শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
১০ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর

করোনা মোকাবিলার মিশনে বাইডেন

আগামী ১০০ দিনে ১০ কোটি মার্কিনিকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ দরিদ্র দেশে ভ্যাকসিন সহায়তায় নামছে যুক্তরাষ্ট্র
যাযাদি ডেস্ক
  ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে বসার আগে থেকেই করোনাভাইরাস নিয়ে প্রতিশ্রম্নতির ফুলঝুরি ফুটিয়েছিলেন জো বাইডেন। আর প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার প্রথম দিন বুধবারই করোনাভাইরাস বিষয়ক দুটি নির্বাহী আদেশ জারি করার মাধ্যমে প্রতিশ্রম্নতির বাস্তবায়ন শুরু করেছেন তিনি। এরপর হোয়াইট হাউসে অভিষেকের দ্বিতীয় দিনেও মহামারি করোনা সংক্রান্ত আরও ১০ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত এ প্রেসিডেন্ট। বৃহস্পতিবার এসব আদেশে স্বাক্ষর করেন তিনি। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, আল-জাজিরা

দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফাউচিও বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের সময় বাইডেনের পাশে ছিলেন। হোয়াইট হাউসের 'রুজভেল্ট রুমে' বাইডেন ১৯ পৃষ্ঠার পরিকল্পনা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

এ সময় বাইডেন বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় আগামী এক মাসের মধ্যে ১০০টি টিকা কেন্দ্র খোলা হবে। এছাড়া আগামী ১০০ দিনের মধ্যে ১০ কোটি মার্কিনিকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি।'

এদিকে, অ্যান্থনি ফাউচি সাংবাদিকদের বলেন, '১০০ দিনের মধ্যে ১০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ যুক্তিসঙ্গত। এ পর্যন্ত এক কোটি ছয় লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে, যা আগের প্রশাসনের ডিসেম্বরের মধ্যে দুই কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম।'

দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে জো বাইডেন বলেন, করোনা মহামারি নিয়ে সামনে এখনো অনেক কঠিন দিন রয়েছে। পরিস্থিতি উন্নতির বদলে অবনতির দিকে যাচ্ছে। আগামী মাসেই মৃতের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়াতে পারে।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, 'গত এক বছর আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর নির্ভর করতে পারিনি। এই ব্যর্থতার জন্য আমাদের মর্মান্তিক মূল্য দিতে হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত দুই কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চার লাখ আট হাজারের বেশি মানুষের মৃতু্য হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রেই সবচেয়ে বেশি।

দরিদ্র দেশে ভ্যাকসিন সহায়তায়

নামছে বাইডেনের যুক্তরাষ্ট্র

এদিকে, ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিন থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের বিতর্কিত নীতিগুলো কাটাছেঁড়া শুরু করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রেসিডেন্টের চেয়ারে প্রথমবার বসেই বাতিল করেছেন মুসলমান দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা, যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায়ও ফেরানোর আয়োজন করছেন। এবার দরিদ্র দেশগুলোর জন্য করোনা ভ্যাকসিন নিশ্চিতকরণে 'কোভ্যাক্স' পরিকল্পনারও অংশ হতে চলেছেন তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান চিকিৎসা উপদেষ্টা ডা. অ্যান্থনি ফাউচি বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ডবিস্নউএইচওর নির্বাহী বোর্ডকে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন শিগগিরই একটি নির্দেশনা জারি করবেন, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কোভ্যাক্সে যোগদানের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্যাভি ও সিইপিআইয়ের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত কোভ্যাক্সের মাধ্যমে বিশ্বের সব দেশের জন্য করোনা ভ্যাকসিন নিশ্চিতের চেষ্টা চলছে। কিন্তু এ পরিকল্পনার অংশ হতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, প্রথমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় অনুদান বন্ধ, পরে সংস্থাটি থেকেই যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনার ঘোষণা দেন ট্রাম্প।

তার দাবি, করোনাভাইরাস মহামারির সময় সাধারণ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশেষ করে, করোনার উৎস চীনের প্রতি সংস্থাটির পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন তিনি।

গত বছরের জুলাইয়ে ১৯৪৮ সালে যোগ দেওয়া জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সেই প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছেন বাইডেন।

বিশ্বের মধ্যে করোনায় সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত চার লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রথমদিনই নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের কেন্দ্রীয় সরকারি দপ্তরে মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এছাড়া মহামারির বিষয়ে পদক্ষেপের সমন্বয় করতে একটি আলাদা দপ্তরও গড়ে তোলা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে