহণও অপরিহাযর্।