করোনা মহামারি

ভারতে হুহু করে বাড়ছে আক্রান্ত

সর্বোচ্চ আক্রান্তের দিনে মৃতু্য ছাড়াল তিন হাজার ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনের পুলিশ কর্মকর্তা আক্রান্ত

প্রকাশ | ১৯ মে ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস হুল ফোটাচ্ছে ভারতে। দেশটিতে প্রতিদিনই হু-হু করে বাড়ছে আক্রান্ত। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যায় রোববার একদিনে সর্বোচ্চ উলস্নম্ফন ঘটেছে এবং মৃতের সংখ্যাও তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এদিন দেশটিতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজার ২৪২ জন ছিল বলে সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে। এতে ভারতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯৬ হাজার ১৬৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া এ পর্যন্ত মৃতু্য হয়েছে ৩ হাজার ২৯ জনের। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে তৃতীয় দফার লকডাউন শেষের পর সোমবার থেকে চতুর্থ দফার লকডাউন শুরু হয়েছে, যার মেয়াদ আরও ১৪ দিন। অর্থাৎ ৩১ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই লকডাউনের গাইডলাইন ঘোষণা করার দিনটিতেই দৈনিক নতুন আক্রান্তের সংখ্যায় সবচেয়ে বড় উলস্নম্ফন ঘটেছে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষে আছে মহারাষ্ট্র। এরপর আছে গুজরাট, তামিলনাড়ু ও দিলিস্ন। এক দিনে দুই হাজার ৩৪৭ জন নতুন করে শনাক্ত হওয়ার পর মহারাষ্ট্রের আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা এক হাজার ১৯৮ জন। গুজরাটে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ১১ হাজার ৩৮০ জন এবং মৃতের সংখ্যা ৬৫৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় তামিলনাড়ুতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩৯ জন ছিল। এতে রাজ্যটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১১ হাজার ২২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। শুধু চেন্নাইয়ের একটি সবজি বাজার থেকেই আক্রান্ত হয়েছে দুই হাজার ৬০০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত হওয়া ৭২১ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত নিয়ে রাজধানী দিলিস্নতে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে। সেখানে মৃতু্য হয়েছে ১৬০ জনের। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ৬৭৭ জন এবং মৃতু্য হয়েছে ২৩৮ জনের। যদিও রাজ্য সরকারের হিসেবে করোনাভাইরাসের জেরে মৃতের সংখ্যা ১৬৬। বাকি ৭২ জনের মৃতু্য হয়েছে করোনা উপসর্গে। তবে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠার হার বৃদ্ধিতে কিছুটা আশা জাগাচ্ছে। মোট আক্রান্তের মধ্যে ৩৬ হাজার ৮২৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসার পর বাড়ি ফিরেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে দুই হাজার ৭১৫ জন। অন্যদিকে, নতুন কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে চতুর্থ দফার লকডাউনে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত জারি করা হবে 'সান্ধ্য আইন'। প্রয়োজনে ১৪৪ ধারা জারি করতে পারবে স্থানীয় প্রশাসন। তবে জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে। করোনার সংক্রমণ ও বিস্তারের ওপর বিশেষ এলাকাকে লাল, কমলা এবং সবুজ জোন হিসেবে চিহ্নিত করবে রাজ্য সরকার। তারপর প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে ওইসব এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থা তথা বিধিনিষেধ আরোপ করবে স্থানীয় সরকার। এ সময় মেট্রোরেল ও বিমান পরিষেবা বন্ধ থাকবে। তবে আন্তঃরাজ্য বাস চালানোর বিষয়টি রাজ্যের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা চাইলে আন্তঃরাজ্য বাস চলাচল করতে পারবে। ৩১ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্ধ থাকবে শপিং মল, সিনেমা হল ও রেস্তোরাঁ। ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনের পুলিশ কর্মকর্তা আক্রান্ত এদিকে, ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনের কর্মচারীর পর এবার সহকারী কমিশনার পদমর্যাদার একজন পুলিশ কর্মকর্তা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রোববার প্রেসিডেন্টের বাসভবনের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য জানা গেছে। পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ ফল আসার পর পুলিশের ওই কর্মকর্তাকে দিলিস্নর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ওই কর্মকর্তা যেখানে থাকতেন, তার আশপাশের এলাকা জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। পূর্ব দিলিস্নর কারকারদুমার আবাসিক এলাকায় সরকারি কোয়ার্টারে থাকতেন ওই সহকারী পুলিশ কমিশনার। ওই পুলিশ কর্মকর্তার সংস্পর্শে আসা আরও ছয়জনকে শনাক্ত করে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছে তারা। প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দের কার্যালয়ের পাশের ভবনে দায়িত্বে ছিলেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা; সেখানেই তার কার্যালয়। তবে রাষ্ট্রপতি ভবনের দায়িত্বে ছিলেন না তিনি। এর আগে গত মাসে রাষ্ট্রপতি ভবনের অন্তত ১২৫টি কোয়ার্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এসব কোয়ার্টারের এক কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সেখানে ব্যাপক বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়।