ইদলিবে সন্ত্রাসী তৎপরতায় উদ্বিগ্ন পুতিন

সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ

‘রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারসহ বিভিন্ন উসকানি দিচ্ছে’ বাশারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন
বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশে উগ্র সন্ত্রাসীদের তৎপরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ একথা জানিয়েছে। এদিকে, ইদলিবে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর ইদলিবের মারাত আল-নুম্যান শহরে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে অন্তত ২৫ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছে বলে জানা গেছে। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা রুশ ‘আগ্রাসন’র বিরুদ্ধেও ¯েøাগান দিয়েছে। সংবাদসূত্র : আল-জাজিরা, পাসর্ টুডে, রিয়া নিউজ সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শুক্রবার রুশ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে সিরিয়ার ইদলিব পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিন আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘সব সন্ত্রাসী এখন ওই প্রদেশের ‘নিরাপদ অঞ্চলে’ জড়ো হয়েছে এবং তারা যুদ্ধবিরতিতে বিঘœ সৃষ্টির পঁায়তারা চালাচ্ছে। এ ছাড়া, সন্ত্রাসীরা রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারসহ নানা ধরনের উসকানি দিচ্ছে। সিরিয়ার বেশিরভাগ এলাকা সন্ত্রাসীদের হাত থেকে উদ্ধার করা হলেও ইদলিব প্রদেশে সন্ত্রাসীদের শক্ত অবস্থান রয়েছে। প্রদেশের বেসামরিক লোকজনকে এক রকমের পণবন্দি করে রেখেছে তারা। সেখানে সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সিরিয়া ও মিত্র সেনারা। এরই মধ্যে রাশিয়া সেখানে বিমান হামলা চালিয়েছে। এসব হামলা থেকে বঁাচতে এবং আন্তজাির্তক সমাজের সহানুভ‚তি লাভের চেষ্টায় সন্ত্রাসীরা রাসায়নিক হামলার মতো জঘন্য কাজ করে তার দোষ চাপানোর ষড়যন্ত্র করছে সরকারের ওপর; এমন অভিযোগ সিরিয়া ও রাশিয়ার। দেশ দুটি বলেছে, এ জন্য সন্ত্রাসীরা ২২টি শিশু ও তাদের স্বজনকে অপহরণ করেছে। সিরিয়ার সরকারি বাতার্ সংস্থা ‘সানা’ জানিয়েছে, এসব শিশু ও তাদের স্বজনদের ওপর রাসায়নিক হামলা চালাতে পারে সন্ত্রাসীরা। এরআগে, রাশিয়া সতকর্ করে দিয়ে বলে, সিরিয়ার ওপর নতুন করে হামলা চালানোর জন্য বিশ্ব জনমত গঠন করার চেষ্টা করছে মাকির্ন সরকার। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বৃহস্পতিবার মস্কোয় এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, মাকির্ন সরকার গণমাধ্যমসহ অন্যান্য উপাদান ব্যবহার করে বিশ্বের মানুষকে একথা বোঝানোর চেষ্টা করছে, সিরিয়ায় আগ্রাসন জরুরি হয়ে পড়েছে। জাখারোভা সিরিয়ার ইদলিবে বিপুলসংখ্যক সন্ত্রাসীর অবস্থানের কথা উল্লেখ করে সেখানকার আসন্ন সংঘাতের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ইদলিবের সন্ত্রাসীরা সেখানে ভুয়া রাসায়নিক হামলার ছবি ও ভিডিও প্রচার করতে পারে বলে ব্যাপকভাবে সতকর্ করে দেয়ার পরও তারা এই ন্যক্কারজনক কাজের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মারিয়া জাখারোভা বলেন, সিরিয়া থেকে সন্ত্রাসীরা নিমূর্ল হয়ে যাচ্ছে ভেবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তারা সন্ত্রাসীদের টিকিয়ে রেখে সিরিয়ার সংঘষের্ক দীঘর্কাল ধরে অব্যাহত রাখতে চায়। উল্লেখ্য, সিরিয়ার সেনাবাহিনী দেশটিতে তৎপর সন্ত্রাসীদের সবের্শষ বড় ঘঁাটি ইদলিব প্রদেশে বড় ধনের অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অভিযানে বিমান সহায়তা দেবে রাশিয়া এবং ইরানের সামরিক উপদেষ্টারা সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে পরামশর্ দিয়ে সাহায্য করবেন। ইদলিবে আসাদবিরোধী বিক্ষোভ এদিকে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে শুক্রবার ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে ইদলিবের অন্তত ২৫ হাজার মানুষ। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা রাশিয়ার বিরুদ্ধেও ¯েøাগান দিয়েছে। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এই অঞ্চলে মিত্র রাশিয়া ও ইরানের সহযোগিতায় আসাদ বাহিনী যে অভিযানের পরিকল্পনা করছেম তাতে এই অঞ্চলে মানবিক বিপযের্য়র আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। হামলা নয়, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে তুরস্কের প্রস্তাব রাশিয়া-ইরানের প্রত্যাখ্যানের পর উৎকণ্ঠা বেড়েছে। এই অঞ্চলে বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে তুরস্ক এবং বাশার সরকারকে ইরান ও রাশিয়া সমথর্ন দিয়ে আসছে। আর এই অবস্থার মধ্যেই এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হলো। বিক্ষোভে অংশ নেয়া ৩৬ বছর বয়সী মাহমুদ হারকাউই বলেন, ‘পুরো বিশ্বকে একটা বাতার্ দিতে চাই যে, এখানে আমরা নিপীড়িত।’