ঘোষণা ট্রাম্পের

ভোটের কারণে স্থগিত জি-৭ সম্মেলন

এ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় পেছাল সম্মেলন হোয়াইট হাউসের কাছে গুলি সরে গেলেন ট্রাম্প

প্রকাশ | ১২ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ এর আসন্ন সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যন্ত সম্মেলনটি স্থগিত রাখার কথা বলেছেন তিনি। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন। সংবাদসূত্র : বিবিসি, সিএনএন, রয়টার্স এর আগে বিদ্যমান করোনা মহামারির ফলে সম্মেলন এক দফা পেছানো হয়েছিল। এবার ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় এটি পেছানোর কথা বললেন। ট্রাম্প 'আহ্বান জানানো'র কথা বললেও তার দেশই এবারের আয়োজক হওয়ায় সম্মেলনটি যে আরেক দফা পেছালো; তা অনেকটা নিশ্চিত। ট্রাম্প বলেন, 'তিনি চান সম্মেলনটি নির্বাচনের পরে হোক। আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে এর আয়োজন করা হতে পারে।' মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আয়োজক দেশ হিসেবে তার দেশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত জোটের অন্য সদস্য দেশগুলোর নেতাদের আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। অবশ্য সদস্য দেশগুলোর বাইরে জোটের সদস্য নয়, এমন দেশের নেতাদেরও দাওয়াত পাঠানো হবে বলে জানান ট্রাম্প। জোটের বাইরে, বিশেষ করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিনকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা জানান ট্রাম্প। তার ভাষায়, 'নিশ্চিতভাবেই তাকে (পুতিন) আমন্ত্রণ জানাবো। আমি মনে করি, তিনি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।' দীর্ঘদিন ধরেই রাশিয়াকে ফের জি-৭ এ ফেরাতে চাইছেন ট্রাম্প। তবে তার এমন দাবি বরাবরই প্রত্যাখ্যান করেছে জার্মানিসহ জোটের অন্য দেশগুলো। ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া 'দখল' করলে পশ্চিমা দেশগুলো এর জোরালো প্রতিবাদ জানায়। ওই দখলদারিত্বের জেরে একই বছর দেশটিকে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৮ থেকে বহিষ্কার করা হয়। ফলে আবারও স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের জি-৭ জোট নামে আগের পরিচিতি ফিরে পায় এই জোট। গ্রম্নপ অব সেভেন বা জি-৭ হলো অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে এগিয়ে থাকা দেশগুলোর জোট। গত মাসে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেছেন, যে কারণে রাশিয়াকে বাদ দেওয়া হয়েছিল, তার সমাধান এখনো হয়নি। জার্মানির একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাস বলেন, 'যতক্ষণ পর্যন্ত ওই সমস্যার সমাধান না হচ্ছে, ততক্ষণ আমি অন্তত রাশিয়ার জি-৭ এ ফিরে আসার সম্ভাবনা দেখছি না। মস্কো নিজে উদ্যোগী হয়ে এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। ক্রেমলিনের সেটাই করা উচিত।' রাশিয়ার গুরুত্ব অবশ্য অস্বীকার করেননি জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'জি-৭ এর কাছে রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমরা জানি সিরিয়া, লিবিয়া, ইউক্রেনের সমস্যা সমাধান করতে মস্কোকে লাগবে। রাশিয়ারও উচিত ইউক্রেনে নিজেদের ভূমিকা ঠিকভাবে পালন করা। কিন্তু সেখানে তারা খুব ধীরে চলছে।' হোয়াইট হাউসের কাছে গুলি সরে গেলেন ট্রাম্প এদিকে, হোয়াইট হাউসের কাছে গোলাগুলির কারণে দপ্তরটির প্রেস রুমে চলা সংবাদ সম্মেলনের মাঝখানেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হঠাৎ করে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিসের (ইউএসএসএস) একজন এজেন্ট তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নেন। এ ঘটনার বেশ ৯ মিনিট পর ট্রাম্প সংবাদ সম্মেলনে ফিরে এসে জানান, আইন প্রয়োগকারীরা এক ব্যক্তিকে গুলি করেছে এবং তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ওই সন্দেহভাজন সশস্ত্র ছিল, সেটি তিনি বুঝতে পেরেছেন বলেও জানান। উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ঘটনা 'সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে' আছে। তিনি আরও বলেন, 'হোয়াইট হাউসের বাইরে গুলির ঘটনা ঘটেছে। এটি বেশ ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে, তবে সেখানে আসলেই গুলির ঘটনা ঘটেছে আর কোনো একজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আমি জানি না ওই ব্যক্তির অবস্থা কী।' বিদেশে আক্রান্তদের ফিরতে না দেওয়ার পরিকল্পনা অন্যদিকে, বিদেশে করোনায় আক্রান্ত মার্কিন নাগরিকদের দেশে ফিরতে না দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ সংক্রান্ত একটি খসড়া প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন কোনো নাগরিক এবং দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুপতি পাওয়া কোনো ব্যক্তিকে দেশে ফিরতে না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবে। অর্থাৎ, করোনা সন্দেহভাজন হলেই এ ব্যবস্থা কার্যকর হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, একটি খসড়া প্রস্তাব রয়েছে। এতে কাউকে করোনা আক্রান্ত মনে করার যৌক্তিক কারণ থাকলে তাকে দেশে প্রবেশ করতে না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।