ভারতে ১৩০ কোটি জনসংখ্যার অর্ধেক, অর্থাৎ ৬০ কোটি মানুষ আগামী বছরের ফেব্রম্নয়ারির মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির সরকারি কমিটি। কেন্দ্রীয় সরকারের করোনাভাইরাস বিষয়ক পূর্বাভাস কমিটির এক সদস্য সোমবার এই আভাস দেন। তবে এর ফলে পরবর্তী সময়ে সংক্রমণের গতি কমে আসতে পারে বলেও জানান তিনি। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ
এ পর্যন্ত ভারতে সরকারিভাবে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৬ লাখের বেশি। বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের পরই আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত। যদিও ভারতে কোভিডের প্রথম ঢেউ ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে আসছে গত সেপ্টেম্বরের মাঝ থেকে। ক্রমেই কমছে শনাক্তের সংখ্যাও। বর্তমানে দৈনিক আক্রান্তের হিসেবে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬০ হাজারের আশেপাশেই থাকছে।
কিন্তু বাস্তবে আরও অনেক বেশি মানুষই আক্রান্ত হয়েছে বলে মনে করছে সরকারের করোনাভাইরাস পরিসংখ্যান বিষয়ক পূর্বাভাস কমিটি। কমিটির সদস্য আইআইটি কানপুরের অধ্যাপক মনীন্দ্র আগরওয়াল বলেন, 'তাদের গাণিতিক মডেল অনুযায়ী, ভারতের জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ এখন আক্রান্ত। আর এই সংখ্যা ফেব্রম্নয়ারির মধ্যে বেড়ে ৫০ শতাংশে চলে যেতে পারে।'
সরকারি এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৪ শতাংশ মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি আছে। কিন্তু কমিটির হিসাব বলছে, সংখ্যাটি আরও বেশি হবে। আগরওয়ালের মতে, ভারতের জনসংখ্যা এতটাই বৃহৎ যে, এর ফলে জরিপ নির্ভুলভাবে করা নাও যেতে পারে। এ কারণেই কমিটি গাণিতিক মডেলের ওপর নির্ভর করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
কমিটির এই পদ্ধতি সম্পর্কে আগরওয়াল বলেন, তারা এমন সব সংক্রমণের ঘটনাও গণ্য করেছেন যেগুলোর রিপোর্ট হয়নি; যাতে সংক্রমিত মানুষকে দুটি আলাদা শ্রেণিতে ভাগ করা যায়।
কমিটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, সামাজিক দূরত্ব এবং মাস্ক পরার নির্দেশ যদি উপেক্ষা করা হয়, তাহলে তাদের পূর্বানুমানও ছাড়িয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে একমাসেই সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে ২৬ লাখ।
ভারতে তিন মাসের মধ্যে
সবচেয়ে কম সংক্রমণ
এদিকে, মহামারি করোনার সংক্রমণ কমছে ভারতে। মঙ্গলবার ভারতে নতুন করে যতজন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, তা গত তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মঙ্গলবার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪৬ হাজার ৭৯০ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া নতুন করে ৫৮৭ জনের মৃতু্যর পর মোট মৃতের সংখ্যা এক লাখ ১৫ হাজার ১৯৭।
ছুটির মৌসুম শুরু হওয়ায় মহামারি এই ভাইরাসটির সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে দুর্গাপূজা। এছাড়া দীপাবলির ছুটি চলবে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত। উৎসবে সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে বেশ কিছু রাজ্য পদক্ষেপ নিলেও কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
ভারতে করোনার সংক্রমণ এবং মৃতু্য; দুই দিক থেকেই শীর্ষে রয়েছে পশ্চিমের রাজ্য মহারাষ্ট্র। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে অন্ধ্রপ্রদেশ। এছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে কর্ণাটক ও তামিলনাড়ু এবং পঞ্চম স্থানে উত্তরপ্রদেশ।