ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন
করোনায় বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্যে সোমবার থেকে সব ধরনের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এর আওতায় সোমবার থেকে সব ধরনের ভ্রমণ পথ বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে কেউ যদি দেশটিতে প্রবেশ করতে চায়, তাহলে তাকে কোভিড পরীক্ষার 'নেগেটিভ' সনদ দেখাতে হবে। সংবাদসূত্র :বিবিসি
ব্রাজিলের করোনাভাইরাসের আলাদা ও অজ্ঞাত একটি ধরন শনাক্ত হওয়ার পর যুক্তরাজ্যে নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার দক্ষিণ আমেরিকা ও পর্তুগালের সঙ্গে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার থেকে সব ধরনের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেন বরিস জনসন। তিনি জানিয়েছেন, নতুন এই নিয়ম কমপক্ষে ১৫ ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সোমবার থেকে যারা যুক্তরাজ্যে যাবেন, তাদের ১০ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে, যদি না তাদের পাঁচ দিন পর নেগেটিভ রেজাল্ট আসে। যুক্তরাজ্য জুড়ে নতুন ওই নিয়ম কার্যকর হবে। সীমান্তে এবং দেশের ভেতর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হবে বলে জানান বরিস।
আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা 'ওয়ার্ল্ডোমিটারস'র তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত ৩৩ লাখের বেশি মানুষের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মৃতু্য হয়েছে ৮৭ হাজারের বেশি মানুষের। এর মধ্যে শুধু গত ২৮ দিনেই মৃতু্য হয়েছে এক হাজার ২৮০ জনের।
ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস বলেন, 'এই সময়ে অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দিনের পর দিন আমরা আমাদের জনগণকে রক্ষা করার জন্য এমন সব পদক্ষেপ নিচ্ছি।' তিনি বলেন, 'করোনাভাইরাসের টিকার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী এবং একইসঙ্গে নতুন যে স্ট্রেইন দেশের বাইরে থেকে আসছে, সেটি বন্ধে আমরা অবশ্যই বাড়তি পদক্ষেপ নিচ্ছি।'
লন্ডনে ১৩০০? মরদেহের ধারণ
ক্ষমতাসম্পন্ন মরচুয়ারি চালু
এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পশ্চিম লন্ডনের রুইস্স্নিপে অস্থায়ী ভিত্তিতে একটি মরচুয়ারি চালু করা হয়েছে। এতে একসঙ্গে এক হাজার ৩০০ মরদেহ রাখা সম্ভব।
করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ের সময়েই লন্ডনে চারটি অস্থায়ী মরচুয়ারি স্থাপন করা হয়েছিল। এখন নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই রুইস্স্নিপে অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৩০০ মরদেহ রাখার ক্ষমতাসম্পন্ন এ মরচুয়ারি চালু করা হলো।
ওয়েস্টমিনস্টার সিটি কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী স্টুয়ার্ট লাভ বলেন, 'আমরা মানুষকে আশা দিতে চাই। তবে এখনো আমরা সেখানে পৌঁছাতে পারিনি।' তিনি বলেন, 'আমার অভিমত হচ্ছে আমরা এটা তৈরি করেছি ঠিকই, কিন্তু আমাদের প্রত্যাশা এর ধারণ ক্ষমতা পূর্ণ হবে না।' স্টুয়ার্ট লাভ বলেন, 'শুধু বাড়িতে থাকা এবং প্রিয়জনদের দেখাশোনা করার বার্তাটির প্রতিই আমি পুনরায় জোর দিতে চাই।'
উলেস্নখ্য, কোভিড-১৯ বিশ্বজুড়ে ২০ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। নানা দেশে এ রোগের বিরুদ্ধে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হলেও তার প্রভাব বোঝার সময় এখনো আসেনি।
