পঙ্গপালের হানা

ভারতে ধ্বংসের হুমকিতে গ্রীষ্মকালীন ফসল

প্রকাশ | ৩১ মে ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ভারতের কয়েকটি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়া পঙ্গপাল
করোনা মহামারির মধ্যেই ভারতে হানা দিয়েছে পঙ্গপাল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন করে এর ব্যাপকতা যেভাবে অতি দ্রম্নতগতিতে ছড়াতে শুরু করেছে, কর্তৃপক্ষ যদি জুনের মধ্যে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারে তাহলে ধান, ভুট্টা, বেত, তুলা ও সয়াবিনসহ হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল ধ্বংস হয়ে যাবে। সংবাদসূত্র : বিবিসি দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি হানা দেওয়ার পর পঙ্গপাল এরই মধ্যে সাতটি রাজ্যের প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি ধ্বংস করেছে। ভারতে ঢুকে পড়া পঙ্গপালের ঝাঁক রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট ও হরিয়ানার পর এবার মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ এবং পাঞ্জাবে ফসল সাবাড় করছে। তবে ব্যাপকহারে পঙ্গপালের হানা শুরু হলেও সরকার ও কৃষি বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এখনই এর কারণে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির পূর্বাভাস দিচ্ছেন না। তারা বলছেন, এটা দুই মৌসুমের মধ্যবর্তী সময়। এক ফসল তোলা হয়েছে, সামনে নতুন ফসল বোনা হবে। তাই এখন পঙ্গপাল ততটা ক্ষতি করতে পারবে না। তবে বিশেষজ্ঞরা এ হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন, গ্রীষ্মকালীন ফসল যাতে গ্রাস করে ফেলতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলোকে পঙ্গপালের হানার ব্যাপকতা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনতে হবে। আর তা না হলে এর ক্ষতি হবে বিপুল। 'সাউথ এশিয়া বায়োটেক সেন্টারের পরিচালক ভাগীরথ চৌধুরী বলেন, ?'অভূতপূর্ব মাত্রায় পঙ্গপালের আক্রমণ শুরু হলেও আপাতত ফসলের বড় ধরনের ক্ষতি হবে বলে মনে করছি না। এখনই তা নিয়ন্ত্রণের মোক্ষম সময়। আর তা না হলে গ্রীষ্মকালীন ফসলগুলো আমরা হয়তো সংরক্ষণ করতে পারব না।' সামনের দিনগুলোতে ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি করেছে পঙ্গপাল। কেননা প্রথম হানা দিয়েছে পশ্চিম ভারতের রাজস্থান, গুজরাট ও মহারাষ্ট্রে। সেখান থেকে মধ্যাঞ্চলের মধ্যপ্রদেশ ও পাঞ্জাবে। এরপর তা ছড়িয়েছে উত্তরের হরিয়ানা ও দেশটির সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে। সাউথ এশিয়া বায়োটেক সেন্টারের পরিচালক ভাগীরথ চৌধুরী বলেন, মূলত তাপমাত্রা যত বেশি হবে, পঙ্গপাল ততই দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়বে।' এদিকে, পঙ্গপাল নিধনে ১১টি কন্ট্রোল রুম চালু করেছে ভারত। সেখান থেকে বিশেষ স্প্রে মেশিন ব্যবহার করে কীটনাশক ছিটানোর কাজ চলছে। এ কাজে ড্রোনও ব্যবহার করা হচ্ছে। রাজ্য পরিচালিত পঙ্গপাল সতর্কতা সংস্থাকে (এলডবিস্নউও) সহায়তা দিয়ে সমস্যা মোকাবিলায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি প্রতিমন্ত্রী কৈলাস চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকার এলডবিস্নউও কর্মী বাড়িয়েছে। জরিপ ও কীটনাশক স্প্রে করার জন্য নতুন সরঞ্জাম ও যানবাহন কিনেছে। জাতিসংঘের কৃষিবিষয়ক সংস্থা 'এফএও' বলেছে, একটি পঙ্গপাল দিনে দুই গ্রাম ফসল খেতে পারে। এক বর্গকিলোমিটার দীর্ঘ একটি ঝাঁকে চার থেকে ৮ কোটি পঙ্গপাল থাকে। দিনে ১৩০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ৩৫ হাজার মানুষের খাবার ধ্বংস করতে পারে এ পঙ্গপাল।