করোনা :আক্রান্তে সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র

'বাতাসের মাধ্যমে কিছু মাত্রায় সংক্রমণ হতে পারে'

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রে করোনার প্রকোপ হুহু করে বেড়েই চলেছে। আক্রান্ত ও মৃতু্যতে অনেক আগেই অন্যান্য দেশকে ছাড়িয়ে গেছে দেশটি। এবার আক্রান্তে নিজেদের আগের সব রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা 'ওয়ার্ল্ডওমিটার'র পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে একদিনেই আক্রান্তের সংখ্যা ৭১ হাজার ৭৮৭ এবং মারা গেছে ৮৪৯ জন। গত কয়েকদিন ধরেই টানা ৬০ হাজারের বেশি আক্রান্ত হয়েছে দেশটিতে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি বার্তা সংস্থা 'রয়টার্স'র জরিপ অনুযায়ী, শুক্রবার দেশটিতে একদিনেই আক্রান্তের সংখ্যা ৬৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলাস্কা, জর্জিয়া, ইদাহো, লোয়া, লুইজিয়ানা, মনটানা, ওহিও, উটাহ এবং উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যেও একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ। আর 'জন্স হপকিন্স' বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে শুক্রবার একদিনেই আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৯০০। ওই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৬। এর মধ্যে মারা গেছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৫৯ জন। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম প্রাণঘাতী করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। করোনায় আক্রান্ত ও মৃতু্যতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্যেই করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃতু্য দেখেছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য। ওয়ার্ল্ডওমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩২ লাখ ৯১ হাজার ৭৮৬। এর মধ্যে মারা গেছে এক লাখ ৩৬ হাজার ৬৭১ জনের বেশি। বাতাসের মাধ্যমে কিছু মাত্রায় সংক্রমণ হতে পারে এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফাউচি বলেছেন, কিছু মাত্রায় করোনাভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে। শুক্রবার তিনি এই মন্তব্য করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডবিস্নউএইচও) দুই শতাধিক বিজ্ঞানীর চ্যালেঞ্জের পর যখন বাতাসে করোনার সংক্রমণ নিয়ে বিতর্ক চলছে, তখন ফাউচি একথা বললেন। এর একদিন আগেই জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটি সংক্রমণের উপায় নিয়ে আরও গভীর গবেষণার আহ্বান জানায়। যুক্তরাষ্ট্রের 'ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস'র প্রধান ডা. ফাউচি বলেন, অ্যারোসল সংক্রমণ নিয়ে এখনো প্রশ্ন রয়েছে। তবে কিছু মাত্রায় এই সংক্রমণ ঘটতে পারে। এর আগে বৃহস্পতিবার ফাউচি বলেছিলেন, বায়ুবাহিত সংক্রমণ ঘটার বিষয়টি যুক্তিসঙ্গত অনুমান। তবে এই অনুমানের পেছনে দৃঢ় কোনো প্রমাণ এখন পর্যন্ত নেই। মহামারির শুরুর দিকে ধারণা করা হতো, হাঁচি বা কাশির ফলে ছড়ানো 'ড্রপলেটের' (মুখ নিঃসৃত জলকণা) মাধ্যমেই করোনাভাইরাস ছড়ানো সম্ভব। সে কারণেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষার জন্য হাত ধোয়াকে অন্যতম একটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন। সম্প্রতি ৩২টি দেশের ২৩৯ জন বিজ্ঞানী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে একটি উন্মুক্ত চিঠি লেখেন। সেখানে বায়ুবাহিত সংক্রমণের বিষয়টিকে মাথায় রেখে করোনাভাইরাস গাইডলাইন হালনাগাদ করার আহ্বান জানান তারা।