নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

চীনে ব্যবসা ও ব্যাংক হিসাব ট্রাম্পের

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প
চীনের ব্যাংকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং বেশ কয়েক বছর তিনি দেশটিতে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রকল্প চালিয়েছেন বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলস ম্যানেজমেন্টের অধীনে থাকা ওই অ্যাকাউন্ট থেকে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে করও পরিশোধ করা হয়েছে। সংবাদসূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স, বিবিসি এশিয়ায় হোটেল ব্যবসার সম্ভাবনা যাচাইয়ের জন্যই ওই অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের এক মুখপাত্র। রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্ট সাম্প্রতিক সময়ে চীনে ব্যবসা করা মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বেশ সরব। বেইজিংয়ের সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধও বাধিয়ে দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যেই সেই দেশটির ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট থাকার এ তথ্য এল। ট্রাম্পের দেওয়া ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক করের নথি ও আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কাগজপত্র হাতে আসার পর নিউইয়র্ক টাইমস এই অ্যাকাউন্টের বিষয়টি জানতে পারে। পত্রিকাটি এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ট্রাম্প মাত্র ৭৫০ ডলার করে কর দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছিল। অন্যদিকে, ট্রাম্পের চীনা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থানীয়ভাবে কর দিয়েছিল এক লাখ ৮৮ হাজার ৫৬১ ডলার। ৩ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে ট্রাম্প তার ডেমোক্রেট প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে যেসব বিষয় নিয়ে তোপ দেগে যাচ্ছেন তার মধ্যে চীনও আছে। বাইডেন চীনের প্রতি নমনীয় অবস্থান নিয়েছেন বলে অভিযোগ হোয়াইট হাউসের দখল ধরে রাখতে চাওয়া এ রিপাবলিকানের। ট্রাম্প প্রশাসন এর আগে বাইডেনের ছেলে হান্টারের বিরুদ্ধেও নানান কথা বলেছিল এবং চীনের সঙ্গে তার লেনদেন নিয়ে প্রমাণ ছাড়াই অনেক কিছু দাবি করেছিল। জো বাইডেনের আয়কর রিটার্ন ও তার আর্থিক লেনদেনের কোথাও চীনের সঙ্গে কোনো ধরনের ব্যবসায়িক সংশ্লিষ্টতার তথ্য মেলেনি। ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের আইনজীবী অ্যালান গার্টেন চীনা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনকে 'পুরো গালগপ্প' অ্যাখ্যা দিয়েছেন। প্রতিবেদনটি 'ভুল অনুমানের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে' বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। চীনে স্থানীয়ভাবে কর দেওয়ার লক্ষ্যেই ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলস ম্যানেজমেন্ট ওই অ্যাকাউন্ট খুলেছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। আইনজীবী অ্যালান গার্টেন বলেন, তারা স্থানীয়ভাবে কর দেওয়ার জন্যই যুক্তরাষ্ট্রে কার্যালয় আছে এমন চীনা ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। কোনো চুক্তি, লেনদেন বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম সেখানে হয়নি। ২০১৫ সাল থেকে সেখানকার (চীন) কার্যালয়ও মূলত নিস্ক্রিয়। এরপরও ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি আছে। সেটি অন্য কোনো কাজে ব্যবহৃত হয়নি।' যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে ট্রাম্পের নানান ব্যবসা আছে। এসবের মধ্যে আছে স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডে গলফ কোর্স এবং বিশ্বজুড়ে বিলাসবহুল পাঁচ তারকা হোটেলের চেইন। চীনের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডেও ট্রাম্পের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে। যে কারণে ট্রাম্পের বিজয় চায় চীন এদিকে, চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বরবারই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কারণ। এ কারণে এই নির্বাচনের ওপর বেইজিংয়ের সতর্ক নজরই থাকে। গত নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় চীনের জন্য অর্থনৈতিক দুর্ভোগ ডেকে এনেছে। ট্রাম্পের 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির মাধ্যমে চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের ও বৈশ্বিক গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শত্রম্ন হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে শত শত কোটি ডলারের বাণিজ্য যুদ্ধ চালিয়েছে হোয়াইট হাউস। ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে। শুধু তাই নয় করোনা মহামারির জন্য একমাত্র বেইজিংই দায়ী বলে মনে করেন ট্রাম্প।