নিরাপত্তা আইন

হংকংয়ে 'মিডিয়া মুঘল' জিমি লাই গ্রেপ্তার

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
গ্রেপ্তার অবস্থায় জিমি লাইকে
হংকংয়ে বিতর্কিত নিরাপত্তা আইনের আওতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন 'মিডিয়া মুঘল' জিমি লাই। বহির্বিশ্বের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগে স্থানীয় সময় সোমবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধনকুবের জিমি লাইকের নিজস্ব সংবাদপত্রের দপ্তরগুলোতেও অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সংবাদসূত্র : বিবিসি, এএফপি, রয়টার্স চীন হংকংয়ে যে নতুন ও বিতর্কিত নিরাপত্তা আইন চালু করেছে, সেখানে বলা হয়েছে, বিদেশি শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্র, বিক্ষোভ দেখিয়ে জাতীয় স্বার্থবিরোধী কাজ করলেই গ্রেপ্তার করা হবে। তখনই অধিকাররক্ষা কর্মীরা জানিয়েছিলেন, চীনের নতুন আইন গণতন্ত্রবিরোধী এবং তা হংকংয়ের লোকদের প্রতিবাদের অধিকার কেড়ে নেবে। পশ্চিমা মিডিয়া বলছে, জিমি লাইকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো। এর আগে এই আইন প্রয়োগ করে বিক্ষোভকারী ছাত্রদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিমি লাইয়ের এক সহযোগী মার্ক সাইমন জানিয়েছেন, বিদেশি শক্তির সঙ্গে হাত মেলানোর অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, জিমি লাইয়ের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ। বিদেশি শক্তির সঙ্গে হাত মেলানো এবং জালিয়াতি করা। জাতীয় নিরাপত্তা আইনে এখনো পর্যন্ত যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার মধ্যে জিমি লাই হলেন সবচেয়ে 'হাই প্রোফাইল'। পুলিশ জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা আইনে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর বাইরে আর কোনো তথ্য পুলিশ দেয়নি। ১৯৮৯ সালে বেজিংয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের যে ভাবে চীন মোকাবিলা করেছিল, লাই তার খোলাখুলি নিন্দা করেছিলেন। তিনি বরাবর গণতন্ত্রপন্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। চীনের সরকারি মিডিয়ার অভিযোগ ছিল, লাই বিদেশি শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে চীনের সর্বনাশ করতে চাইছেন। গত বছর হংকংয়ে সরকারবিরোধী প্রচুর বিক্ষোভ হয়েছে। সেই বিক্ষোভের সূত্র ধরে লাইসহ ১৪ জন গণতন্ত্রপন্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। মিডিয়া গ্রম্নপগুলো আগেই এই নতুন আইন নিয়ে সাবধানবাণী শুনিয়েছিল। কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভ চলতে থাকার পর গত জুনে চীন এই নতুন আইন চালু করে। এই আইনে রাষ্ট্রদ্রোহ, বিধ্বংসী ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ, অথবা বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পুলিশের কাছে ঢালাও ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কোনো 'ওয়ারেন্ট' (সমন) ছাড়াই তারা তলস্নাশি করতে পারবে, সামাজিক মাধ্যম থেকে যেকোনো মেসেজ ডিলিট করতে এবং গ্রেপ্তার করতে পারবে। নতুন আইনে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, সরকারের বিরুদ্ধে কোনোরকম উসকানি দেওয়া যাবে না। তারা যে হংকং মিডিয়াকে শাসন করতে চায়, এ নিয়ে চীনও কোনো লুকোছাপা করেনি। আর তারা স্থানীয় ও বিদেশি এই দুই ধরনের মিডিয়াকেই শাসন করতে চায়। হংকংয়ের সাংবাদিকদের মাধ্যমেই মূল চীনের খবর এতদিন বাইরের দুনিয়ায় এসেছে। কিন্তু এখন সাংবাদিকদের আশঙ্কা, তাদের এ ধরনের প্রতিবেদন বিপদ ডেকে আনবে। লাইয়ের গ্রেপ্তার তারই ইঙ্গিত।