হুশিয়ারি চীনের

যুক্তরাষ্ট্রকে পরিণতি ভোগ করতে হবে

রুশ অস্ত্র কেনায় চীনা বাহিনীর ওপর মাকির্ন নিষেধাজ্ঞা ওয়াশিংটন আগুন নিয়ে খেলছে, যা বিপজ্জনক হয়ে দঁাড়াতে পারে : রাশিয়া

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রকে হুশিয়ার করে চীন বলেছে, রাশিয়ার জেট এবং ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্য চীনের সেনাবাহিনীর ওপর আরোপিত মাকির্ন নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেয়া হলে ওয়াশিংটনকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। ইউক্রেনে রাশিয়ার কমর্কাÐ এবং মাকির্ন রাজনীতিতে রুশ হস্তক্ষেপের জেরে মস্কোর ওপর আরোপিত যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা চীন লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ ওয়াশিংটনের। আর এ কারণেই বেইজিং সম্প্রতি মস্কোর কাছ থেকে ১০টি সুখোই-৩৫ যুদ্ধবিমান ও এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার পর চীনা সামরিক বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, মস্কোর ব্যবসা এবং চীনের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে স্থিতিশীলতা ক্ষুণœ করছে এবং তাদের এ পদক্ষেপ আগুন নিয়ে খেলার সামিল বলে সতকর্ করেছে রাশিয়া। সংবাদসূত্র : আইএএনএস, রয়টাসর্, বিবিসি এর আগে বৃহস্পতিবার মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়ার কাছ থেকে যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার জন্য চীনের সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। রাশিয়ার সামরিক ও গোয়েন্দা বিভাগ সংশ্লিষ্ট আরও ৩৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকেও কালো তালিকাভুক্ত করে মাকির্ন প্রশাসন। রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ও ইরানের ওপর অথৈর্নতিক ও রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপে ট্রাম্প প্রশাসনকে অনুমতি দিয়ে গত বছর যে আইন করেছিল মাকির্ন কংগ্রেস, তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ইডিডির ওপর নিষেধাজ্ঞা কাযর্করের নিবার্হী আদেশ জারি করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের শীষর্ কমর্কতার্রা বলেছেন, চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা এলেও মূল লক্ষ্য রাশিয়া। রুশ অস্ত্র কেনায় অন্যান্য দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে বলেও জানিয়েছেন তারা। তবে মস্কোর রাজনীতিকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এ নিষেধাজ্ঞা যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রভাব ফেলবে না। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া অধিগ্রহণের পর থেকে রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা শক্তি একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিলেও বেইজিং তাতে কখনোই সমথর্ন দেয়নি। সে কারণে মস্কোর কাছ থেকে অস্ত্র কেনাও বন্ধ রাখেনি তারা। চীনা সামরিক বাহিনী চলতি মাসের শুরুতে রাশিয়ার সঙ্গে বড় ধরনের সামরিক মহড়ায়ও অংশ নিয়েছে। সামরিক বাহিনীর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং সুয়াং। তিনি বলেন, ‘ওয়াশিংটন আন্তজাির্তক সম্পকের্র মৌলিক নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে এবং চীনের সঙ্গে সম্পকের্কও সমস্যা-সঙ্কুল করে তুলেছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে এই ভুল শুধরে নেয়া এবং নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। নইলে যুক্তরাষ্ট্রকেও এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।’ যুক্তরাষ্ট্র চীনের সামরিক বাহিনীর অস্ত্র উন্নয়ন বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং রাশিয়া থেকে অস্ত্র ও যুদ্ধবিমান কেনার জন্য ওই বিভাগের পরিচালক লিং শেংফুকেও নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত করেছে। উল্লেখ্য, চীন তাদের নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য অত্যাধুনিক অনেক অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করছে। কিন্তু দেশটি এর পাশাপাশি রাশিয়া থেকে আরও উন্নত অস্ত্র কিনতে আগ্রহী। বিশেষ করে আকাশ প্রতিরক্ষা এবং যুদ্ধবিমানের ক্ষেত্রে। আর রাশিয়াও আগের চেয়ে বতর্মান সময়ে চীনের কাছে এ ধরনের অস্ত্র বিক্রি করতে অনেক বেশি আগ্রহী। যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : রাশিয়া এদিকে, চীনের ওপর নতুন মাকির্ন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সতকর্ করে দিয়ে বলেছে, দেশটি আগুন নিয়ে খেলছে। শুক্রবার রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেগের্ই রিয়াবকভ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আগুন নিয়ে খেলা বোকামি। কারণ, তা বিপজ্জনক হয়ে দঁাড়াতে পারে।’ রিয়াবকভ বলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা সংগঠনগুলোসহ রাজনীতি এবং ব্যবসাও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে। তিনি জানান, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়াটা জাতীয়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের এক ধরনের খেলার বিষয় হয়ে দঁাড়িয়েছে বলেই মস্কো মনে করছে। ২০১১ সালের পর সবর্সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞাটি ৬০তম নিষেধাজ্ঞা বলে উল্লেখ করেন রিয়াবকভ। ইতার তাস বাতার্ সংস্থাকে রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা বিশ্বে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বিষয়টি স্মরণে রাখলেই ভালো করবে। রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পকের্ উত্তেজনা সৃষ্টি করে স্থিতিশীলতাকে তারা বেপরোয়াভাবে বিঘিœত করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই বার বার নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, এর আগেও তারা রাশিয়াকে চাপে রাখার এমন চেষ্টা নিয়ে বরাবরই কোনো ফল পেতে ব্যথর্ হয়েছে।’