বিতর্কিত নিরাপত্তা আইন

হংকং নিয়ে যুক্তরাজ্যকে হুঁশিয়ারি চীনের

কান্ডজ্ঞানহীন আচরণ করছে লন্ডন :চীনা রাষ্ট্রদূত

প্রকাশ | ০৮ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
যুক্তরাজ্যে চীনা রাষ্ট্রদূত লিউ শিয়াওমিং
নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালুর পর হংকংয়ে নাক না গলানোর ব্যাপারে যুক্তরাজ্যকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে চীন। হংকংয়ের প্রায় ৩০ লাখ বাসিন্দাকে যুক্তরাজ্য এরই মধ্যে নাগরিকত্বের যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে 'বড় ধরনের হস্তক্ষেপের' সামিল বলে অভিযোগ করেছেন চীনা রাষ্ট্রদূত লিউ শিয়াওমিং। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি চীনের নতুন নিরাপত্তা আইনে হংকংয়ের 'স্বাধীনতা' ক্ষুণ্ন হয়েছে অভিযোগ করে এতে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদেরকে যুক্তরাজ্যের সাবেক উপনিবেশটি ছাড়ার সুযোগ দেওয়া হবে বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ প্রস্তাব অনুযায়ী, হংকংয়ে যুক্তরাজ্যের পাসপোর্টধারী প্রায় তিন লাখ ৫০ হাজার বাসিন্দাসহ আরও ২৬ লাখ 'উপযুক্ত' বাসিন্দা যুক্তরাজ্যে গিয়ে পাঁচ বছর বাস করতে পারবেন। এর একবছর পর তারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদনও করতে পারবেন। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লিউ বলেন, 'চীন কখনো যুক্তরাজ্যসহ অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেনি। যুক্তরাজ্যও সে নীতি মেনে চলবে বলে আমরা আশা করি।' তিনি বলেন, 'যুক্তরাজ্য ভালো করেই জানে, হংকং আর ঔপনিবেশিক শাসনে নেই। হংকংকে চীনের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এটি এখন চীনের অংশ। হংকং হস্তান্তর হয়ে যাওয়ার পর সেখানে যুক্তরাজ্যের আর কোনো সার্বভৌমত্ব নেই এবং কোনো প্রভাব খাটানো বা তদারকির অধিকারও নেই।' ফলে হংকংবাসীদের যে প্রস্তাব দিয়েছে তা আরেকবার ভেবে দেখবে যুক্তরাজ্য, এমনটিই আশা করেন বলে জানান লিউ। হংকং নিয়ে লন্ডন কান্ডজ্ঞানহীন সব মন্তব্য করছে বলেও সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন তিনি। যুক্তরাজ্যের দেওয়া প্রস্তাবের কী পাল্টা জবাব বেইজিং দেবে, সে সিদ্ধান্ত ওই প্রস্তাবের বিস্তারিত জানার পরই নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন লিউ। চীনের হুঁশিয়ারির প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মুখপাত্র ব্রিটিশ ন্যাশনাল ওভারসিজ (বিএনও) মর্যাদা থাকা হংকংবাসীদের ক্ষেত্রে বেইজিংকে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানিয়েছেন। চীনের পার্লামেন্ট গত ৩০ জুন নতুন হংকং নিরাপত্তা আইন পাস করে। এ আইনের আওতায় হংকংয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদ, কর্তৃপক্ষকে অবমাননা, সন্ত্রাসবাদ ও জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করতে বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং এ ধরনের অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান করা হয়েছে। কিন্তু আইনটিকে হংকংয়ের বিশেষ স্বায়ত্তশাসন, স্বাধীনতার জন্য হুমকি এবং বৃহত্তর গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন ও ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে বর্ণনা করে আসছেন সমালোচকরা। চীনের এ আইন পাসের নিন্দা-সমালোচনা করেছে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং ন্যাটোও। যুক্তরাজ্য বলছে, চীনের নতুন নিরাপত্তা আইন ১৯৯৭ সালে কার্যকর হওয়া চুক্তির লঙ্ঘন। যে চুক্তির আওতায় 'এক দেশ, দুই ব্যবস্থার' অধীনে হংকংয়ে ৫০ বছরের জন্য সুনির্দিষ্ট স্বাধীনতা বজায় রাখা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। এদিকে, চীনের নতুন আইন চালুর পর হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি কর্মী জশুয়া ওং আরও বেশি আন্তর্জাতিক সমর্থন কামনা করেছেন। তিনি হংকংবাসী এবং বিশ্বের অন্য দেশগুলোকে বেইজিংয়ের কাছে মাথানত না করারও আহ্বান জানান।