শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
নকল মার্কিন রণতরি ধ্বংস

অভিনব মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি ইরানের

তেহরানের ক্ষমতা প্রদর্শনে হতচকিত ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রকে আরও অনুতপ্ত হতে হবে :ইরান
যাযাদি ডেস্ক
  ৩০ জুলাই ২০২০, ০০:০০
উপসাগরে প্রতীকী মার্কিন জাহাজ ধ্বংস করছে ইরান

আচমকাই যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলে। মিসাইল হামলার হাই অ্যালার্ট জারি হয়ে গিয়েছিল মার্কিন নৌসেনার একাধিক যুদ্ধ জাহাজেও। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই জানা যায়, যুদ্ধ নয়, সামরিক মহড়ায় নেমেছে ইরানের সেনাবাহিনী। তবে সেই মহড়াও অভিনব। উপসাগরীয় অঞ্চলে নকল মার্কিন যুদ্ধজাহাজ তৈরি করা হয়েছিল। এরপর ইরানের 'এলিট বাহিনী' রেভলু্যশনারি গার্ড (আইআরজিসি) সেই জাহাজ লক্ষ্য করে মিসাইল ছোড়ে। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় নকল মার্কিন যুদ্ধজাহাজ। সংবাদসূত্র :রয়টার্স, আল-জাজিরা, বিবিসি

মঙ্গলবারের এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। তেহরানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ। ট্রাম্প সরকার ইরানের ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে রেখেছে। এরই মধ্যে রেভোলু্যশনারি গার্ডের গুরুত্বপূর্ণ এক কমান্ডারকে হত্যা করে ওয়াশিংটন। যার জেরে কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছিল দুই দেশের মধ্যে।

করোনা এসে দুই দেশের সেই তিক্ত সম্পর্কে খানিকটা হলেও পানি ঢেলেছিল। আপাতদৃষ্টিতে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার ইরানের সেনাবাহিনী বুঝিয়ে দিলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এতটুকুও বদলায়নি।

এ দিনের মহড়ার পর রেভোলু্যশনারি গার্ডের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, উপসাগরীয় অঞ্চলে ইরানের ক্ষমতা দেখানোর জন্যই ওই নকল মহড়ার আয়োজন করা হয়েছিল। পুরো মহড়াটি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। দেশের মানুষকে দেখানো হয় ইরানের সক্ষমতা।

যুক্তরাষ্ট্রও প্রাথমিকভাবে ইরানের এই অভিনব মহড়ায় হতচকিত হয়ে গিয়েছিল। উপসাগরীয় অঞ্চলে দুইটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজে হাই অ্যালার্ট ঘোষণা হয়েছিল। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই বোঝা যায়, এটি ইরানের সামরিক মহড়া। আসল যুদ্ধ নয়। তবে যেভাবে তেহরান এ কাজ করেছে, তার তীব্র সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

উপসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর কমান্ডার এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র তার সহযোগী দেশগুলোকে নিয়ে উপসাগরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে। এই অঞ্চলের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। আর ইরান সেখানে নিজেদের আক্রমণাত্মক চেহারা প্রকাশ করছে। এটি এই অঞ্চলের শান্তি প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।' যেভাবে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করার ছবি দেখানো হয়েছে তা মোটেই ভালোভাবে নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। এদিন টেলিভিশনে দেখা গেছে, নকল মার্কিন যুদ্ধজাহাজ লক্ষ্য করে একের পর এক মিসাইল আক্রমণ চালাচ্ছে ইরান। নকল ফাইটার জেটও দেখা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইচ্ছে করেই ইরান এই কাজ করেছে। প্রতিবেশী দেশগুলোকে তারা বুঝিয়ে দিতে চেয়েছে যে, উপসাগরীয় অঞ্চলে এখনো তাদের শক্তি অটুট। যুক্তরাষ্ট্রকেও একই বার্তা দিতে চেয়েছে তারা। উলেস্নখ্য, উপসাগরীয় দেশ বাহরাইনের ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর পঞ্চম ফ্লিট অবস্থান করছে।

সম্প্রতি করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি অব্যাহত রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রকে আরও অনুতপ্ত হতে হবে : ইরান

এদিকে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইয়ে্যদ আব্বাস মুসাভি বলেছেন, তার দেশের যাত্রীবাহী বিমান হয়রানি করার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে যার কারণে ওয়াশিংটনকে অনুতপ্ত হতে হবে।

মঙ্গলবার রাজধানী তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। গত বুধবার সিরিয়ার আকাশে ইরানি বিমান হয়রানি করার ঘটনাকে আব্বাস মুসাভি খুবই বিপজ্জনক 'সন্ত্রাসী ও শত্রম্নতাপূর্ণ' কাজ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যে কাজ করেছে তা সব আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ইরান সময় মতো যুক্তরাষ্ট্রের এ অন্যায়ের জবাব দেবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<107507 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1