করোনা মহামারি

বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ লাখ ছাড়িয়েছে

মৃতের সংখ্যা তিন লাখ ৬৮ হাজারের বেশি স্পেনকে ছাড়িয়ে সর্বাধিক মৃতের তালিকায় পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে ব্রাজিল

প্রকাশ | ৩১ মে ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এক রোগী
মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ লাখ ছাড়িয়েছে। গত বছরের শেষদিন চীনের উহানে প্রথমবার শনাক্তের পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বের অন্তত ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। করোনা সংক্রমণের তথ্য প্রকাশকারী ওয়েবসাইট 'ওয়ার্ল্ডওমিটার'র তথ্যমতে, শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০ লাখ ৫০ হাজারের কাছাকাছি। আর মৃতের সংখ্যা তিন লাখ ৬৮ হাজার। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, এনডিটিভি বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ২৬ লাখ ৯০ হাজার করোনা রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে। এখনো চিকিৎসাধীন ৩০ লাখ চার হাজার ২৩৫ জন। তাদের মধ্যে ৫৪ হাজার জনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানা গেছে। বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমিত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এ পর্যন্ত প্রায় ১৮ লাখ লোক কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে এক লাখ পাঁচ হাজার মানুষ। আক্রান্ত-মৃতু্যর মতো সুস্থ হওয়ার দিক থেকেও সবার শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এ পর্যন্ত অন্তত পাঁচ লাখ ২০ হাজার করোনা রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, ভিয়েতনাম যুদ্ধে যত মার্কিন নাগরিকের মৃতু্য হয়েছিল, করোনায় এর প্রায় দ্বিগুণ নাগরিককে হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২০ সালের ৬ ফেব্রম্নয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় প্রথম মৃতু্যর ঘটনা ঘটে। তখনো কেউ পরিস্থিতির এতটা অবনতি হবে বলে মনে করেনি। কিন্তু এখন প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৯০০ মার্কিন নাগরিক করোনায় প্রাণ হারাচ্ছে। কেবল শুক্রবার একদিনেই যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে ২৪ হাজার ২৬৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এদিন দেশটিতে এই ভাইরাসে নতুন করে মৃতু্য হয়েছে এক হাজার ১৯৩ জনের। আগে থেকেই অবশ্য ১ জুনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) পরিচালক রবার্ট রেডফিল্ড। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় ধাপে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে তা প্রথম ধাপের চেয়েও মারাত্মক হবে। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) এই পরিচালক বলেন, নতুন করে প্রাদুর্ভাব হলে এর সঙ্গে যুক্ত হবে মৌসুমি ফ্লু। সে ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর অকল্পনীয় চাপ তৈরি করবে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮৩ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও)। এদিকে, মাত্র কয়েকদিনেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত দেশ হয়ে উঠেছে ব্রাজিল। দেশটিতে এ পর্যন্ত প্রায় চার লাখ ৭০ হাজার লোক করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। আর মারা গেছে ২৮ হাজারের বেশি। ব্রাজিলে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে। টানা চতুর্থদিন এক হাজারের বেশি মৃতু্যর পাশাপাশি দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাতেও নতুন রেকর্ড গড়েছে দেশটি। এরই মধ্যে স্পেনকে ছাড়িয়ে বিশ্বের মধ্যে করোনায় সর্বাধিক মৃতের তালিকায় পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে তারা, শিগগিরই ফ্রান্সকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পর্যাপ্ত সংখ্যক পরীক্ষা না করায় ব্রাজিলে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা জানা যাচ্ছে না। এটি সরকারি হিসাবের চেয়ে ১৫ গুণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। করোনা সংক্রমণের শীর্ষ পাঁচে থাকা বাকি দেশগুলো হচ্ছে রাশিয়া, স্পেন ও যুক্তরাজ্য। রাশিয়ায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে প্রায় চার লাখ লোক। আর মারা গেছে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। স্পেনে আক্রান্ত দুই লাখ ৮৬ হাজার। মৃতু্য হয়েছে ২৭ হাজারের বেশি এবং যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত দুই লাখ ৭২ হাজার। আর মারা গেছে ৩৮ হাজারের বেশি। স্পেনে সুস্থ হয়েছে এক লাখ ৯৭ হাজার।