দুই সপ্তাহের মধ্যে টিকা সরবরাহ করবে রাশিয়া

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
নিজেদের উদ্ভাবিত করোনা টিকা শিগগিরই চিকিৎসকদের কাছে পৌঁছানোর ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। বুধবার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো জানিয়েছেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে চিকিৎসকদের জন্য এ টিকার প্রথম ব্যাচ প্রস্তুত করা হবে। সংবাদসূত্র :রয়টার্স মিখাইল মুরাশকো বলেন, দৃশ্যত আমাদের বিদেশি সহকর্মীরা রুশ টিকার প্রতিযোগীদের সুবিধাদি তুলে ধরছেন এবং আমাদের মতামতকে সম্পূর্ণ 'ভিত্তিহীন' হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন। চূড়ান্ত ট্রায়াল সম্পন্ন না করেই টিকা বাজারে ছাড়ার বিষয়ে বিজ্ঞানীদের সমালোচনার মুখে মস্কোর দাবি, নিজস্ব বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনার পরই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রমাণ প্রকাশ করা হবে। এদিকে, আগ্রহী দেশগুলোকে করোনা ভ্যাকসিন সরবরাহে মস্কো প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া। তিনি বলেন, 'মহামারির বিরুদ্ধে জয়ী হতে আন্তর্জাতিক সহযোগীদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে মস্কো।' করোনাভাইরাসের নিরাপদ ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যে গত ১১ আগস্ট বিশ্বের প্রথম ভ্যাকসিন হিসেবে 'স্পুটনিক ভি' অনুমোদনের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন বলেন, এই ভ্যাকসিন এরই মধ্যে তার মেয়ের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে রাশিয়ার ঘোষণার পরই ভ্যাকসিনটির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে শুরু করে বিভিন্ন দেশ। তবে মস্কোর দাবি, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই এর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দেশে-বিদেশে আরও হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবীর ওপর এটির পরীক্ষা অব্যাহত থাকবে। মস্কোর দূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, এরই মধ্যে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় ভ্যাকসিনটির নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, 'আমরা ভ্যাকসিনটির উন্নয়ন ও উৎপাদনে আগ্রহী সব সহযোগীদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য প্রস্তুত। একই সঙ্গে কোভিড-১৯ এর বিস্তারের বিরুদ্ধে সমন্বিত আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নিশ্চিত করতেও তৈরি।' রাশিয়ার ভ্যাকসিন অনুমোদনের দাবি নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে পশ্চিমা কয়েকটি দেশ এর কার্যকারিতা ও নিরাপত্তার প্রমাণ দাবি করেছে। তবে রাশিয়ার দাবি, পশ্চিমা ওই দেশগুলোর নিজস্ব ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো কোনো ওষুধের বিপরীত প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে চরম দায়মুক্তি ভোগ করে থাকে। পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা খারিজ করে দিয়ে রুশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো বলেন, রাশিয়ার টিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতার ভয়েই এসব সমালোচনা করা হচ্ছে। তবে এর চেয়েও একধাপ এগিয়ে বলেছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত তহবিলের পরিচালক কিরিল দিমিত্রিয়েভ। তিনি বলেন, রুশ ভ্যাকসিনটি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর রাজনৈতিক উদ্বেগ তাদের নিজেদের নাগরিকদের জীবনকে বিপদের মুখে ফেলে দিচ্ছে। ব্রাজিলে উৎপাদন হবে রাশিয়া উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন করোনাভাইরাসের রুশ ভ্যাকসিন 'স্পুটনিক ভি'র ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এবং তা তৈরি করতে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এক ব্রাজিলীয় রাজ্য। সেখানকার কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথমে ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হবে। ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় পারানা রাজ্যের কর্মকর্তারা আরও বলেন, ব্রাজিলে ভ্যাকসিনটি তৈরি শুরু হওয়ার আগে এটিকে সেখানকার নিয়ন্ত্রকদের অনুমোদন পেতে হবে এবং তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা সম্পন্ন কিংবা ব্যাপক মানুষের ওপর পরীক্ষা করাতে হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২১ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ব্রাজিলে এটির উৎপাদন শুরু হবে। 'পারানা টেকনোলোজি ইনস্টিটিউট'র প্রধান জর্জ কালাডো বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'প্রাযুক্তিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে এটি খুবই উদ্দেশ্যমূলক একটি সমঝোতা স্মারক। এতে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি, খুব সাধারণভাবে আমাদের যৌথভাবে কাজের সুযোগ করে দিয়েছে।' তিনি বলেন, 'সমঝোতা অনুযায়ী রাশিয়া ভ্যাকসিনটির প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষার ফল রাজ্যটিকে সরবরাহ করবে।'