যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

ট্রাম্প-বাইডেন ব্যবধান দ্রম্নত কমছে

২০১৬ সালকে ছাড়িয়ে গেছে আগাম ভোট এবার ভোটও বেশি পড়তে পারে

প্রকাশ | ২৯ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্প জো বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গত দুই সপ্তাহ আগে বড় দুই প্রার্থীর মধ্যে যে বিশাল ব্যবধান দেখা গিয়েছিল, দ্রম্নতই তা কমে আসছে। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বদলে যাচ্ছে সব জরিপের ফল। গত দুই দিনেই কয়েক সপ্তাহের জরিপে বড় পরিবর্তন ঘটেছে। সোমবার প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্যে এমন আভাস পাওয়া গেছে। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রধান দুই প্রার্থীর জনপ্রিয়তা নিয়ে এতদিনের জরিপ মাঠে মারা যেতে বসেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ক্রমান্বয়ে জো বাইডেনের কাছাকাছি পৌঁছাতে থাকায়। সোমবার পর্যন্ত টেক্সাসে বাইডেনকে ছাড়িয়ে গেছেন ট্রাম্প। জর্জিয়া, ফ্লোরিডা, মিশিগানেও কাছাকাছি এসেছেন ট্রাম্প। পেনসিলভেনিয়ায় বাইডেনের চেয়ে বেশি ভোট পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ট্রাম্প। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, এর ফলে গত নির্বাচনের মতো এবারের চূড়ান্ত নির্বাচনের পর সব হিসাব পাল্টে যেতে পারে। দক্ষিণাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যগুলো- জর্জিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডায় বাইডেনের খুব কাছাকাছি এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মিশিগানেও ট্রাম্পের অবস্থান ক্রমান্বয়ে দৃঢ় হচ্ছে। নিউইয়র্কের পার্শ্ববর্তী পেনসিলভেনিয়ায় নিজের জনপ্রিয়তা বাড়ায় ঘনঘন সমাবেশ করে যাচ্ছেন ট্রাম্প। জরিপকারী সংস্থাগুলো এখন আগাম ভোটের গতি-প্রকৃতি নজরে রেখেছে। কারণ, ২০১৬ সালের নির্বাচনে যত আগাম ভোট পড়েছিল, তার চেয়ে ১৩৩ শতাংশ বেশি ভোট পড়েছে সোমবার পর্যন্ত। এ পর্যন্ত ছয় কোটি ২৭ লাখ ভোট জমা হয়েছে ডাকযোগে এবং আগাম ভোট কেন্দ্রে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্কে বহু ভোটার আগাম ভোটকে নিরাপদ ভাবছেন। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ডাকযোগে ভোট এবং আগাম ভোটের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম কারচুপির আশঙ্কা করলেও তিনি নিজে যেমন আগাম ভোট দিয়েছেন, তেমনই ডেমোক্রেটদের সঙ্গে পালস্না দিয়ে রিপাবলিকানরাও লাইনে দাঁড়িয়েছেন। আবার ভোটের দিন (৩ নভেম্বর) আরও বেশি ভোটার লাইনে দাঁড়াতে পারেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে বলা হয়েছে, ২২ অক্টোবর পর্যন্ত আগাম ভোটকেন্দ্রে যত ভোটার এসেছিলেন, সেই সংখ্যা ২০১৬ সালের মোট সংখ্যার সমান। এরপর পার হয়েছে চার দিন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষ ভোট দিচ্ছেন ডেমোক্রেটদের ঘাঁটি নিউইয়র্কেও। অনেক আগে নাগরিকত্ব নেওয়া সত্ত্বেও যারা আগে ভোট কেন্দ্রে যেতে আগ্রহী ছিলেন না, তেমনি দক্ষিণ এশিয়ানদেরও শত শত ভোটারের লাইনে দেখা যাচ্ছে নিউইয়র্ক, পেনসিলভেনিয়া, ফ্লোরিডা, টেক্সাসে। ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী নানা পদক্ষেপে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকে বাইডেনের পক্ষে মাঠে নেমেছেন। বিশেষ করে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিসকে রানিংমেট করায় ডেমোক্রেটদের প্রতি এশিয়ানরাও ঝুঁকে পড়েছেন বলে সবার ধারণা। নির্বাচন বিশ্লেষকরা মনে করেন, আগাম ভোটের এ ধারা ১ নভেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে ২০১৬ সালের মোট ভোট ১৩ কোটি ৯০ লাখও ছাড়িয়ে যাবে। এদিকে, গত ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ১৩টি দোদুল্যমান রাজ্যে বাইডেন এগিয়ে ছিলেন। করোনায় বিপর্যস্ত মার্কিনিদের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে 'করোনা স্টিমুলাস বিল' নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ডেমোক্রেটদের নানা বাহানায় অতিষ্ঠ স্বল্প আয়ের মানুষ আর ছোট ও মাঝারি তহবিলের ব্যবসায়ীরা। বেকার ভাতার পরিমাণ নিয়ে দর-কষাকষিতে ডেমোক্রেটরা অনড় থাকায় এখন পর্যন্ত একটি পেনিও পাননি এসব মানুষ। ডেমোক্রেটরা অনড় থাকায় সেই আলোচনা ভেস্তে গেছে। এর দায় বর্তাচ্ছে ডেমোক্রেটদের ওপর। নির্বাচনে এর প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা।