ইমরান শাসনে পাকিস্তান

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ

প্রকাশ | ১৯ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০১৮, ০০:৫৬

যাযাদি ডেস্ক
শপথ পাঠ করছেন ইমরান খান

পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খান। শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার একটু পর জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শপথ অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর আগে প্রথমে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হয়। প্রেসিডেন্ট হাউস আইওয়ান-ই-সদরে প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসাইন ইমরানকে শপথবাক্য পাঠ করান। ওই সময় ইমরানের চোখে জল দেখা গেলেও মুখে হাসি ছিল বলে জানায় বিবিসি। অনুষ্ঠানে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী নাসিরুল মুলক, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার আসাদ কায়সার, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া, এয়ার চিফ মাশার্ল মুজাহিদ আনওয়ার খান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল জাফর মাহমুদ আব্বাসি, ভারতের সাবেক ক্রিকেটার নভজিৎ সিং সিধু, পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার রমিজ রাজা ও ওয়াসিম আকরাম, সংগীতশিল্পী সালমান আহমেদ ও আবরারুল হক, অভিনেতা জাবিদ শেইখ এবং সাবেক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার ফাহমিদা মিজার্ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বাবার এই বিশেষ দিনে উপস্থিত ছিল না তার দুই ছেলে। ইমরানের সাবেক প্রথম স্ত্রী জেমিমা এক টুইট বাতার্য় বলেছেন, ‘ছেলেরা যেতে চেয়েছিল, কিন্তু তাদের বাবাই না করেছে।’ তবে এসেছিলেন ইমরানের বতর্মান স্ত্রী বুশরা ইমরান। বিয়ের পর এই প্রথম তিনি বড় কোনো অনুষ্ঠানে মানুষের সামনে এলেন। শপথগ্রহণ শেষে ইমরান ও ফাস্টর্ লেডি বুশরা অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এরপর ইমরান তার সরকারি বাসভবন প্রাইম মিনিস্টার হাউসে যান। সেখানে তাকে তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে গাডর্ অব অনার দেয়া হয়। শুক্রবার দেশটির পালাের্মন্ট জাতীয় পরিষদের ১৭৬ জন সদস্য তার পক্ষে ভোট দেন। একসময় ব্যাট-বল হাতে ক্রিকেটবিশ্ব কঁাপানো পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান এখন দেশ শাসনের ক্ষমতা পেলেন। প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য ইমরান খানের প্রতিদ্ব›দ্বী প্রাথীর্ ছিলেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ। ভোটাভুটিতে জাতীয় পরিষদের ৯৬ জন সদস্য শাহবাজকে ভোট দেন। এরপর ইমরান খান তার বক্তব্যে বলেন, ‘সবার আগে আমরা যে কাজটি কবর, তা হলো কঠোর জবাবদিহি করা হবে। আল্লাহর নামে বলছি, যারা এই দেশটিকে লুটে খেয়েছে, তাদের প্রত্যেককে জবাবদিহি করতে হবে।’ গত ২৫ জুলাই পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নিবার্চনে সবচেয়ে বেশি ১১৬টি আসনে জয় পায় ইমরানের দল পিটিআই। তবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ১৩৭টি আসন না পাওয়ায় ছোট ছোট দল ও স্বতন্ত্র প্রাথীের্দর নিয়ে জোট সরকার গঠন করতে হবে পিটিআইকে। নিবার্চনের ভোটগ্রহণের পর থেকেই এতে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ করে আসছে পিএমএল-এন। নিবার্চনে দলটি দ্বিতীয় সবোর্চ্চ আসন পেয়েছে। আর নিবার্চনে তৃতীয় সবোর্চ্চসংখ্যক আসনে জিতেছে পাকিস্তান পিপলস পাটির্ (পিপিপি)। নিবার্চনে কারচুপির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে কাজ করার জন্য একটি যৌথ কমের্কৗশলও ঘোষণা করে পিএমএল-এন এবং পিপিপি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নিবার্চনে একমত হতে পারেনি দল দুটি। পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি এর আগে ঘোষণা দেন, প্রধানমন্ত্রী নিবার্চনের ভোটাভুটিতে তার দল অংশ নেবে না। তাই পিএমএল-এনের প্রধানমন্ত্রী প্রাথীর্ শাহবাজ শরিফকে তার দল সমথর্নও দেবে না। তবে শুক্রবার ভোটগ্রহণের শেষ মুহূতর্ পযর্ন্ত ওই মত পরিবতের্নর জন্য বিলাওয়াল ভুট্টোকে বোঝানোর চেষ্টা করেন পিএমএল-এনের নেতা ও জাতীয় পরিষদের সদ্য বিদায়ী স্পিকার আয়াজ সাদিক। কিন্তু এতে খুব একটা ফল হয়নি। তবে পিপিপি ভোট বজর্ন করলেও জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে বিলাওয়াল ভুট্টো উপস্থিত ছিলেন।