চুক্তি না করার হুমকি থেরেসার

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে নিজ দলের বিদ্রোহীদের সতকর্ করে দিয়ে বলেছেন, তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে তার প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট চুক্তি মেনে না নিলে আর কোনো চুক্তিই হবে না। এমনটা হলে আন্তজাির্তক মুদ্রা তহবিলের অনুমান অনুসারে যুক্তরাজ্য অথৈর্নতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যুক্তরাজ্যের রাজনীতি যখন ব্রেক্সিট ইস্যুতে সরগরম হয়ে উঠেছে, তখনই থেরেসা এই হুমকি দিলেন। সংবাদসূত্র : রয়টাসর্, বিবিসি যুক্তরাজ্য আগামী বছরের ২৯ মাচর্ ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। তবে এখনো বিষয়টি নিয়ে ইইউ’র সঙ্গে কোনো চুক্তিতে পেঁৗছাতে পারেনি দেশটি। এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পাটির্র বেশ কয়েকজন সদস্য বলেছেন, তারা থেরেসা মে উত্থাপিত চুক্তির বিরুদ্ধে ভোট দেবেন। একই ঘোষণা দিয়েছে বিরোধী লেবার পাটির্ও। এসব হুমকির প্রতিক্রিয়ায় এই পাল্টা হুমকি দিলেন থেরেসা। ‘বিবিসি টিভি’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে মে বলেন, ‘আমার মতে ওই চুক্তির বিকল্প হলো কোনো চুক্তিই না করা।’ থেরেসা মে’র সরকার ও তার ব্রেক্সিট পরিকল্পনার ভাগ্যই নিয়েই এখন সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ চুক্তিটি যুক্তরাজ্যের পালাের্মন্টের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অব কমন্সে’ অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় ৩২০টি ভোট তিনি পাবেন কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে থেরেসা মে বলেছেন, যদি তিনি চুক্তিটি উপস্থাপন করেন, তাহলে তা একতরফাভাবে পাস হবে। এদিকে, ব্রেক্সিট ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের কনজারভেটিভ পাটির্র মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির ব্রেক্সিট-বিষয়ক সাবেক মন্ত্রী স্টিভ বেকার মন্তব্য করেছেন, যদি থেরেসা মে তার তথাকথিত ‘চেকাসর্’ (অপেক্ষাকৃত নরম) সমঝোতা নিয়ে গেঁা ধরে বসে থাকেন, তাহলে দল বিপযের্য়র মুখে পড়তে পারে। উল্লেখ্য, থেরেসার ব্রেক্সিট ইস্যুতে পদত্যাগ করেছিলেন স্টিভ বেকার। বেকার বলেন, এ ক্ষেত্রে দলের ৮০ জন বা তার চেয়ে বেশি এমপি ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বেকার বলেন, তিনি নেতৃত্ব বদলের কোনো পরামশর্ দিচ্ছেন না। কিন্তু বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া দলের চার দিনব্যাপী সম্মেলনে ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে যাচ্ছেন থেরেসা। এর আগে সাবেক ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছিলেন, থেরেসা মের ব্রেক্সিট পরিকল্পনাটি একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এতে তার দলের মধ্যেই বিরোধী পক্ষ তৈরি হয়েছে। কিছু ব্যবসায়ী বলেছেন, কোনো চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট হলে বড় ধরনের জটিলতা বাড়বে। উদাহরণস্বরূপ তারা বলেন, যুক্তরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে ডোবার বন্দরের কাস্টমসে যদি প্রতিটি লরিতে দুই মিনিট করে সময় লাগে, তাহলে একদিনের মধ্যেই অন্য প্রান্তে ১৪ মাইল লম্বা যানজট লেগে যাবে। প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে যে ‘অচলাবস্থা’ সৃষ্টি হয়েছে তার সমালোচনা করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিচ্ছেদ প্রশ্নে দ্বিতীয়বার গণভোট আয়োজনের আহŸান জানিয়েছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। প্রধানমন্ত্রী থেরেসা বরাবরই দ্বিতীয় গণভোটের সম্ভাবনা নাকচ করে আসছেন। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে এখন ব্রেক্সিটপন্থীদের সংখ্যা কম। উল্টো বেড়ে গেছে বিরোধীদের সংখ্যা। ওই জরিপের ফলকে উদ্ধৃত করে ‘দ্য গাডির্য়ান’ জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে যাওয়ার প্রশ্নে যেসব নিবার্চনী আসনের ভোটাররা সব থেকে বেশি সরব ছিলেন, সেগুলোর মধ্যে শতাধিক আসনের ভোটাররা এখন মনে করছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে থেকে যাওয়াটাই ভালো।