করোনার বিস্তার

ফ্রান্সে দ্বিতীয় দফা লকডাউন ঘোষণা

জার্মানিও একই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে

প্রকাশ | ৩০ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ফ্রান্সে দ্বিতীয়বারের মতো দেশজুড়ে লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন। এই পর্যায়ের লকডাউন নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত চলবে। সংবাদসূত্র : বিবিসি ম্যাখোঁ বলেছেন, শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া নতুন লকডাউনের ক্ষেত্রে শুধু চিকিৎসা অথবা জরুরি কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হতে পারবে মানুষ। তবে রেস্তোরাঁ এবং পানশালা বন্ধ থাকলেও স্কুল ও কল-কারখানা খোলা থাকবে। এপ্রিলের পর ফ্রান্সে কোভিড সংক্রান্ত মৃতু্যর হার এখন সবচেয়ে বেশি। ফ্রান্সে মঙ্গলবার নতুন করে ৩৩ হাজার মানুষের মধ্যে কোভিড সংক্রমণ হয়েছে। ম্যাখোঁ বলেছেন, তার দেশ দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকির মধ্যে আছে, যা নিশ্চিতভাবে প্রথম দফার চেয়ে গুরুতর হবে। জার্মানিও তাদের দেশে জরুরি লকডাউন আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে জার্মানিতে লকডাউনের বিধিনিষেধের নিয়ম ফ্রান্সের তুলনায় কিছুটা শিথিল। এ ক্ষেত্রে ভ্রমণের ওপর জারি হবে নিষেধাজ্ঞা। বন্ধ করে দেয়া হবে পানশালা, প্রেক্ষাগৃহ, থিয়েটার, অবকাশযাপন ও শরীরচর্চা কেন্দ্র। রেস্তোরাঁ খোলা থাকবে, তবে তা থাকবে সীমিত সময়ের জন্য। বুধবার টেলিভিশনে প্রচার হওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ বলেন, মহামারির মধ্যে নিমজ্জিত হওয়া ঠেকাতে ফ্রান্সের এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, ভাইরাসটি এমন গতিতে ছড়াচ্ছে, যা সবচেয়ে হতাশাবাদী মানুষটিও চিন্তা করতে পারেননি। ম্যাখোঁ জানিয়েছেন, নুতন আইন অনুযায়ী, ঘরের বাইরে যাওয়ার জন্য নাগরিকদের একটি ফরম পূরণ করতে হবে। যেকোনো ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে তিনি জানিয়েছেন, সরকারি অফিস ও কারখানা খোলা থাকবে এবং অর্থনীতি যেন থেমে না পড়ে, সেই বিষয়ে জোর দিয়েছেন তিনি। ফরাসি প্রেসিডেন্ট আশা প্রকাশ করেন, বড়দিন উপলক্ষে পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হতে পারবেন। নিষেধাজ্ঞা ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এবং প্রতি দুই সপ্তাহ অন্তর এই নিষেধাজ্ঞার নিয়মকানুন পর্যবেক্ষণ করা হবে। উলেস্নখ্য, ফ্রান্সের হাসপাতালগুলোর অন্তত অর্ধেক আসন এই মুহূর্তে কোভিড রোগীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফা বিস্তারে ফরাসি সরকার বেশ বিস্মিতই হয়েছে। প্রতিদিন সেখানে আনুমানিক ৫০ হাজার নতুন সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই সংখ্যা সংক্রমণের আসল সংখ্যার চেয়ে অনেক কম। প্যারিসে হাসপাতালের জরুরি আসনের ৭০ শতাংশ আসনে বর্তমানে কোভিড রোগীরা রয়েছে। দ্বিতীয় দফা লকডাউন জারি করায় ফ্রান্সে ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিশ্চিতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে- বিশেষ করে বিনোদন এবং ইভেন্টস সংক্রান্ত ব্যবসার ক্ষেত্রে। প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ অবশ্য ফরাসি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করার আশ্বাস দিলেও এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাননি। ফ্রান্সের সরকারের অনুমান, ২০২০ সালে মোট ১০ শতাংশ জিডিপি হ্রাস হবে। গত কয়েক মাসে ফরাসি অর্থনীতির অবস্থা কিছুটা ভালো হলেও এখন মনে হচ্ছে, বছরের শেষে নিশ্চিতভাবেই অর্থনীতি আরও খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে।