হাঁটু গেড়ে ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদ ট্রুডোর

প্রকাশ | ০৭ জুন ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সমাবেশে হাঁটু গেড়ে বসেন জাস্টিন ট্রুডো
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশি নির্যাতনে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও। শুক্রবার অটোয়ায় অনুষ্ঠিত বর্ণবাদবিরোধী সমাবেশে যোগ দিয়ে রাস্তায় হাঁটু গেড়ে প্রতিবাদ জানান তিনি। সংবাদসূত্র : এএফপি, সিএনএন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে এদিন কানাডার পার্লামেন্টের সামনে হাজার হাজার বিক্ষোভকারীর সঙ্গে 'নো জাস্টিস=নো পিস' নামের ওই সমাবেশে অংশ নেন ট্রুডো। এ সময় দেহরক্ষী ও বেশ কয়েকজন পার্লামেন্ট সদস্য তার সঙ্গে ছিলেন। সমাবেশে প্রায় এক ঘণ্টার মতো ছিলেন কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী। তবে এ সময় কোনো বক্তব্য রাখেননি তিনি। সমাবেশে ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড রাস্তায় হাঁটু গেড়ে বসে থাকেন ট্রুডো। জর্জ ফ্লয়েডকে ঠিক একই পরিমাণ সময় এভাবে মাটিতে হাঁটু দিয়ে চেপে রাখা হয়েছিল। এদিন পার্লামেন্ট হিলে প্রতিবাদর্ যালিতে পৌঁছাতেই বিক্ষোভকারীরা 'ট্রাম্পের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াও' বলে চিৎকার শুরু করে। তবে এ নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি কানাডার জনপ্রিয় এ প্রধানমন্ত্রী। এদিন মুখে কালো মাস্ক, সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরে সমাবেশস্থলে যান ট্রুডো। এ সময় এক বিক্ষোভকারী তার হাতে 'বস্নাক লাইভস ম্যাটার' লেখা একটি কালো টিশার্ট তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রী তা সাদরে গ্রহণ করলেও আর গায়ে চাপাননি। তবে এমনভাবে সেটি মেলে রাখেন, যেন এর লেখা সবাই পড়তে পারে। সমাবেশে অংশ নিয়ে প্রতিবাদকারীদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন ট্রুডো। তবে বেশিরভাগ সময়ই তাকে চুপচাপ থাকতে দেখা গেছে। এভাবে ঘণ্টাখানেক থেকে আবার নিজের অফিসে ফিরে যান কানাডার প্রধানমন্ত্রী। সমাবেশে অংশ নেওয়ার আগে জাস্টিন ট্রুডো সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বর্ণবাদ ও বৈষ্যমের বিরুদ্ধে কানাডার জনগণের পাশে রয়েছে তার সরকার। এর আগে, গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি এবং বিক্ষোভ দমনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেনা মোতায়েনের হুঁশিয়ারি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল ট্রুডোকে। সেদিন হুট করে জবাব না দিয়ে প্রায় ২০ সেকেন্ড চুপচাপ ছিলেন তিনি। এরপর কিছুটা ভেবে-চিন্তে ট্রুডো বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। এখনই সময় সবাইকে এক কাতারে আনার। এটাই সময় তাদের কথা শোনার। দশকের পর দশক উন্নতির ধারা এগিয়ে চললেও যেসব স্থানে অবিচার হচ্ছে তা জানা প্রয়োজন।' যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে একটি রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করতেন ৪৬ বছর বয়সি জর্জ ফ্লয়েড। গত ২৫ মে সন্ধ্যায় জাল টাকার মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রকাশ্যে রাস্তায় মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরেন ফ্লয়েডের। এভাবে অন্তত ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড তাকে মাটিতে চেপে ধরে রাখা হয়। এক প্রত্যক্ষদর্শীর তোলা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জর্জ ফ্লয়েড নিশ্বাস না নিতে পেরে কাতরাচ্ছেন এবং বারবার ওই শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তাকে বলছেন, 'আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না।' এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয় মুহূর্তেই। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ। এই আন্দোলন এখন যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে সারাবিশ্বে।