জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, রুপির দরপতনসহ বিভিন্ন ইস্যু

ভারতজুড়ে ২১ দলের বন্ধ পালিত

মোদি সরকার মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করেছে :রাহুল

প্রকাশ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
দিল্লির রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়ালের সমাবেশ মা সোনিয়া ও মনমোহন সিংয়ের পাশে রাহুল গান্ধী
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও ডলারের বিপরীতে রুপির দরপতন, কৃষকের দুরবস্থা, রাফাল যুদ্ধবিমান থেকে নোট বাতিল, বিভিন্ন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী মোদির নীরবতা থেকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে সোমবার ভারতজুড়ে বন্ধ পালন করেছে দেশটির অন্তত ২১টি বিরোধীদল। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধীদলগুলোর এই বন্ধ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে পালিত হয়েছে। এদিন ভারতজুড়ে বিক্ষিপ্ত সংঘষের্র ঘটনাও ঘটে। সোমবার সকালে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী রাজধানী দিল্লিতে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশে মোদির উদ্দেশে তোপ দেগেছেন। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ দিল্লির ক্ষমতাসীন আম আদমি পাটির্ (আপ) বন্ধে যোগ না দিলেও প্রতিবাদ মিছিলে তাদের এক নেতাকে পাঠায়। শারদ পাওয়ার, এম কে স্ট্যালিনের মতো ভারতের শীষর্স্থানীয় বিরোধীদলীয় নেতারা ও বাম দলগুলোর নেতারা বন্ধের প্রতি সমথর্ন জানান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস বন্ধে যোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কংগ্রেসের মিত্র কণার্টক রাজ্যের ক্ষমতাসীন জনতা দল এই বন্ধে সমথর্ন জানায়। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পাট্টনায়েক বন্ধের প্রতি সমথর্ন দিতে রাজি না হলেও তার রাজ্যের স্কুলগুলো বন্ধ ছিল। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়েছে, যে বিষয়গুলোর প্রতিবাদে বন্ধ ডাকা হয়েছিল, সেই ইস্যুগুলোতে তাদেরও সমথর্ন আছে, কিন্তু দলীয়প্রধান ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতার নীতি অনুযায়ী রাজ্যে কোনো ধরনের ধমর্ঘট পালনের বিরুদ্ধে তারা। তামিলনাড়–তে ডিএমকে দলীয় নেতা এম কে স্ট্যালিন বলেন, ডলারের বিপরীতে রুপির দরপতন বা জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় সরকার কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। মোদি সরকার বিভেদ সৃষ্টি করেছে : রাহুল নিজ দলের ডাকা বন্ধে ও প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দিতে এদিন দিল্লির রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়ালে উপস্থিত হন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। কৈলাস পবর্ত ও মানস সরোবরে তীথর্যাত্রা থেকে ফিরে আসার পর এখানেই প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে এলেন তিনি। বন?্?ধের সমথের্ন ডাকা এই সমাবেশে মা সোনিয়া গান্ধী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংসহ বিরোধী নেতাদের পাশে বসিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিকে একের পর এক তোপ দেগেছেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, ‘চার বছর আগে মোদি সরকারকে বিশ্বাস করেছিলেন দেশবাসী। কিন্তু এখন সেই ভুল ভেঙেছে। মানুষ বুঝতে পেরেছে, গত চার বছরে মোদি সরকার মানুষে-মানুষে বিভেদ সৃষ্টি ছাড়া আর কিছু করেনি। নোট বাতিল করেছে, কিন্তু তাতে কালো টাকা উদ্ধার দূরে থাক, বরং ব্যথর্ হয়েছে সরকার। আর তাদের সিদ্ধান্তে অকারণ ভোগান্তির শিকার হয়েছেন সাধারণ জনতা। মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে দুনীির্ত এবং প্রধানমন্ত্রী মোদির নীরব থাকায় একহাত নিয়ে রাহুলের কটাক্ষ, ‘কে জানে কোন ঘোরের মধ্যে থাকেন উনি। দেশে-বিদেশে যেখানে যান, মুখে খই ফোটে। কিন্তু পেট্রলের দাম হু হু করে বাড়ছে, কৃষক-সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে অথচ সেসব নিয়ে তিনি নীরব। আবার এক ব্যবসায়ী বন্ধুকে ৪৫ হাজার কোটি রুপি পাইয়ে দিয়েছেন, পালাের্মন্টে তা নিয়ে প্রশ্ন করলেও উত্তর দিতে পারেন না তিনি।’ এই সমাবেশেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেন, ‘চার বছরে মোদি সরকার সাধারণ মানুষের পক্ষে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। উল্টো একের পর এক হঠকারী সিদ্ধান্তে নাজেহাল হয়েছে সাধারণ মানুষ। এই সরকারের পরিবতর্ন অবশ্যম্ভাবী।’