ভারতে সংক্রমণ বাড়ছে

ফণা তুলছে ভারতীয় ধরন পাঁচ রাজ্যে 'সতর্কতা'

হ বিশ্বে একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত দেশটিতে হ স্কুলের হোস্টেলে একসঙ্গে ২২৯ জন করোনায় আক্রান্ত

প্রকাশ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
যুদ্ধজয়ের মুখে হঠাৎ রণকৌশল বদলে ফেলে শত্রম্নপক্ষের হামলা! দিন কয়েক আগেও চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছিলেন, করোনা 'যুদ্ধে' জয়ের পথে এগোচ্ছে ভারত। টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হওয়া এবং আক্রান্তের সংখ্যা দ্রম্নত কমতে থাকায় কিছুটা স্বস্তিও পেয়েছিলেন দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। ঠিক সেই সময়ই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বদলে ফিরে এলো করোনার 'নিজস্ব' ভ্যারিয়েন্ট বা ধরন। আর যার জেরে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী পাঁচটি রাজ্যে বাড়তি 'সতর্কতা' জারি করা হয়েছে। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ জিনের 'সিকোয়েন্স' করে জানা গেছে, ভারতে করোনার নতুন প্রজাতির সন্ধান মিলেছে। মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, কেরালা, কর্ণাটক, ছত্তিশগড়ে যেভাবে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে, তাতে দেশটিতে নতুন আরেকটি ঢেউ আছড়ে পড়লে অবাক হওয়ার কিছু নেই বলেও মনে করছেন দেশটির চিকিৎসকরা। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, যদি কোভিড-১৯ প্রতিরোধে জারি করা নিয়ম কঠোরভাবে অনুসরণ করা না হয়, তবে আবারও পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। গত ১৬ জানুয়ারি থেকে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে ভারত। বুধবার টিকাদান কার্যক্রম আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এদিকে, বিশ্বে একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে ভারতে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ১৩ হাজার ৭৪২ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। এদিন মারা গেছে ১০৪ জন। গত দুই সপ্তাহে এটাই সর্বোচ্চ দৈনিক মৃতু্য। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে, বিশেষ করে ভাইরাসের নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে কঠোর যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তা ?বাস্তবায়নে কোনো ধরনের শৈথল্য পরিস্থিতি আরও নজুক করে তুলতে পারে।' করোনাভাইরাসের নতুন যে দুটি ধরন ব্রাজিল, যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হয়েছে বেশ আগেই। ভারতেও তা ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বর্তমানে ছত্তিশগড়, গুজরাট, কেরালা, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরে করোনা শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে। ওই সব রাজ্যে রোগ শনাক্তের পরীক্ষা বা করোনা টেস্ট তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কর্ণাটক, তামিলনাড়ু এবং পশ্চিমবঙ্গেও বাড়ছে রোগী। গত সপ্তাহে ভারতের ৩৬টি রাজ্যের এক তৃতীয়াংশেই দৈনিক শনাক্ত ১০০ ছাড়িয়েছে। তার মধ্যে কেরালা এবং মহারাষ্ট্রে দৈনিক শনাক্ত চার হাজারের বেশি। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারগুলোকে স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখসারির যোদ্ধাদের দ্রম্নত টিকার আওতায় আনতে বলেছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মাত্র এক কোটি ১০ লাখ মানুষ টিকার প্রথম বা দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে। আগামী আগস্টের মধ্যে ৩০ কোটি ভারতীয়কে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে দেশটির সরকার। স্কুলের হোস্টেলে একসঙ্গে ২২৯ জন করোনায় আক্রান্ত এদিকে, ভারতের মহারাষ্ট্রে একটি স্কুলের হোস্টেলে একসঙ্গে ২২৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ২২৫ জন ছাত্র এবং চারজন শিক্ষক রয়েছেন। আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ অমরাবতী থেকে এসেছে। ওয়াসিম জেলার ওই হোস্টেলে গত সপ্তাহে ২৬ ছাত্রকে করোনা পজিটিভ অবস্থায় পাওয়া যায়। তারপর সব শিক্ষার্থীর করোনা পরীক্ষা করা হয়। ওই হোস্টেলকে এরই মধ্যে 'কন্টেনমেন্ট জোন' হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।