কিমের সঙ্গে বৈঠক শেষে মুন

কোরীয় উপদ্বীপ হবে শান্তির ভ‚মি

ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা অঞ্চল স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে রাজি উত্তর কোরিয়া মূল পারমাণবিক স্থাপনাও ভেঙে ফেলতে রাজি

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বৈঠক শেষে মুন জায়ে-ইন ও কিম জং-উন
কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত ও পারমাণবিক হুমকিবিহীন ‘শান্তির ভ‚মিতে’ পরিণত করতে একমত হয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন। বুধবার উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন দুই কোরিয়ার নেতারা। এ লক্ষ্য সাধনে ‘দ্রæত পদক্ষেপ’ নেয়ারও প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন তারা। এদিকে, এক টুইটে কিমের এসব প্রতিশ্রæতিকে ‘দারুণ উদ্দীপক’ বলে অভিহিত করেছেন ট্রাম্প। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টাসর্, এএফপি অনলাইন চলতি বছরের এপ্রিলে উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন সীমান্তবতীর্ পানমুনজামে এক ঐতিহাসিক বৈঠকে মিলিত হন। ওই বৈঠকেই পরবতীর্ একটি বৈঠকে মিলিত হওয়ার ব্যাপারে সম্মত হন দুই নেতা। সিদ্ধান্ত হয়, শরতে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে উন সস্ত্রীক তিন দিনের সফরে উত্তর কোরিয়ায় যান। এ সময় উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং আন্তজাির্তক বিমানবন্দরে মুনকে জড়িয়ে ধরে স্বাগত জানান উন। দুই কোরিয়ার মধ্যে সম্পকের্র উন্নয়ন ও উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কমর্সূচি নিয়ে পিয়ংইয়ং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে আলোচনা আবারও শুরু করার উদ্দেশ্য নিয়ে চলতি বছরে তৃতীয় শীষর্ বৈঠকে মিলিত হয়েছেন দুই কোরিয়ার এই দুই নেতা। মঙ্গলবারই দুই নেতার বৈঠকের পর কিম বলেন, কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি অজের্নর জন্য নিরস্ত্রীকরণে একমত হওয়াটা অন্যতম গুরুত্বপূণর্ পদক্ষেপ। এই বৈঠকের আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূণর্ই ছিল নিরস্ত্রীকরণ ইস্যুটি। বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও অঙ্গীকার করেছে পিয়ংইয়ং। মুন বলেন, কিম জং-উন তোচ্যং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা অঞ্চল স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে রাজি হয়েছেন। আর এটা করার সময় সংশ্লিষ্ট অন্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। মুন বলেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম বিদেশি বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে তাদের প্রধান ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনাগুলো ‘স্থায়ীভাবে’ বিলুপ্ত করার বিষয়ে রাজি হয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ‘অনুক‚ল পদক্ষেপ’ নিলে তারা তাদের মূল পারমাণবিক কমপ্লেক্স বন্ধ করে দিতেও রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট মুন আরও বলেন, উত্তর কোরিয়া অতিরিক্ত আরও পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে ‘তৈরি’ আছে বলে জানিয়েছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পরিপূরক কোনো পদক্ষেপ নেয়া হলে ইয়ংবিয়নে তাদের মূল পারমাণবিক স্থাপনা স্থায়ীভাবে ভেঙে ফেলতেও রাজি আছে উত্তর কোরিয়া। মুনের সঙ্গে আগের দুই বৈঠকে ও জুনে সিঙ্গাপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ‘কোরীয় উপদ্বীপের সম্পূণর্ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের’ লক্ষ্যে কাজ করার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন কিম। নিকট ভবিষ্যতে উন সিউল সফরে যাবেন বলেও জানিয়েছেন কিম। চলতি বছরের শেষ দিকে সিউলে কিমের সফরটি হতে পারে বলে প্রত্যাশা করছেন মুন। এটি হলে তা দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানীতে উত্তর কোরিয়ার কোনো নেতার প্রথম সফর হবে। উত্তর কোরিয়া বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন পম্পেও এদিকে, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন মাকির্ন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। পিয়ংইয়ংয়ের ওপর চাপ বজায় রাখতে আন্তজাির্তক সম্প্রদায়ের প্রতি আহŸান জানানো হবে ওই বৈঠকে। জাতিসংঘের বাষির্ক সাধারণ অধিবেশনের ফঁাকে শীষর্ ক‚টনীতিকদের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মাকির্ন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নারী মুখপাত্র হিদার নোয়াটর্ বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ইউএনএসসির মন্ত্রী পযাের্য়র বৈঠকে সভাপতির দায়িত্ব পালনের আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। ওই বৈঠকে তিনি উত্তর কোরিয়ার সম্পূণর্ যাচাইযোগ্য চ‚ড়ান্ত নিরস্ত্রীকরণের ব্যাপারে আমাদের প্রচেষ্টার বিষয় নিরাপত্তা পরিষদকে অবহিত করবেন এবং সকল সদস্য দেশের কাছে কঠোর অবরোধ বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরবেন।’ পম্পেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর চাপ বজায় রেখেছেন। তিনি সতকর্ করে বলেছেন, মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের মধ্যে গত জুনে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর থেকেই এ ক্ষেত্রে আন্তজাির্তক চাপ শিথিল হয়ে পড়েছে।