যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন

চাঁদা সংগ্রহে রিপাবলিকান শিবিরে হতাশা

দুই শিবিরের মধ্যে ব্যাপক ব্যবধানের চিত্র ফুটে উঠেছে আইনজীবীদের মধ্যে ট্রাম্পের চেয়ে বাইডেনেরই সমর্থন বেশি

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
জোর প্রচারণায় ডেমোক্রেটরা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে আইনজীবীদের দেওয়া ব্যক্তিগত চাঁদার সিংহভাগই ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনের শিবির পেয়েছে বলে দেশটির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা পড়া নথিতে দেখা গেছে। এমনকি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনর্র্নিবাচনী প্রচার শিবিরের প্রতিনিধিত্ব করে লাখ লাখ ডলার আয় করা প্রতিষ্ঠান জোনস ডের আইনজীবীরা বাইডেনের প্রচার কমিটিকে প্রায় ৯০ হাজার ডলার দিলেও ট্রাম্প শিবিরকে দিয়েছেন মাত্র ৫০ ডলার। বিশ্লেষকদের মতে, অন্যান্য খারাপ খবরের সঙ্গে এ খবরও রিপাবলিকানদের হতাশা বহুগুনে বাড়িয়ে দিবে। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত আইনজীবীদের ব্যক্তিগত চাঁদা বিবেচনা করলে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান শিবিরের মধ্যে ব্যাপক ব্যবধানের চিত্রই ফুটে উঠবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের নথি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম। এই সময়ের মধ্যে বাইডেন শিবির আইনজীবীদের কাছ থেকে চাঁদা পেয়েছে প্রায় দুই কোটি ৯০ লাখ ডলার; অন্যদিকে তাদের কাছ থেকে ট্রাম্পশিবিরের হিসাবে যুক্ত হয়েছে ১৭ লাখ ৫০ হাজার ডলারেরও কম। 'জোনস ডে' এর পাশাপাশি অন্যান্য যেসব ল-ফার্ম রিপাবলিকান শিবির কিংবা ট্রাম্পের প্রতিনিধিত্ব করছে, তাদের আইনজীবীরাও ট্রাম্পের তুলনায় বাইডেনকে বেশি সমর্থন দিয়েছে বলে মার্কিন কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের নথিতে ইঙ্গিত মিলেছে। নথিতে থাকা হিসাবে কেবল আইনজীবীদের ব্যক্তিগত চাঁদার কথাই বলা হয়েছে, তাদের ল-ফার্মগুলো কাকে কত দিয়েছে তা নিয়ে কিছু বলা হয়নি। গত ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনে দুই প্রার্থীর মূল প্রচার কমিটির জমা দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এক লাখ ২০ হাজারের বেশি লোকের চাঁদার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছে গণমাধ্যম। এই নথিগুলোতে পলিটিকাল অ্যাকশন কমিটিকে (পিএসি) দেওয়া চাঁদার পরিমাণ কিংবা পিএসিকে ল-ফার্মগুলোর দেওয়া অনুদান বা চাঁদা অথবা আইনজীবীদের জীবনসঙ্গী ও তাদের উপর নির্ভরশীলদের দেওয়া চাঁদার তথ্য ছিল না। আইনজীবীরা অবশ্য অনেক আগে থেকেই রিপাবলিকান প্রার্থীর তুলনায় ডেমোক্রেট প্রার্থীদের বেশি চাঁদা দিয়ে এসেছেন বলে বিভিন্ন সময়ের তথ্যে দেখা গেছে। ২০১৫ সালে স্ট্যানফোর্ড, শিকাগো ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের দেওয়া এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের আইন পেশাটিকেই খানিকটা বামঘেঁষা বলে উলেস্নখ করা হয়েছিল। এবার যেসব প্রতিষ্ঠানের আইনজীবীরা বাইডেনের প্রচার শিবিরে সবচেয়ে বেশি অর্থ দিয়েছেন তাদের মধ্যে মরগান অ্যান্ড মরগান, ডেমোক্রেট প্রচার শিবিরের প্রতিনিধিত্ব করা কোভিংটন অ্যান্ড বারলিং ও সিডলি অস্টিন অন্যতম। অন্যদিকে, ট্রাম্প শিবির যে যে প্রতিষ্ঠানের আইনজীবীদের কাছ থেকে বেশি অর্থ পেয়েছে, তার মধ্যে আছে ফিশ অ্যান্ড রিচার্ডসন, কার্কল্যান্ড অ্যান্ড এলিস এবং গিবসন, ডান অ্যান্ড ক্রাচার। বাইডেন শিবিরকে দেওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আইনজীবীদের চাঁদার পরিমান গড়ে ট্রাম্পশিবিরকে দেওয়া গিবসন, ডান অ্যান্ড ক্রাচারের অ্যাটর্নিদের দেওয়া চাঁদার ১০ গুণ আর কার্কল্যান্ডের ২০ গুণ বলে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে। দুই শিবিরকে দেওয়া আইনজীবীদের ব্যক্তিগত চাঁদা নিয়ে ল-ফার্মগুলোর প্রতিনিধিদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। কোভিংটন অ্যান্ড বারলিং ডেমোক্রেট নির্বাচনী প্রচার শিবিরের প্রতিনিধিত্বও যেমন করছে তেমনি প্রতিষ্ঠানটি বাইডেনের প্রাপ্ত ব্যক্তিগত চাঁদার অন্যতম বড় উৎস, কিন্তু ট্রাম্পের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটেনি। জোনস ডে ২০১৯ সালেও ট্রাম্পের পুনর্র্নিবাচনী প্রচার শিবিরের প্রতিনিধিত্ব করে ৪৫ লাখ ডলারের বেশি আয় করেছে, অথচ তাদের আইনজীবীরাও রিপাবলিকান প্রার্থীর তুলনায় ডেমোক্রেট প্রার্থীকে বেশি চাঁদা দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে মন্তব্য চাইলে জোনস ডের মুখপাত্র ডেভ পেট্রু তাতে সাড়া দেয়নি। প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করা দুই আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, তারা বাইডেনের নীতিগুলোকে পছন্দ করেই তাকে চাঁদা দিয়েছেন। এছাড়া ট্রাম্পকে চাঁদা দেওয়ার ক্ষেত্রে সহকর্মীদের কাছ থেকে তারা তেমন কোনো চাপও অনুভব করেননি বলে জানিয়েছেন। ট্রাম্প কিংবা তার প্রচার শিবিরের প্রতিনিধিত্ব করা অন্য তিনটি প্রতিষ্ঠান- পর্টার রাইট মরিস অ্যান্ড আর্থার, ক্যাসউইজ, বেনসন অ্যান্ড টরেস ও মরগান, লুইস অ্যান্ড বোকিয়াসের আইনজীবীরাও বাইডেনকে বিপুল পরিমান চাঁদা দিয়েছে। পেনসিলভানিয়ার মতো 'ব্যাটলগ্রাউন্ড' রাজ্যগুলোতে ডাকযোগে ভোট সংক্রান্ত বিভিন্ন আইনি লড়াইয়ে ট্রাম্প শিবিরের প্রতিনিধিত্ব করা পর্টার রাইট কেবল আগস্টেই রিপাবলিকান নির্বাচনী কমিটির কাছ থেকে আড়াই লাখ ডলারের বেশি পেয়েছে।