যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন

শত্রম্ন তিন দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর

প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপের চেষ্টা চীন রাশিয়া ও ইরানের

প্রকাশ | ০৯ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
এনসিএসসির পরিচালক উইলিয়াম এভানিনা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবারও হস্তক্ষেপের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। দেশটির শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা আসন্ন নির্বাচনে তিন শত্রম্ন দেশ চীন, রাশিয়া ও ইরান 'হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে' বলে সতর্ক করেছেন। সংবাদসূত্র : বিবিসি, সিএনএন ন্যাশনাল কাউন্টার ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি সেন্টারের (এনসিএসসি) পরিচালক উইলিয়াম এভানিনা শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, তিনটি দেশ 'প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রভাবের মাধ্যমে ভোটে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে। ওই রাষ্ট্রগুলো নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে জেতাতে চায়'। তিনি আরও বলেন, 'তারা অনলাইনে গুজব ছড়িয়ে বিভিন্নভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করতে চাইছে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভোটারদের আস্থা নষ্ট করার চেষ্টা করছে।' ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প শিবিরকে সাহায্য করতে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের পুরনো অভিযোগ নিয়েও এদিন কথা বলেন তিনি। যদিও ট্রাম্প এবং রাশিয়া উভয়ই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। বিভিন্ন তদন্তে অভিযোগের পক্ষে শক্ত প্রমাণও পাওয়া যায়নি। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরের ৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। অবশ্য, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে যথাসময় ভোটগ্রহণ নিয়ে কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং মৃতু্য উভয় তালিকাতেই শীর্ষে অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও মেইল-ইন ভোটিং বা ডাকযোগে ভোটগ্রহণের ক্ষেত্রে বিদেশি হস্তক্ষেপ, জালিয়াতি এবং ভুল ফল আসতে পারে উলেস্নখ করে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, মানুষের ভোট দেওয়ার মতো 'যথাযথ, সুরক্ষিত ও নিরাপদ' পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু খোদ ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির নেতারাই তার এই পরামর্শ গ্রহণ করেনি। রিপাবলিকান নেতারা ভোট পেছানোর সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, দেশটিতে নির্বাচন পেছানোর এখতিয়ার প্রেসিডেন্টের নেই। কংগ্রেসের দুই কক্ষের অনুমোদনসাপেক্ষেই কেবল নির্বাচন পেছানো যেতে পারে। সে ক্ষেত্রেও দেশটির সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন পড়বে বলে মত অনেকের। তাই আগামী ৩ নভেম্বর নির্বাচন হবে ধরে নিয়েই জোর প্রচার চলছে। শুক্রবার নিউ জার্সিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদেশি হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, তার প্রশাসন 'খুবই ঘনিষ্ঠভাবে বিষয়টির ওপর নজর রাখছে'। তিনি আরও বলেন, 'আমরা তাদের সবার ওপর নজর রাখছি, আমাদের খুবই সতর্ক থাকতে হবে। রাশিয়া, চীন এবং ইরান সবাই চায় আমি হেরে যাই।' নভেম্বরের ভোটে জিতে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে দারুণ আশাবাদী ট্রাম্প এবং তার দল। ডেমোক্রেটিক প্রার্থী সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবার ট্রাম্পের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। এভানিনা বলেন, রাশিয়ার সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং রুশ টেলিভিশনে পরোক্ষভাবে ট্রাম্পের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে। ইউক্রেনের রুশপন্থি নেতারাও একই কাজ করছেন। সেখানে বাইডেনের ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্তের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে। অন্যদিকে, চীন চাইছে ট্রাম্প পুনঃনির্বাচিত না হোন। কারণ, বেইজিংয়ের কাছে ট্রাম্প অনেক বেশি 'আনপ্রেডিক্টেবল'। অন্যদিকে ইরান অনলাইনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে বলে সতর্ক করেন এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।