করোনার বিশেষ দুর্বলতা খুঁজে পেলেন রুশ বিজ্ঞানীরা! ভ্যাকসিন নিয়ে সতর্ক করল ডবিস্নউএইচও

প্রকাশ | ০৬ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
রাশিয়ার একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, তারা করোনাভাইরাসের একটি 'বিশেষ দুর্বলতা' খুঁজে পেয়েছেন। সংবাদমাধ্যম 'স্পুটনিক নিউজ' জানিয়েছে, সাইবেরিয়ার নভোসাবিরস্কে 'ভেক্টর স্টেট রিসার্চ সেন্টার অব ভাইরোলজি অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি'তে গবেষণারত বিজ্ঞানীদের দাবি অনুযায়ী, স্রেফ পানি দিয়ে করোনাভাইরাসের বৃদ্ধি ঠেকানো যেতে পারে। সংবাদসূত্র : এএফপি, রয়টার্স, গার্ডিয়ান স্পুটনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখা পানির সংস্পর্শে এসে মরে যায় করোনাভাইরাসের প্রায় ৯০ শতাংশ উপাদান। আর ৭২ ঘণ্টায় মরে যায় প্রায় ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ। বিজ্ঞানীরা আরও দাবি করেছেন, ফুটন্ত পানির সংস্পর্শে এলে করোনাভাইরাস সম্পূর্ণভাবে এবং সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, নোনা জলে করোনাভাইরাস বংশ বৃদ্ধি করতে পারে না। তবে কিছুক্ষণ সক্রিয় থাকতে পারে। সে সময় পানির তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে ভাইরাসের আয়ু। বিজ্ঞানীরা জানান, এই ধরনের পানিতেও দ্রম্নততার সঙ্গে মারা যায় ভাইরাস। গবেষকদের দেওয়া এই চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে রাশিয়ার ভোক্তা সুরক্ষায় নিয়োজিত সংস্থা 'রসপোত্রেবনাদজোর'। এদিকে, নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আগামী অক্টোবরে গণহারে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করার পরিকল্পনা করছে রাশিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো জানিয়েছেন, রাজধানী মস্কোর গবেষণা সংস্থা 'গামালেয়া ইনস্টিটিউট' একটি ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ করেছে এবং এটি নিবন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি বলেন, 'আমরা আগামী অক্টোবর থেকে গণহারে ভ্যাকসিন প্রয়োগের কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করছি।' অন্যদিকে, রাশিয়া অক্টোবর থেকে নিজেদের তৈরি ভ্যাকসিন গণহারে মানুষের দেহে প্রয়োগ শুরুর ঘোষণা দেওয়ার পর ভ্যাকসিন নিয়ে আন্তর্জাতিক নির্দেশিকা ও বিধি অনুসরণ করার জন্য দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও)। ভ্যাকসিন প্রয়োগে রাশিয়ার তাড়াহুড়া দেখেই এমন সতর্ক বার্তা দিয়েছে সংস্থাটি। সংস্থাটির মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডমেইয়ার মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, 'মাঝেমধ্যে বিশেষ কোনো গবেষক দল দাবি করে, তারা কিছু খুঁজে পেয়েছেন। অবশ্যই সেটা সুসংবাদ। কিন্তু ভ্যাকসিন কাজ করছে বলে কিছু খুঁজে পাওয়া এবং সব ধাপ পার করার মাধ্যমে তার কার্যকারিতা নিশ্চিতের মধ্যে বিশাল ফারাক রয়েছে।' বিশ্বজুড়ে দেড় শতাধিক করোনা ভ্যাকসিনের কাজ চলছে। এর মধ্যে প্রায় দুই ডজন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে মানবদেহে প্রয়োগ করে দেখা হচ্ছে। মানুষের দেহে প্রয়োগের জন্য অনুমোদন পাওয়ার আগে মূলত তিনটি ধাপে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা হয়। কিন্তু তৃতীয় ধাপে যাওয়া ছয়টি ভ্যাকসিনের মধ্যে রাশিয়ারটি নেই। তৃতীয় কিংবা চূড়ান্ত ধাপে হাজার হাজার মানুষের দেহে প্রয়োগের মাধ্যমে ভ্যাকসিনটি নিরাপদ ও কার্যকরী কিনা তা পর্যালোচনা করা হয়। কিন্তু তৃতীয় ধাপে গণহারে এখনও পরীক্ষা না চালিয়ে অন্য সবার আগে ভ্যাকসিন ব্যবহারের ঘোষণা দিয়ে দিনক্ষণ ঠিক করায় রাশিয়ার ভ্যাকসিনটি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে সবার মধ্যে।