নতুন গবেষণা

ইউরোপীয়দের আগেই আমেরিকা পৌঁছেছিল পলিনেশিয়ানরা

প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সেই দ্বীপ, যেখানে নতুন বিশ্বের স্বাক্ষর পাওয়া যায়
আদি আমেরিকান এবং পলিনেশিয়ানরা (মধ্য এবং দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপমালা) ১২০০ বছর ধরে উন্মুক্ত সমুদ্রে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছিল এবং তারা পরস্পর মিশে গেছে। বর্তমান জনগোষ্ঠীর ডিএনএ বিশ্লেষণ করে এই সংযোগের অকাট্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। গত বুধবার বিজ্ঞানীরা নতুন এ গষেণার কথা জানান। সংবাদসূত্র : এএফপি অনলাইন বর্তমান কলম্বিয়া অথবা ইকুয়েডরের লোকজন হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যাঞ্চলের ছোট ছোট দ্বীপগুলোতে পৌঁছেছিল। অথবা পলিনেশিয়ানরা সমুদ্রযাত্রায় দক্ষিণ আমেরিকায় পৌঁছেছিল এবং তারা সেখান থেকে ফিরছিল কিনা, তা এখনো অজানা। তবে ডিএনএর প্রাকৃতিক বন্ধন গবেষণায় এটি নিশ্চিত হয়েছে, আমেরিকা ও পলিনেশিয়া অঞ্চলে ইউরোপিয়ানদের পা রাখার কয়েকশ বছর আগেই তাদের মধ্যে যাগাযোগ স্থাপিত হয়েছিল এবং ফ্রান্স পলিনেশিয়ান (পরবর্তী সময়ে ফ্রান্সের কলোনি দ্বীপগুলো) অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা লোকদের ডিএনএর মধ্যে তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া নতুন বিশ্বের স্বাক্ষর রয়েছে। মেক্সিকোর 'ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি অব জিনোমিকস ফর বায়োডাইভারসিটি'র প্রধান অনুসন্ধানকারী (ইনভেস্টিগেটর) এবং গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান লেখক আন্দ্রেজ মরিনো এসত্রাদা বলেন, 'এই অনুসন্ধানগুলো আমাদের প্রজাতির বিশাল মহাদেশীয় বিস্তারের একটি অন্যতম অজানা অধ্যায়, যা আমাদের আগের ধারণা পাল্টে দিচ্ছে।' আর্কিওলোজিস্ট এবং ঐতিহাসিকরা কয়েক দশক ধরে ওশেনিয়ার দ্বীপবাসীরা এবং আদি আমেরিকানরা মধ্যযুগে মহাসমুদ্র অতিক্রম করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছিল কিনা এবং সেটা কীভাবে হয়েছিল এই অজানা ঘটনা উদ্ঘাটনে চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। ১৯৪৭ সালে নরওয়েজিয়ান অনুসন্ধানী ও লেখক থর হায়ারডাহাল স্থানীয়ভাবে তৈরি একটি ভেলায় করে দীর্ঘ মহাসমুদ্র পাড়ি দিয়েছিলেন, তিনি ইনকা দেবতার নাম অনুসারে এই ভেলাটির নাম রেখেছিলেন 'কোন-টিকি' এবং ফরাসি পলিনেশিয়ান টুয়ামোটাস দ্বীপে পৌঁছে ভেলাটি ধ্বংস হওয়ার আগে তিনি পেরু থেকে ১০১ দিনে প্রায় সাত হাজার কিলোমিটার মহাসমুদ্র পাড়ি দিয়েছেন। হায়ারডাহাল এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান, এই দ্বীপের বাসিন্দারা পেরু থেকে গিয়ে জনসংখ্যা বিস্তার করেছে এবং তিনি নিজের সমুদ্রযাত্রা দিয়ে দেখাতে চান যে এটা সম্ভব। তবে সেটি ছিল অর্ধসত্য। যুক্তরাষ্ট্রের স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটির পোস্ট ডক্টরাল গবেষক এবং পেপারের লিড লেখক আলেকজান্ডার আইওনানিডিস বলেন, 'সম্ভবত পলিনেশিয়ানরাই আগে আমেরিকায় পৌঁছেছিল এবং তারা উত্তাল মহাসমুদ্র পাড়ি দেয়ার প্রযুক্তি ও সক্ষমতা অর্জন করেছিল।' হালকা নৌকায় ভ্রমণ করে পলিনেশিয়ানরা হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ, ইস্টার আইল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডে ত্রিভূজ আকৃতির অঞ্চলজুড়ে বসতি স্থাপন করেছে। এখন পর্যন্ত আমেরিকান আদিবাসী ও পলিনেশিয়ান সংস্কৃতির অভিন্ন অংশ মিষ্টি আলু। আইওনানিডিস বলেন, এটি আদি আমেরিকান সংস্কৃতি, ইউরোপীয়দের আগমনের অনেক আগেই হাজার মাইল দূরে পলিনেশিয় দ্বীপে এই সংস্কৃতি ছিল। তিনি বলেন, 'মধ্য আমেরিকা ও পলিনেশিয় দ্বীপের লোকদের ডিএনএ পরীক্ষা করে আমরা একই ডিএনএ সিকুয়েন্স ও কোড পেয়েছি। এমনকি পলিনেশিয় ভাষার সঙ্গে আদি আমেরিকান আন্দেজ ভাষার মিল পেয়েছি।'