বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
ভারতের টিকাদান কর্মসূচি

পূরণ হয়নি প্রথমদিনের লক্ষ্যমাত্রা

এক লাখ ৯১ হাজার মানুষ প্রথম ডোজ পেয়েছে কোভ্যাকসিনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে মিলবে ক্ষতিপূরণ
যাযাদি ডেস্ক
  ১৮ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

ভারতে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কর্মসূচির প্রথমদিন এক লাখ ৯১ হাজার মানুষ প্রথম ডোজ পেয়েছে। তবে প্রথমদিনে প্রায় তিন লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মানুষের দ্বিধাদ্বন্দ্বের কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ

স্থানীয় সময় শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভারতে করোনার ভ্যাকসিন কর্মসূচির সূচনা করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কর্মসূচি সফল করতে সরকার ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে তিন হাজারের বেশি টিকাকেন্দ্র স্থাপন করে। বিভিন্ন টিকাকেন্দ্র থেকে দুই ধরনের টিকা দেওয়া হয়েছে। একটি সেরাম ইনস্টিটিউটে প্রস্তুত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার 'কোভিশিল্ড', অন্যটি ভারত বায়োটেকে তৈরি 'কোভ্যাকসিন' টিকা।

সেরাম পুনেভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে, ভারত বায়োটেক হায়দরাবাদের প্রতিষ্ঠান। চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারত সরকার 'কোভিশিল্ড' ও 'কোভ্যাকসিন' টিকার অনুমোদন দেয়। প্রথম দিনে প্রতিটি কেন্দ্রে গড়ে ১০০ জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য স্থির করা হয়। সে হিসেবে প্রথম দিনে প্রায় তিন লাখ মানুষের টিকা গ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু দিন শেষে দেখা যায়, এক লাখ ৯১ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

সরকারি সূত্রগুলো বলছে, টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে লোকজনের মধ্যে যথেষ্ট দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ কারণে প্রথমদিনের লক্ষ্য পূরণ হয়নি। এদিকে, টিকা নিয়ে কোনো প্রকার অপপ্রচার বা গুজবে কান না দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একই সঙ্গে তিনি টিকা নেওয়া সত্ত্বেও সবাইকে করোনার স্বাস্থ্যবিধিসহ অন্যান্য বিধিনিষেধ মেনে চলতে বলেছেন।

প্রথম ধাপে স্বাস্থ্যকর্মীসহ সম্মুখসারিতে থাকা বিভিন্ন জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত তিন কোটি মানুষকে বিনা মূল্যে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। পরের ধাপে ২৭ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। দ্বিতীয় ধাপে টিকা দেওয়া হবে ৫০ বছরের বেশি বয়স্কদের। বিশেষ করে যাদের আগে থেকেই কোনো না কোনো অসুস্থতা রয়েছে। এদের সংখ্যা প্রায় ২৭ কোটি। টিকাদানের জন্য ব্যাপক প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।

কোভ্যাকসিনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে মিলবে ক্ষতিপূরণ

এদিকে, ভারতে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দেশীয় ভ্যাকসিন তৈরি করা কোম্পানি ভারত বায়োটেক জানিয়েছে, যদি তাদের ভ্যাকসিনে কোনো বিরূপ প্রভাব দেখা দেয়, তাহলে ভ্যাকসিন গ্রহণকারীকে কোম্পানি ক্ষতিপূরণ দেবে। এক সম্মতিপত্রে এমন প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে ভারত বায়োটেক। ভ্যাকসিন প্রদানের আগে গ্রহণকারীর কাছ থেকে সেই সম্মতিপত্রেও স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

গত ৩ জানুয়ারি দেশীয়ভাবে তৈরি এ ভ্যাকসিনটির অনুমোদন দেয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কোভিশিল্ড নিয়ে কোনো সংশয় না থাকলেও, ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিন টিকা নিয়ে বহু প্রশ্ন উঠেছে। এই টিকা কতটা কার্যকর, তার কোনো তথ্য সরকারিভাবে দেয়নি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা। তার আগেই তাকে অনুমোদন দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইনডিয়া বা ডিসিজিআই।

এরই মধ্যে ভারত বায়োটেকের কাছ থেকে কেন্দ্রীয় সরকার ৫৫ লাখ ডোজের অর্ডার দিয়েছে। পাশাপাশি জারি করা হয়েছে একটি নির্দেশিকাও। যেখানে বলা হয়েছে, কোভ্যাক্সিনের ডোজ নেওয়ার পর কারও শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা গুরুতর কোনো সমস্যা দেখা দিলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ভারত বায়োটেককে।

এরই মধ্যে ওষুধ কোম্পানিটিও জানিয়ে দিয়েছে, তারা ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি আছে। কোভ্যাক্সিন টিকার জন্য একটি সম্মতিপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। এই ফর্মেই স্বাক্ষর করতে হবে টিকা গ্রহণকারীকে।

ভারত বায়োটেকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'কোনো বিরূপ পরিস্থিতির বা মারাত্মক প্রতিকূল অবস্থা দেখা দিলে সরকারি বা সরকার অনুমোদিত হাসপাতালগুলোতে সংশ্লিষ্ট রোগীর চিকিৎসা করা হবে।' এছাড়া সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, 'টিকা নেওয়ার ফলে শরীরে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া ঘটেছে, প্রমাণিত হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।' সম্মতিপত্রে আরও বলা হয়েছে, 'টিকা গ্রহণের অর্থ এই নয় যে, অন্যান্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে