কমর্স্থলে ঘুম? নৈব নৈব চ! ব্যতিক্রম জাপানে

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
অফিসে কাজের ফঁাকে একটু ঘুমিয়ে নিলে মন্দ হয় না। কিন্তু আপনার বস যদি তা দেখে ফেলে, ভাগ্য ভালো হলে একটু গালমন্দ শুনতে হবে। নইলে বস বদ মেজাজের বা খিটখিটে স্বভাবের হলে মাসের মাইনে থেকে জরিমানা কষা, কখনো কখনো আপনার চাকরি হারানোর কারণও হতে পারে ‘সবর্নাশা’ এই ঘুম। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই কমর্স্থলে ঘুমানো কেবল অস্বস্তিরই নয়, এটাকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু জাপানেই কেবল ব্যতিক্রম। কেউ চেয়ারে হেলান দিয়ে, নয়তো দু’হাতে ভর দিয়ে, না হয় টেবিলে মুখ গুঁজে ঘুমিয়ে পড়ার দৃশ্য জাপানের অফিসগুলোতে স্বাভাবিক ব্যাপার। সামাজিকভাবেও এটা স্বীকৃত। জাপানিরা মনে করে, অফিসে ঘুমিয়ে পড়ার মানে, লোকটি তার কাজের প্রতি এতটাই যতœশীল যে, কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন। গবেষণায় জানা গেছে, পৃথিবীতে জাপানিরা সবচেয়ে ঘুমবঞ্চিত জাতি। প্রতিদিন তারা ছয় ঘণ্টারও কম সময় ঘুমে কাটায়। ফলে হরহামেশাই তাদের পাকর্, বাস, শপিং মল; এমনকি অফিসেও ঘুমিয়ে পড়তে দেখা যায়। অবশ্য জাপানিরা এটাকে একটা বিশেষ নামে অভিহিত করে। এই বিশেষ নামটি হলো ‘ইনেমুরি’। যার মানে হলো, ‘যখন যেখানে ঘুম’। আশির দশকে জাপানে কিছুদিন থাকার সুযোগ হয়েছিল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বিগ্রিটে স্টেগের। তিনি বিবিসিতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলেন, জাপানিদের প্রতিদিনকার কাজের শেডিউলে এত পরিমান চাপ থাকে যে, তারা খুব কম সময়ই ঘুমাতে পারে। কয়েক যুগ আগেও জাপান অথর্নীতিতে এতটা অগ্রসর ছিল না। কিন্তু এখন জাপান বিশ্বব্যাপী তাদের কঠোর পরিশ্রমের জন্য প্রশংসিত। তাদের অথর্নীতির চাকাতেও হাওয়া লেগেছে। তাদের এমনভাবে ঘুরে দঁাড়ানো সম্ভব হয়েছে কেবল তাদের অমানুষিক পরিশ্রমের জন্যই। যেখানে সেখানে ঘুমিয়ে পড়া নিয়ে হয়তো অনেকের দ্বিমত থাকতে পারে, তবে এটাই জাপানের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। ইনেমুরি বা যেখানে সেখানে ঘুমিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে অবশ্য জাপানে কিছু নিয়ম প্রচলন আছে। ধরা যাক, অফিসে নতুন কেউ যোগ দিলে তখন তার ঘুমানোর নিয়ম নেই। জাপানিদের মতে, এ সময়টা তাদের উচিত কাজটা মন দিয়ে করা। নিজের শানিত মেধাকে কাজে লাগিয়ে নিজের দক্ষতা প্রমাণের উপযুক্ত সময়ই তখন। যখন বয়স ৪০ অথবা ৫০ পেরোবে তখন যথেষ্ট সময় পাবে ঘুমানোর। স্প্যানিশদের ‘সিয়েস্তা’ অথবা ইতালীয়দের ‘রিপোসো’ নামে এমন ঘুমের সংস্কৃতি আছে কমর্স্থানগুলোতে। যেখানে দুপুরের খাবারের পর ছোটখাটো ভাত ঘুমের সুযোগ মেলে। এক গবেষণায় পাওয়া গেছে, কাজের ফঁাকে কিছু সময় ঘুমাতে পারলে মস্তিস্ক সচল থাকে। একজন মানুষ একটানা কাজ করলে যতটুকু কাজ শেষ করতে পারে, কাজের বিরতিতে কিছুটা সময় ঘুমিয়ে নিলে তার চেয়েও ভালো খিছু দিতে পারে। সম্প্রতি গুগল, অ্যাপল, নাইকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোও জাপানের অনুকরণে তাদের কমর্কতাের্দর বিরতি নিয়ে কাজ করার সুযোগ করে দিচ্ছে। সংযোজন করা হচ্ছে নতুন নতুন ¯িøপিং পড বা জৌলুস করে একটু ঘুমিয়ে নেয়ার জন্য ¯িøপিং রুমের ব্যবস্থা রেখেছে। সংবাদসূত্র : অ্যামিউজিং প্লানেট