চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে কোনো চাপ নেই :ট্রাম্প

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে ওয়াশিংটন কোনো ধরনের চাপ অনুভব করছে না বলে মন্তব্য করেছেন মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বেইজিংয়ের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের আগে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরুর সম্ভাবনার মধ্যেই ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। সংবাদসূত্র : বিবিসি মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বৃহস্পতিবার টুইটারে লেখেন, ‘চীনের সঙ্গে চুক্তি করতে আমাদের ওপর কোনো চাপ নেই, আমাদের সঙ্গে চুক্তি করতে তাদের ওপর চাপ আছে। আমাদের বাজার বাড়ছে, তাদেরটা নামছে।’ চলতি বছর বিশ্বের দুই বৃহত্তম অথর্নীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একে অপরের ৫০ বিলিয়ন (পঁাচ হাজার কোটি) ডলার মূল্যের পণ্যে শুল্ক বসিয়ে ‘বাণিজ্য যুদ্ধের’ সূচনা করে; যার মাধ্যমে দশকের পর দশক ধরে দেশ দুটির মধ্যে যে মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা বহাল ছিল, এতে ছেদ ঘটে। ওয়াশিংটন আর বেইজিংয়ের এই পাল্টাপাল্টি শুল্ক দুই দেশের অথর্নীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি অটোমোবাইলসহ বিভিন্ন খাতের অসংখ্য কোম্পানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলেও ভাষ্য পযের্বক্ষকদের। গত সপ্তাহে দেয়া হুশিয়ারিতে ট্রাম্প আরও ২০০ বিলিয়ন (২০ হাজার কোটি) ডলার মূল্যের চীনা পণ্যে ‘শিগগিরই’ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন। এর বাইরে আরও ২৬৭ বিলিয়ন (২৬ হাজার ৭০০) ডলার মূল্যের পণ্যে স্বল্প সময়ের ব্যবধানেই শুল্ক বসানো হবে, বলেছিলেন তিনি। ট্রাম্প তার কথা রাখলে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা চীনের প্রায় সব পণ্যই কাযর্ত নতুন শুল্কের আওতায় পড়তে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। আর যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করলে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই সতকর্ করেছে বেইজিং। দুই দেশের মধ্যে এই বাণিজ্য-সংঘাত বন্ধে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলেও মাকির্ন অথর্মন্ত্রী স্টিভেন ম্নুচিন দ্রæতই চীনা প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন বলে বুধবার ‘ফক্স নিউজ’কে বলেছেন হোয়াইট হাউসের অথৈর্নতিক উপদেষ্টা ল্যারি কুডলো। বৃহস্পতিবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, দুই দেশ আলোচনার বিস্তারিত বিষয় নিয়ে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, চীনের অন্যায্য বাণিজ্যনীতির প্রতিক্রিয়াতেই দেশটি থেকে আমদানি করা পণ্যে শুল্ক বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে ওয়াশিংটন। বেইজিংয়ের বাজে নীতির কারণেই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে বলে দায় দিয়েছিলেন ট্রাম্প। মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তি দেখিয়ে বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ও মেধাস্বত্ব অবৈধভাবে চীনে স্থানান্তর ঠেকাতে শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছিল। এটি মাকির্ন চাকরি বাজারকেও সুরক্ষিত রাখবে।’ তবে চীন-মাকির্ন বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে বিশ্ব অথর্নীতিতে আরেকটি মন্দার আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের অথর্নীতি এখন শক্তিশালী পযাের্য় রয়েছে, এরপরও ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত পরিবতর্ন করতে পারেন। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, পাল্টা শুল্কের হাত থেকে বঁাচতে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তাদের ব্যবসা নিয়ে যেতে পারেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বাণিজ্য যুদ্ধ চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটি পযার্য়ক্রমে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।