আন্তজাির্তক অপরাধ আদালতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

এই ‘অবৈধ’ আদালতের হাত থেকে জনগণ এবং বন্ধুদের রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত আফগানিস্তান নিয়ে আইসিসি আইনি পদক্ষেপ শুরু করলে ট্রাম্প প্রশাসন কড়া জবাব দেবে

প্রকাশ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
হেগে অবস্থিত আন্তজাির্তক অপরাধ আদালত
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আন্তজাির্তক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব দেখাতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি হুমকি দিয়ে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারা আফগানিস্তানে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি-না, তা যদি আইসিসি তদন্ত করতে যায়, তাহলে তারা আদালতের বিচারকের ওপর অবরোধ আরোপ করবে। পাশাপাশি এই ‘অবৈধ’ আদালতের হাত থেকে মাকির্ন জনগণ এবং বন্ধু রাষ্ট্রদের রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। সংবাদসূত্র : রয়টাসর্ স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে ওয়াশিংটনে রক্ষণশীল সংগঠন ‘ফেডারিস্ট সোসাইটি’র উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে এ সংক্রান্ত ঘোষণা দেয়ার কথা মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের। ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে যোগদানের পর থেকে এটিই হবে তার প্রথম গুরুত্বপূণর্ বক্তৃতা। ফেডারিস্ট সোসাইটির জন্য বোল্টনের যে ভাষণ দেয়ার কথা তার একটি অনুলিপি পেঁৗছেছে মিডিয়ার হাতে। সেখানে দেখা যায়, বোল্টনের বলার কথা, ‘এই অবৈধ আদালতের যেকোনো অন্যায় বিচারের হাত থেকে আমাদের জনগণ এবং আমাদের বন্ধুদের রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।’ বোল্টন জানাবেন, মাকির্ন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওয়াশিংটনে ‘প্যালেস্টাইন লিবারেশন অগার্নাইজেশন’র (পিএলও) অফিস বন্ধ ঘোষণা করবে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিন আইসিসির তদন্তের চেষ্টা করতে পারে এই আশঙ্কায় এ পদক্ষেপ নেয়া হবে। ওয়াশিংটনে পিএলও অফিস এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। বোল্টনের খসড়া ভাষণে লেখা আছে, ‘আমরা সবসময় আমাদের বন্ধু, মৈত্রী ও ইসরাইলের পাশে দঁাড়াব।’ খসড়া ভাষণে দেখা যায়, আফগানিস্তানে যুদ্ধকালে যুক্তরাষ্ট্রের সেবাদানকারী সদস্য, কিংবা গোয়েন্দা ব্যক্তিদের দ্বারা কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি-না, তা তদন্ত করার জন্য যদি আইসিসি কোনো আইনি পদক্ষেপ শুরু করে, তবে ট্রাম্প প্রশাসন ‘কড়া জবাব দেবে’। এ ধরনের তদন্ত কাযর্ক্রম শুরু হলে ট্রাম্প প্রশাসন আইসিসির বিচারক ও প্রসিকিউটরদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, যুক্তরাষ্ট্রের আথির্ক প্রক্রিয়ায় আইসিসির কোনো তহবিল থাকলে তাতে অবরোধ এবং আদালত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার বিচার করা হবে। খড়সা অনুসারে বোল্টন ভাষণে বলবেন, ‘আমরা আইসিসির সঙ্গে সহযোগিতা করব না। আমরা তাদেরকে কোনো সাহায্য দেব না। আমরা আইসিসিতে যোগ দেব না। আমরা আইসিসিকে নিজে নিজে মরতে দেব। তা ছাড়া, আদালতের সকল অভিপ্রায় ও উদ্দেশের জন্য আইসিসি এরই মধ্যে আমাদের কাছে মৃত।’ ১৯৯৭ সালের ১৭ জুলাই ‘রোম স্ট্যাচু’ গৃহীত হয়। এ নীতিমালা অনুযায়ী আন্তজাির্তক আদালত গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে রোম স্ট্যাচু কাযর্কর করতে ১২০টি দেশের স্বীকৃতির প্রয়োজন ছিল। ১২০ দেশের স্বীকৃতির পর ২০০২ সালের ১ জুলাই থেকে আন্তজাির্তক অপরাধ আদালত তার কাযর্ক্রম শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্র এ আদালতকে স্বীকৃতি দেয়নি। সাবেক মাকির্ন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম নীতিমালায় স্বাক্ষর করলেও প্রেসিডেন্ট জজর্ বুশ তা প্রত্যাহার করে নেন। এই আদালত সাধারণত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ীদের অভিযুক্ত করে থাকে। উল্লেখ্য, নাইন-ইলেভেনের হামলার পর ২০০১ সালে তৎকালীন মাকির্ন প্রেসিডেন্ট জজর্ ডাবিøউ বুশের নিদেের্শ আফগানিস্তানে মাকির্ন অভিযান শুরু হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানে তালেবানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মূল যুদ্ধ অভিযান শেষ হয় ২০১৪ সালে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনী এখনো আফগান সেনাদের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।