জলবায়ু পরিবতের্ন পৃথিবীজুড়ে হতে পারে অগ্ন্যুৎপাত

প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
একদিকে পৃথিবী নামক গ্রহটি ধীরে ধীরে উন্নতির শিখরে উঠছে, অন্যদিকে জলবায়ুর অবস্থা ক্রমান্বয়ে নিম্নমুখী। দীঘির্দন থেকে বিজ্ঞানীরা নিম্নমুখী জলবায়ুর ভয়ঙ্কর পরিণতির বিষয়ে সতকর্বাতার্ দিচ্ছে। আরও একধাপ এগিয়ে সম্প্রতি তারা বলেছেন, উষ্ণ জলবায়ুর ফলে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা আগ্নেয়গিরিগুলো তাদের চরিত্র পরিবতর্ন করতে পারে। এর অগ্ন্যুৎপাতের মাত্রা ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। সমুদ্রপৃষ্ঠ ও আবহাওয়ার ওপর বৈরী প্রভাব দিনে দিনে জলবায়ুকে উষ্ণ করে তুলেছে। এই উষ্ণ জলবায়ুর কারণে সারা পৃথিবীতে ভয়ঙ্করভাবে অগ্ন্যুৎপাত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। একই সঙ্গে আগ্নেয়গিরির ওপর থাকা বরফ গলার সঙ্গে সঙ্গে ভ‚মিধসেরও আশঙ্কা বেড়ে যাবে। জলবায়ুর পরিবতের্নর ফলে বায়ুমÐলে আগ্নেয়গিরির ছাই ও ধেঁায়া উদ্গিরণ করছে। তবে বিজ্ঞানীরা এখন ভিন্ন দিকটা হওয়ারও ইঙ্গিত করছেন। অথার্ৎ, আগ্নেয়গিরির উদ্গিরণের ফলেই জলবায়ু পরিবতর্ন হতে পারে। ক্লেরমন্ট অ্যাভারজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি শিক্ষাথীর্ গিয়াচিনো রবাটির্র মতে, হিমবাহ পবর্ত কাঠামোগত স্থিতিশীলতার মাধ্যমে আগ্নেয়গিরির উদ্গিরণ ঠেকাতে পারে। তবে সেখানেও সমস্যা রয়েছে। কারণ জলবায়ু উষ্ণ হওয়ায় পবর্তগুলো থেকে বরফ গলতে শুরু করেছে। যা ভ‚মিধসের সম্ভাব্য নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। রবাটির্ আরও বলেন, যখন বরফ গলতে শুরু করেছে, তখন খুব সহজেই পবর্ত ভেঙে পড়তে পারে। আর আগ্নেয় পবর্ত হলে সমস্যার মাত্রা আরও বেড়ে যায়। কারণ আগ্নেয়গিরি হলো অভ্যন্তরীণ চাপজনিত ব্যবস্থা। বরফ গলা ও ভ‚মিধসের মাধ্যমে যদি সেই চাপ প্রতিহত করা হয়, তাহলে সেখানে অবশ্যই সমস্যার সৃষ্টি হবে। ইউরোপিয়ান জিওসায়েন্সেস ইউনিয়স জেনারেল অ্যাসেমবিøতে গিয়াচিনো রবাটির্ একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন। তিনি ও তার দল কানাডায় গবেষণা চালিয়েছিলেন। যদিও কানাডায় আগ্নেয়গিরির কাযর্ক্রম ততটা বিখ্যাত নয়। তবুও কানাডা হলো শত শত সক্রিয় আগ্নেয়গিরির সম্ভাব্য উৎস। উদাহরণ হিসেবে তিনি উত্তর ভ্যাঙ্কুভারের হিমবাহ আগ্নেয়গিরি ‘মাউন্ট মিগার’ এর কথা তুলে ধরেন। দুই হাজার বছর আগে ‘মাউন্ট মিগার’ এ সবের্শষ উদ্গিরণ হয়। তবে রবাটির্ ওই পবের্ত সবের্শষ ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুযোের্গর দিকে দৃষ্টিপাত করছেন। ২০১০ সালে পবের্তর দক্ষিণ অংশে কানাডার ইতিহাসের এ যাবৎকালের ভয়াবহ ভ‚মিধসের ঘটনাটি ঘটে। ওই পবের্তর ঢালের হিমবাহের তলদেশ সরে যাওয়ায় গ্রীষ্মকালে ঢাল ভয়ঙ্করভাবে বিপযর্স্ত হয়ে পড়ে। তখন পুরো পবর্ত উচ্চমাত্রার গতিবেগে নড়তে শুরু করে। ফলে ২০১৬ সালের দিকে উত্তপ্ত আগ্নেয়গিরির গ্যাস দ্রæতগতিতে বের হতে থাকে। যা হিমবাহে বরফের গুহার সৃষ্টি করে। এই প্রথম সেখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। পরবতীর্ সময়ে পবের্তর ভারসাম্যাবস্থার পরিবতর্ন হয়। এরপর বিজ্ঞানীরা হিমবাহ থেকে বরফ গলা ও আগ্নেয়গিরির অভ্যন্তরের ম্যাগমা ‘পামবিøলিং সিস্টেম’র পরিবতের্নর মধ্যে যোগসূত্র খঁুজতে থাকেন। তারা দেখতে পান, ম্যাগমা চেম্বার ও উদ্গিরণের মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরির পেছনে ভ‚মিধসের হাত রয়েছে। যা সরাসরি উষ্ণ জলবায়ুর কারণে ঘটে। এখান থেকেই বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, উচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে বরফ গলা ও ভ‚মিধসের সম্পকর্। বতর্মানে যে হারে তাপমাত্রা বাড়ছে তাতে এ ধরনের বড় বড় ভ‚মিধসের আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে। নতুন এই গবেষণা বলছে, উষ্ণায়নের ফলে খুব দ্রæত অথবা দেরিতে হলেও এ ধরনের অগ্ন্যুৎপাত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে। সংবাদসূত্র : ইনডিপেনডেন্ট ইউকে