বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
করোনা সংকট

রাশিয়ার ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্বে সন্দেহ সৃষ্টি

দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দিতে চান রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা তাড়াহুড়া না করতে মস্কোকে অনুরোধ ডবিস্নউএইচওর
যাযাদি ডেস্ক
  ১২ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

করোনা সংকট থেকে বিশ্ববাসীকে বাঁচাতে এর ভ্যাকসিন আবিষ্কারে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ এবং বিজ্ঞানীরা। বিশ্বের অনেক দেশই ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টা করছে। এর মধ্যেই আশার আলো জাগিয়েছে রাশিয়া। দেশটি মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়েছে, তারা বিশ্বের প্রথম করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দাবি, রাশিয়ার হাত ধরেই বিশ্বের প্রথম ভ্যাকসিন আসছে। এই ভ্যাকসিন দিয়ে পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিতে চান রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা।

বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানিগুলোর স্থানীয় একটি সমিতি বলছে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগেই রাশিয়ার সম্ভাব্য করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন সাধারণ মানুষের দেহে প্রয়োগের অনুমতি লোকজনের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

নভেল করোনাভাইরাসের একটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের সবকটি ধাপই এরই মধ্যে শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছে রাশিয়ার সেচেনভ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। রুশ গবেষকদের দাবি, বিশ্বের যেসব দেশ ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে এগিয়ে, তাদের মধ্যে অন্যতম রাশিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে মস্কোভিত্তিক গামালেয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট। এদিকে, মঙ্গলবার এই ভ্যাকসিনের শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন দিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট পুতিনের সরকার। এবার সাধারণ মানুষের দেহে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হবে।

তবে ব্যাপকহারে এর ব্যবহার বিপজ্জনক হতে পারে বলে সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল সুরাশকোকে লেখা এক চিঠিতে 'অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালস অর্গানাইজেশন্স' (অ্যাক্টো) সতর্ক করেছে। অ্যাক্টোর নির্বাহী পরিচালক সেভেতলানা জেভিদোভা বলেন, যেখানে সবাই ভ্যাকসিন উন্নয়নের কাজে নিয়মনীতি অনুসরণ করছে, সেখানে রাশিয়া কেন নয়? তিনি বলেন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের কিছু নিয়ম আছে। এগুলো ভঙ্গ করা যাবে না।

জেভিদোভা আরও বলেন, 'এটা আসলে একটা আশার ভান্ডার। আমরা এখনো জানি না, পরীক্ষা না করেই এই ভ্যাকসিন মানুষের দেহে প্রয়োগ করলে কী ঘটতে পারে। গত সপ্তাহেই দ্বিতীয় দফায় এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন জানিয়েছেন, তার আশা খুব শিগগিরই এটির সাফল্য জানা যাবে।

এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও) ভ্যাকসিন প্রয়োগে রাশিয়ার তাড়াহুড়া দেখে দেশটিকে আন্তর্জাতিক নির্দেশিকা ও বিধি-নিষেধ অনুসরণের জন্য আহ্বান জানায়। সংস্থাটি বলছে, যেকোনো ভ্যাকসিন চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার আগে এটিকে সব ধরনের পরীক্ষায় সফল হতে হবে। সংস্থাটি জানায়, অনেক সময়, বিশেষ কোনো গবেষক দল দাবি করে যে, তারা কিছু খুঁজে পেয়েছেন। অবশ্যই সেটা সুসংবাদ। কিন্তু ভ্যাকসিন কাজ করছে বলে কিছু খুঁজে পাওয়া এবং সব ধাপ পার করার মাধ্যমে তার কার্যকারিতা নিশ্চিতের মধ্যে বিশাল ফারাক রয়েছে।

বিশ্বজুড়ে দেড় শতাধিক করোনা ভ্যাকসিনের কাজ চলছে। এর মধ্যে প্রায় দুই ডজন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে মানবদেহে প্রয়োগ করে দেখা হচ্ছে। মানুষের দেহে প্রয়োগের জন্য অনুমোদন পাওয়ার আগে মূলত তিনটি ধাপে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা হয়। কিন্তু তৃতীয় ধাপে যাওয়া ছয়টি ভ্যাকসিনের মধ্যে রাশিয়ারটি নেই।

তৃতীয় কিংবা চূড়ান্ত ধাপে হাজার হাজার মানুষের দেহে প্রয়োগের মাধ্যমে ভ্যাকসিনটি নিরাপদ ও কার্যকর কিনা, তা পর্যালোচনা করা হয়। কিন্তু তৃতীয় ধাপে গণহারে এখনো পরীক্ষা শেষ না হতেই সবার আগে ভ্যাকসিন ব্যবহারের ঘোষণা দিয়ে দিনক্ষণ ঠিক করায় রাশিয়ার ভ্যাকসিনটি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে সবার মধ্যে।

রাশিয়া সবেমাত্র তাদের ভ্যাকসিনের তৃতীয় বা শেষ পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করেছে। এরই মধ্যে দেশটির উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি ও বয়স্কদের প্রথমে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। মস্কোর তরফ থেকে পরিকল্পনা করা হয়েছে, অক্টোবরেই এই ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। একসঙ্গে অনেক মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সংবাদসূত্র : আল-জাজিরা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<108482 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1