মানুষের মতো গণনা শক্তি আছে প্রাণীর মধ্যেও

প্রকাশ | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
নারী সঙ্গিনীকে আকৃষ্ট করতে পুরুষ ব্যাঙ ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ ডাকতে থাকেÑ একথা এখন হয়তো কারো অজানা নয়। এক্ষেত্রে পুরুষ ব্যাঙকে টেক্কা দিতে হয় অংশ নেয়া সব প্রতিদ্ব›দ্বীর। তাদের হারিয়ে তবেই জিততে হয় নারী ব্যাঙের মন। কিন্তু এই প্রণয়ের ডাকে নারী ব্যাঙ কীভাবে নিধার্রণ করে তার যোগ্য পুরুষ ব্যাঙকে? এবার সেই রহস্যই জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। ‘ফিলোসফিক্যাল ট্রান্স্যাকশন অব দ্য রয়েল সোসাইটি বি’ নামের এক সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে এমনই একটি নিবন্ধ। সেখানে বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, কেবল মানুষই গুনতে জানে না। অন্য অনেক প্রাণী আছে, যারা গুনতে জানে। কিছু কিছু প্রাণী তো এক্ষেত্রে মানুষকেও টেক্কাও দিতে পারে। প্রজননকালে পুরুষ ব্যাঙ তার কাছের নারী ব্যাঙকে আকৃষ্ট করতে ডাকতে থাকে। এই ডাক চলতে থাকে শ্বাসযন্ত্রের শেষ সীমা পযর্ন্ত। একই সময় প্রতিযোগী অন্য ব্যাঙের মধ্যে যে বেশি ডাকতে পারে, সেই শেষ পযর্ন্ত জয়ী হয়। নারী ব্যাঙ ডাক শোনে, এরপর তা গুনে সেই পুরুষ ব্যঙের কাছে ছুটে যায়। কিন্তু কী করে গুনতে পারে নারী ব্যাঙ? গবেষকরা বলছেন, এর নেপথ্যে এক বাস্তবসম্মত বিস্ময়কর সংখ্যা জ্ঞান রয়েছে ব্যাঙের মধ্যে। উভচর শ্রেণীভুক্ত এই প্রাণিটির মধ্য মস্তিষ্কে বিশেষ ধরনের কোষ রয়েছে, যা শব্দ সংকেত গুনতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী গ্রে রোজ বলেন, তাদের স্নায়ু নাড়ির কম্পন সংখ্যা সঠিকভাবে সময়মতো গুনতে পারে। একই সঙ্গে তারা অত্যন্ত পছন্দসইও হয়। যদি কখনও সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে নাড়ির স্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়, তখন স্নায়ু কাজ করা বন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় গণনা প্রক্রিয়াও। রোজ এটাকে বলেন, তখন খেলা বন্ধ হয়ে যায়। অনেকটা মানুষের যোগাযোগের মতোই প্রক্রিয়াটি। যেমন অবাঞ্ছিত কোনো মন্তব্য করার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যেতে পারে পুরো কথোপকথন। ব্যাঙের এই গণনা করার ক্ষমতা পুরো প্রাকৃতির বিশাল বিস্ময়ের মধ্যে একটি উদাহরণ মাত্র। বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, ইভলিউশনারি স্পেকট্রাম বা বণার্লী বিবতের্নর মধ্যে প্রাণীদের এক গভীর সংখ্যাজ্ঞান রয়েছে। তারা কেবল ছোট থেকে বড় কিংবা বড় থেকে ছোটর মধ্যেই পাথর্ক্য করতে পারে, এমন নয়; বরং চার এর থেকে দুই, দশ থেকে চার, ষাটের থেকে চল্লিশ আলাদা করতে পারে। যেমন, গোলাকার জাল তৈরিকারী মাকড়সা। জাল তৈরির সময় রেশম-আবৃত প্রে আইটেম তাদের গোপন এক জায়গায় লুকিয়ে রাখে, যাকে ‘ল্যাডার’ বলা হয়। বিজ্ঞানীরাও রহস্য ভেদ করতে পরীক্ষা চালানোর সময় পরীক্ষমূলকভাবে ওই গুপ্ত ভাÐারটি লুকিয়ে রাখেন। তখন মাকড়সা তার হারানো অনুষঙ্গগুলো খঁুজতে থাকে। দেখতে থাকে, সেখান থেকে কতগুলো অনুষঙ্গ সরিয়ে রাখা হয়েছে বা চুরি গেছে। অ্যাকুরিয়ামে রাখা গাপ্পিস মাস, স্টিক্যালব্যাকস মাছও এই গণনা বৈশিষ্ট্য ধারণ করে বলে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন। সংবাদসূত্র : ইনডিপেনডেন্ট