নাগোরনো-কারাবাখ

তৃতীয় যুদ্ধবিরতিও ভন্ডুল

প্রকাশ | ২৭ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় তৃতীয়বারের মতো যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছিল বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে যুদ্ধরত আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। কিন্তু সেটাও ভন্ডুল হয়ে গেছে। সেপ্টেম্বরের শেষদিকে সামরিক সংঘাত শুরুর পর এর আগে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় হওয়া দুটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিও লঙ্ঘন করেছিল দেশ দুটি। সংবাদসূত্র : ডয়েচে ভেলে গোলাগুলি চলেছে রোববার রাতেও। একে অপরকে দোষারোপ করছে বিবদমান দুই পক্ষ। এর মধ্যে সোমবার সকাল ৮টা থেকে তৃতীয়বার যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছিল আর্মেনিয়া-আজারবাইজান। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শুক্রবার থেকে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। রোববার শেষ পর্যন্ত তৃতীয়বার যুদ্ধবিরতির মানবিক সিদ্ধান্তে পৌঁছায় দুই পক্ষ। কিন্তু সোমবার সকাল থেকেই যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের অভিযোগ আনে দুই পক্ষই। এর জন্য আজেরি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার সকালে সব দায় চাপিয়েছেন আর্মেনিয়ার ওপর। অন্যদিকে, আর্মেনিয়ার প্রশাসন দায় চাপাচ্ছে আজারবাইজানের ওপর। প্রায় এক মাস ধরে নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে যুদ্ধে জড়িয়েছে দেশ দুটি। প্রথম থেকেই দুই দেশকে শান্তি বৈঠকে বসানোর চেষ্টা করছে রাশিয়া। দুইবার রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে উভয়পক্ষ রাজি হলেও তা কার্যকর হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই তা লঙ্ঘন করেছে দেশ দুটি। এর মধ্যে গত সপ্তাহে ফের দুই দেশকে আলোচনার টেবিলে বসায় মস্কো। গত বৃহস্পতিবার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বৈঠক করেন আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু তাতেও জট খোলেনি। এরপর প্রথমে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং পরে মার্কিন কূটনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করেন আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের প্রতিনিধিরা। দীর্ঘ বৈঠকের পর রোববার সন্ধ্যায় নতুন করে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্র, আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া এ নিয়ে যৌথ বিবৃতিও প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয় মানবিক কারণে সোমবার সকাল ৮টা থেকে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হচ্ছে। কিন্তু সোমবার সকালেই আজেরি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, তাদের শহর টারটারে হামলা চালিয়েছে আর্মেনিয়া। এরপর পাল্টা অভিযোগ তোলে আর্মেনিয়াও। তাদের দাবি, আজেরি সেনারাই প্রথম যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। তৃতীয়বার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে রোববার থেকেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছিল। রোববার সকালে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের একটি টুইটে সেই প্রশ্ন আরও গুরুত্ব পায়। তিনি লিখেছিলেন, নিজের দেশকে রক্ষা করার অধিকার সবার আছে। আজারবাইজান নিজের দেশকে শেষ দিন পর্যন্ত রক্ষা করবে। ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় যখন দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি সই হচ্ছে, তখন আজেরি সেনাবাহিনী জানায়, আর্মেনিয়ার যুদ্ধবিমান আজারবাইজানের সীমান্তে ঢুকে পড়ায় তা ধ্বংস করা হয়েছে। নাগোরনো-কারাবাখের সেনারা দাবি করেছেন, দিনভর ওই অঞ্চলের বিভিন্ন জনবসতি লক্ষ্য করে ক্রমাগত গোলাবর্ষণ করেছে আজারবাইজানের সামরিক বাহিনী। আজারবাইজান অবশ্য গোলাবর্ষণের কথা অস্বীকার করেছে। কিন্তু তাদের দাবি, দিনভর মর্টার এবং লাইট মেশিনগান নিয়ে যুদ্ধ চালিয়েছে সেনা।