যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হেনেছে হারিকেন ‘ফ্লোরেন্স’

ঝড়ে বহু লোক মারা যেতে পারে বড় ধরনের বন্যা হতে পারে

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের পূবর্ উপক‚লে বৃহস্পতিবার রাতে ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার বেগে দমকা বাতাস এবং মুষলধারে বৃষ্টি নিয়ে আঘাত হেনেছে দুবর্ল হয়ে যাওয়া ১ মাত্রার ঘূণির্ঝড় ফ্লোরেন্স। এই ঝড়ের প্রভাবে উত্তর ও দক্ষিণ ক্যারোলিনায় ভারী বষর্ণ এবং বন্যার সৃষ্টি হতে পারে। ফ্লোরেন্স আঘাত হানার আগেই রেডক্রসের আশ্রয় শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেয় উপক‚লীয় এলাকার মানুষরা। ছবিটি উত্তর ক্যারোলিনার গ্রান্টসবোরো থেকে তোলা Ñরয়টাসর্ অনলাইন
যুক্তরাষ্ট্রের পূবর্ উপক‚লে আঘাত হেনেছে হারিকেন ‘ফ্লোরেন্স’। দেশটির কমর্কতার্রা সতকর্ করে দিয়ে বলেছেন, হারিকেন ফ্লোরেন্সের প্রভাবে উত্তর ও দক্ষিণ ক্যারোলিনায় প্রাণঘাতী ঝোড়ো ঢেউ আঘাত হানতে পারে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার। ঝড়ের হাত থেকে বঁাচতে উপক‚লবতীর্ বিমানবন্দরগুলো বন্ধ করে দেয়ায় এরই মধ্যে প্রায় দেড় হাজার ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে। সাউথ ক্যারোলাইনার মাটর্ল বিচ এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত ৭টা থেকে সান্ধ্য আইন জারি হয়েছে। সংবাদসূত্র : বিবিসি এরই মধ্যে ওইসব অঞ্চলের পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করেছে। প্রায় এক লাখ বাড়ির বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর হারিকেনটির মাত্রা ১-এ নামিয়ে আনলেও ‘প্রাণ-সংহারী’ এই ঝড় নথর্ ও সাউথ ক্যারোলিনা এবং ভাজিির্নয়াকে লÐভÐ করে দিতে পারে। ঝড়ের ফলে ১০ থেকে ৩০ লাখ বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ কাটা পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংযোগ পুনঃস্থাপনে কোথাও কোথাও সপ্তাহখানেকও লেগে যেতে পারে। কমর্কতার্রা সতকর্ করে দিয়ে বলেছেন, ঝড়ের ফলে বহু লোক মারা যেতে পারে এবং এটি বড় ধরনের বন্যা ডেকে আনতে পারে। পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করায় উত্তর ক্যারোলিনা, দক্ষিণ ক্যারোলিনা ও ভাজিির্নয়ার প্রায় ১০ লাখ লোককে অন্যখানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন ছবিতে আশ্রয়কেন্দ্রের বারান্দায় কম্বল, বাতাসে ফুলানো যায় এমন ম্যাট্রেস ও বিছানা নিয়ে মানুষজনকে ভিড় করতে দেখা গেছে। নথর্ ও সাউথ ক্যারোলিনায় আছড়ে পড়ার পর ঝড়টি ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার বেগের বাতাস নিয়ে উপক‚ল থেকে ভেতরের দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে কমর্কতার্রা সতকর্ করেছেন। বৃহস্পতিবার মাকির্ন পূবর্ উপক‚লে দমকা বাতাসের ঝাপটা ক্রমাগতভাবে বেড়েছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করায় এরই মধ্যে এক লাখের বেশি বাড়িঘরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ঝড়ের কারণে যে ‘ভয়াবহ’ বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে, তা ব্যাপক প্রাণহানি ঘটাতে পারে বলেও অনুমান জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগের কমর্কতাের্দর। নথর্ ক্যারোলাইনার কিছু এলাকায় কয়েক ঘণ্টায় এক ফুটের মতো বৃষ্টি রেকডর্ করা হয়েছে। সমুদ্রের পানির উচ্চতার সঙ্গে সঙ্গে উপক‚লে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের তীব্রতাও বাড়ছে। বাতাসের বেগ আগের তুলনায় কিছুটা কমে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার ঘূণির্ঝড় ফ্লোরেন্সের তীব্রতার মাত্রা ১-এ নামিয়ে আনলেও প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ের তীব্রতার কারণে ফ্লোরেন্স এখনো যথেষ্ট শক্তিশালী বলেও হুঁশিয়ার করেছে তারা। ঝড়টির আওতায় থাকা এলাকাগুলোর নদী ও এর আশপাশ এবং নিচু এলাকার লোকজনের ঝুঁকিই এখন সবচেয়ে বেশি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রশাসক ব্রæক লং। ঝড়ের কারণে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার পযর্ন্ত পূবর্ উপক‚লে দমকা বাতাস ও বৃষ্টি হতে পারে বলে পূবার্ভাসে জানিয়েছে মাকির্ন আবহাওয়া অধিদপ্তর। কিছু কিছু এলাকার নদীর পানির উচ্চতা চার মিটার পযর্ন্ত বেড়ে যেতে পারে বলেও সতকর্ করা হয়েছে। অনেক নদীর পানি ‘উল্টোদিকে’ প্রবাহিত হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। হারিকেন ফ্লোরেন্স মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য এলাকা থেকে জরুরি বিভাগের কমীের্দর পূবর্ উপক‚লের রাজ্যগুলোতে নিয়ে আসা হয়েছে। জলাবদ্ধ নাগরিকদের উদ্ধারে প্রস্তুত রয়েছে কোস্ট গাডের্র শ্যালো-ওয়াটার রেসপন্স বোট।