বিশেষ প্রতিবেদন

ভারতে আবারও প্রিয়াঙ্কাচচার্

প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী
সোনিয়া গান্ধীর ছেলে রাহুলের হাতে ভারতীয় কংগ্রেসের ব্যাটন তুলে দেয়ার পরও ‘উল্লেখযোগ্য উন্নতি’ না হওয়ায় আবার জেগে উঠেছে দলে সোনিয়া-কন্যা প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ভবিষ্যৎ ভ‚মিকা নিয়ে চচার্। তবে ধেঁায়াশা আগেও যেমন ছিল, এখনো আছে। স্বাস্থ্যের কারণে সোনিয়া গান্ধী বতর্মানে দলের কাজকমর্ ঠিকমতো দেখাশোনা করতে পারছেন না। ২০১৯ সালের লোকসভা নিবার্চনে সোনিয়া গান্ধী আদৌ দঁাড়াবেন কিনা, তা নিয়েই চলছে জল্পনা। রাজনৈতিক অঙ্গনে পা রাখার পর থেকেই কংগ্রেসের অন্দরমহলের ধারণা, দলের সাংগঠনিক সাফল্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রিয়াঙ্কা মায়ের নিবার্চনী আসন উত্তরপ্রদেশের রায়বেরিলির সবচেয়ে উপযুক্ত প্রাথীর্। কংগ্রেস থেকেও বলা হয়েছিল, সমাজবাদী পাটির্র সঙ্গে কংগ্রেসের জোট গড়ে তুলতে প্রিয়াঙ্কার অগ্রণী ভ‚মিকা অনস্বীকাযর্। দ্বিতীয়ত, ১৯৯৯ সাল থেকে উত্তরপ্রদেশের আমেথি এবং রায়বেরিলি আসন দুটি ধরে রাখতে প্রিয়াঙ্কার ভ‚মিকা সন্দেহাতীত। সোনিয়া গান্ধী ১৯৯৯ সালে প্রথমে ভোটে জিতেছিলেন আমেথি থেকে। ২০০৪ সালে আমেথি আসনটি ছেলে রাহুলের হাতে দিয়ে সোনিয়া দঁাড়ান রায়বেরিলি থেকে। দুটি আসনই তখন থেকে গান্ধী পরিবারের ঝুলিতে। তার আগে অবশ্য দঁাড়িয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। সেদিক থেকে দাদি এবং মায়ের আসন হিসেবে রায়বেরিলি প্রিয়াঙ্কার জন্য উপযুক্ত। এখন রাহুলকে দলীয় কাজকমের্ সাহায্য করছেন প্রিয়াঙ্কা, যেগুলো আগে সামলাতেন সোনিয়া নিজে। ২০১৪ সালের ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর থেকেই ¯েøাগান উঠেছে, দলের হাল ধরুক প্রিয়াঙ্কা। পোস্টারও পড়েছে এখানে-সেখানে। প্রিয়াঙ্কা আসুক, দেশ বঁাচুক। রাহুলের ওপর অনেকেরই তখন আস্থা ছিল না। রাহুল স্বভাবে ছিলেন অন্তমুর্খী। অন্যদিকে, প্রিয়াঙ্কার মধ্যে সবার সঙ্গে মেলামেশা করার একটা স্বাভাবিক প্রবণতা আছে, যেটা দলের পক্ষে ইতিবাচক। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা চাননি পরিবারে এ নিয়ে ফাটল ধরুক। তাই তাতে সাড়া দেননি। আমেথি এবং রায়বেরিলি আসন দুটি অঁাকড়ে পড়ে ছিলেন। বরং চেয়ে এসেছেন সোনিয়া, রাহুল এবং নিজের পারিবারিক বন্ধনে দলকে মজবুত করতে। দলে প্রিয়াঙ্কার ভবিষ্যৎ ভ‚মিকা নিয়ে ধেঁায়াশা কাটেনি। আগেও যেমন ছিল, এখনো আছে। সবর্ভারতীয় কংগ্রেস কমিটি এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদের কথায়, প্রিয়াঙ্কা নিজেই ঠিক করবেন, আরও সক্রিয় ভ‚মিকা পালন করবেন কিনা। কাজেই প্রশ্নটা রয়েই গেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক অমূল্য গাঙ্গুলি বলেন, ‘কংগ্রেসের দুদির্ন কেটে গেছে। এখন অবস্থাটা আগের চেয়ে ভালো। প্রিয়াঙ্কার আসার কোনো কারণ নেই। প্রিয়াঙ্কা ফিরে আসুক ¯েøাগান সম্পকের্ বলা যায়, দলের মধ্যে অনেকে তার সমথর্ক। তিনি ভোটে দঁাড়ালেও দঁাড়াতে পারেন। তবে রাহুল শীষর্ নেতা হয়েই থাকবেন। রাহুলের পাশে দঁাড়িয়ে গান্ধী পরিবারের কেন্দ্রগুলো প্রিয়াঙ্কা যেমন দেখাশোনা করছিলেন, তা তেমনি চলবে। তাতে কংগ্রেস ভালো ফল করবে বলে মনে হয়। তারপরই ছবিটা পরিষ্কার হবে। আগে রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে যত সন্দেহ ছিল, এখন আর তা নেই। রাহুল আগের চেয়ে এখন অনেক পরিণত। আর প্রিয়াঙ্কার স্বামী রবাটর্ ভদ্রার বিরুদ্ধে জমি দুনীির্তর অভিযোগ তো অনেক পুরনো। এখন পযর্ন্ত তা প্রমাণিত হয়নি।’ অনেক দিন ধরেই সোনিয়া গান্ধীর জামাই রবাটর্ কংগ্রেস থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতেন। সম্প্রতি দিল্লি সংলগ্ন হরিয়ানা রাজ্যে গুরুগ্রামে জমি বেচাকেনায় দুনীির্তর সঙ্গে জড়িত জনৈক সুরেন্দ্র শমার্র অভিযোগের ভিত্তিতে হরিয়ানা পুলিশ রবাটর্ এবং রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভ‚পেন্দ্র সিং হুডার বিরুদ্ধে এফআইআর করার পর কংগ্রেস আর চুপ করে থাকতে না পেরে রবাটের্র সমথের্ন এগিয়ে আসে। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা এক বিবৃতিতে বলেন, ফরাসি যুদ্ধবিমান রাফাল থেকে বিমূদ্রাকরণ, পেট্রল-ডিজেলে ১২ লাখ কোটি টাকা লুট, বছরে দুই কোটি কমর্সংস্থানে ব্যথর্তা ঢাকতে মোদি সরকার জনগণের দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছে। জমি দুনীির্ত সম্পকের্ কংগ্রেসের বক্তব্য, ২০০৮ সালে গুরুগ্রামের বাণিজ্যিক এলাকায় ট্যাক্স দিয়ে সাড়ে তিন একর জমি কিনেছিল ভদ্রার ‘স্কাইলাইট’ কোম্পানি। পঁাচ বছর পর সব কর মিটিয়ে সেটি বিক্রি করা হয় রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ডিএলএফকে। পুরো লেনদেনে কোথায় দুনীির্ত? এই ধরনের জমি বেচাকেনা বহু হয়েছে। শুধু রবাটের্র সাড়ে তিন একরেই শুধু দুনীির্ত খুঁজে পাচ্ছে মোদি সরকার। সংবাদসূত্র : ডয়চে ভেলে