শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
সিনেটে অভিশংসন প্রক্রিয়া

ট্রাম্পের বিচার আরও পেছাতে অনুরোধ রিপাবলিকানদের

সেক্ষেত্রে আগামী ১১ ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত সময় পেতে পারেন ট্রাম্প ট্রাম্পকে ফোন করার কোনো পরিকল্পনা নেই বাইডেনের
যাযাদি ডেস্ক
  ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সিনেটে অভিশংসন বিচার পেছাতে রিপাবলিকানরা জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে মার্কিন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে সিনেটে বিচার বিলম্বিত করতে ডেমোক্র্যাটদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। আত্মপক্ষ সমর্থনে ট্রাম্পকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময় দেওয়ারও অনুরোধ জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার নিজেদের মধ্যে এক 'টেলিকনফারেন্সে' সিনেটের সংখ্যালঘু নেতা মিচ ম্যাককনেল এ তথ্য জানান। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে উগ্র ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার পর বিদায়ী প্রেসিডেন্টকে নির্ধারিত সময়ের আগেই পদ থেকে সরাতে ডেমোক্র্যাটরা প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসন প্রস্তাব উত্থাপন করে। গত ১৩ জানুয়ারি সেই প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষে ভোটাভুটি হয়। ২৩২-১৯৭ ভোটে পাস হয় প্রস্তাবটি।

১০ জন রিপাবলিকানও এতে সমর্থন দেন। এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হন ট্রাম্প। চূড়ান্ত অভিশংসনের জন্য প্রস্তাবটি সিনেটে পাঠাতে হবে। সেখানে বিচারপ্রক্রিয়ার পর দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে পাস করাতে হবে এটি।

গত ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর এবার উচ্চকক্ষ সিনেটেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে ডেমোক্র্যাটরা। কোনো প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে সিনেটে অভিশংসন বিচার শুরুর ঘটনা এটাই প্রথম। ডেমোক্র্যাটরা কত দ্রম্নততার সঙ্গে অভিশংসন প্রস্তাবটি সিনেটে প্রেরণ করবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে এ নিয়ে জোর প্রস্তুতি চলছে।

মার্কিন গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রিপাবলিকান সিনেটরদের সঙ্গে টেলিফোন কনফারেন্সে অংশ নেন সিনেট সংখ্যালঘু নেতা মিচ ম্যাককনেল। তখন তিনি বলেন, 'আগামী ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত যেন সিনেটে ইম্পিচমেন্ট আর্টিকেল না পাঠানো হয়, সে ব্যাপারে ডেমোক্র্যাটদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।'

সেক্ষেত্রে বিচার পূর্ববর্তী আত্মপক্ষ সমর্থন ও যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের ক্ষেত্রে আগামী ১১ ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত সময় পাবেন ট্রাম্প। এর মানে হলো, সিনেটে তখন অভিশংসন বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হতে ফেব্রম্নয়ারির মাঝামাঝি হয়ে যাবে।

এরই মধ্যে সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে রিপাবলিকানরা। সেক্ষেত্রে সময় বাড়ানোর ব্যাপারে ডেমোক্র্যাট সংখ্যাগুরু নেতা চাক শুমারের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে তাদের।

এক বিবৃতিতে ম্যাককনেল বলেন, 'সিনেট রিপাবলিকানরা এই নীতিতে দৃঢ়ভাবে ঐক্যবদ্ধ যে, সিনেটের ইনস্টিটিউশন বা প্রতিষ্ঠান, প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার দাবিদার। যা তার অধিকার এবং গুরুতর বাস্তব, আইনি এবং সংকটে থাকা সাংবিধানিক প্রশ্নগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।'

ট্রাম্পকে ফোন করার কোনো

পরিকল্পনা নেই বাইডেনের

এদিকে, মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফোন করার কোনো পরিকল্পনা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেই বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। বুধবার ট্রাম্প বাইডেনের উদ্দেশে 'অত্যন্ত উদার' একটি চিঠি লিখেছেন বলে উলেস্নখ করেন বাইডেন।

এ পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্পকে ফোন করার পরিকল্পনা বর্তমান প্রেসিডেন্টের আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, 'ফোন করার কোনো পরিকল্পনা নেই।'

বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প উপস্থিত ছিলেন না, যা যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্টদের জন্য এক বিরল ঘটনা। সাকি বলেন, 'তিনি (বাইডেন) যা বলতে চেয়েছেন, তা হলো- সাবেক প্রেসিডেন্টের অনুমতি ছাড়া তার ব্যক্তিগত চিঠি তিনি প্রকাশ করতে চান না। তবে আমি বলব না ফোন কলের মাধ্যমে তিনি এই অনুমতি চাইবেন, ব্যক্তিগত যে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে, সেটির ওপর তিনি শুধু শ্রদ্ধাশীল থাকারই চেষ্টা করছিলেন।'

ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রথাগত অনেক নিয়মই রক্ষা করেননি। এর মধ্যে রয়েছে বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকা এবং তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিনন্দন না জানানো। তবে প্রথা অনুযায়ী, উত্তরসূরির জন্য ট্রাম্প নোট রেখে যাবেন কি না সেটি বুধবার পর্যন্ত অস্পষ্ট ছিল।

চিঠি সম্পর্কে বুধবার ওভাল অফিসে বাইডেন বলেন, 'প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) অত্যন্ত উদার একটি চিঠি লিখেছেন। তবে যেহেতু এটি ব্যক্তিগত, তাই তার সঙ্গে কথা বলার আগে আমি এ সম্পর্কে কিছু বলব না। তবে এটি উদার ছিল।'

ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে ছবিও

তুললেন না মেলানিয়া!

অন্যদিকে, সময় ভালো যাচ্ছে না মার্কিন সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। প্রেসিডেন্ট পদে হেরেছেন বাইডেনের কাছে। বিদায় নিয়েছেন হোয়াইট হাউস থেকেও। এর আগে স্ত্রী মেলানিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদ হচ্ছে- এমন গুঞ্জনও শোনা গেছে। সেই গুঞ্জনে আরও ঘি ঢালল বাইডেনের শপথের পরের দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও।

ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, বিমান থেকে মেলানিয়ার হাত ধরেই নামেন ট্রাম্প। এরপর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ফটোগ্রাফারদের সামনে ছবি তোলার জন্য পোজও দিচ্ছিলেন। কিন্তু সবাইকে অবাক করে স্ত্রী মেলানিয়া একবারের জন্যও স্বামীর পাশে দাঁড়ালেন না। হেঁটে চলে যান। বাধ্য হয়ে একাই দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন ট্রাম্প। সবার উদ্দেশে হাত নাড়েন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়ার পরই ভাইরাল হয় এই ভিডিও। সেই সঙ্গে ট্রাম্প এবং মেলানিয়ার বিচ্ছেদের গুঞ্জন আরও তীব্র হয়। এই ভিডিওতে অনেকেই নানা রকমের মন্তব্য করেছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই বিয়ের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। একজন লেখেন, 'মেলানিয়া ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছেন। ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলাও বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি।'

আরেকজন লিখেছেন, 'কেউ কি মেলানিয়ার মুখ দেখেছেন? ভাবভঙ্গি দেখেই বোঝা যাচ্ছে, বিমান ফ্লোরিডার মাটিতে নামলেই তিনি চলে যাবেন।'

গত বুধবার শপথ নিয়েছেন নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে ওই দিনই হোয়াইট হাউস ছেড়ে ফ্লোরিডা যান ট্রাম্প। পথে 'এয়ার ফোর্স ওয়ানে' বসে জো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান দেখেছেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফ্লোরিডায় যাওয়ার পথে ট্রাম্পের সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী মেলানিয়া। ফ্লোরিডায় নামার পরই ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি না তুলে তাকে বিব্রত অবস্থায় ফেলে দেন মেলানিয়া।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে