মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
বিধানসভা নির্বাচন

পশ্চিমবঙ্গসহ পাঁচ রাজ্যে ভোটের বাদ্য

মার্চ ও এপ্রিলে নির্বাচন ফল ঘোষণা ২ মে আট দফায় আপত্তি মমতার
যাযাদি ডেস্ক
  ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০
প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা (মাঝে)

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি আরও চার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার দিলিস্নর বিজ্ঞান ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশন জানায়, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, কেরালা, তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতে মার্চ ও এপ্রিল মাসেই নির্বাচন হবে। আর সব রাজ্যে ফল ঘোষণা হবে ২ মে। সংবাদসূত্র :এনডিটিভি, এবিপি নিউজ

আসামে তিন দফায় ভোট হবে। প্রথম দফায় ২৭ মার্চ ৪৭টি আসনে ভোট হবে। দ্বিতীয় দফায় ১ এপ্রিল ভোট হবে। তৃতীয় দফার ভোট হবে ৬ এপ্রিল। কেরালায় ৬ এপ্রিল মাত্র একটি দফায় ভোট হবে। তামিলনাড়ুতেও ৬ এপ্রিল একটি মাত্র দফায় ভোট হবে। পুদুচেরিতে ৬ এপ্রিল এক দফায় নির্বাচন হবে। পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য ভোট হবে আট দফায়।

পাঁচ রাজ্যে মোট ৮২৪টি বিধানসভা আসনে ভোট হবে। মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ কোটি ৬৮ লাখ। দুই লাখ ৭০ হাজার ভোটকেন্দ্রে ভোট দেওয়া যাবে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আসামের বর্তমান সরকারের মেয়াদ রয়েছে ৩১ মে পর্যন্ত। সেখানে মোট আসন সংখ্যা ১২৬টি। করোনা আবহে ওই রাজ্যে কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মহামারির জন্য একটি কেন্দ্রে সর্বোচ্চ এক হাজার জন ভোটার থাকবেন। পর্যাপ্ত ভোটকর্মী ও বাহিনী মোতায়েন করা যাবে বলে মত কমিশনের।

এদিকে, মোট ২৯৪টি বিধানসভা আসনের পশ্চিমবঙ্গেও ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৩১ শতাংশ বাড়িয়ে এক লাখ হাজার ৯১৬ করা হয়েছে। সেখানে বর্তমান সরকারের মেয়াদ হচ্ছে ৩০ মে পর্যন্ত।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা বলেন, তামিলনাড়ুতে মোট ২৩৪টি আসনে ভোট হবে। ওই রাজ্যে বর্তমান সরকারের মেয়াদ ৩০ মে পর্যন্ত। কেরালায় ১৪০টি আসনে হবে নির্বাচন। সেখানে বর্তমান সরকারের মেয়াদ ১ জুন পর্যন্ত। পুদুচেরিতে ৩০টি আসনে ভোট হবে।

বিহার মডেলে জোর দিয়ে এদিন সুনীল অরোরা বলেন, 'করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে চলতি বছরে নতুন আশার আলো দেখতে পেয়েছে দেশ। গত বছর করোনার মধ্যেই একাধিক নির্বাচন হয়েছে। এমন সংকটকালেও আমরা নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ৮০ বছরের বেশি বয়সের ভোটারদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা রয়েছে। ভোটদানের সময় এক ঘণ্টা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। করোনাকালে রাজনৈতিক দলগুলো 'রোড শো' করতে পারবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারে সর্বোচ্চ পাঁচজন থাকবে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় প্রার্থীর সঙ্গে দুইজনের বেশি সঙ্গী থাকতে পারবেন না।

নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার সঙ্গেই কার্যকর হয়ে গেছে নির্বাচনি বিধি। একজন প্রার্থী প্রচারে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ করতে পারবেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে পাঁচ রাজ্যের ভোটের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে গেছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ দখল করতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। কারণ, এবার পশ্চিমবঙ্গ জয় করতে পারলে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সুফল পাবে বিজেপি। কৃষক আন্দোলন থেকে শুরু করে মূল্যবৃদ্ধি পর্যন্ত একাধিক ইসু্যতে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ ও পাঞ্জাবে কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হবে গেরুয়া শিবির। ফলে পশ্চিমবঙ্গের ৪৪টি লোকসভা আসন পকেটে পুরতে পারলে সেই ক্ষতি অনেকটাই সামলে ওঠা যাবে। তাই এবার পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ নজর দিয়েছে বিজেপি।

এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের আট দফা ভোট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিহারে ২৩৪ আসনে যদি তিন দফায় ভোট হয়, তাহলে পশ্চিমবঙ্গের ২৯৪ আসনে আট দফায় ভোট কেন? নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে যদিও 'স্বাগত' জানিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন 'অভিনন্দন'ও। কিন্তু পাশাপাশিই বলেছেন, 'আমি শক্‌ড!' এর পেছনে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের ইন্ধন রয়েছে বলেও সরাসরি অভিযোগ করেছেন তিনি। 'বিশেষ' কাউকে পশ্চিমবঙ্গে সুবিধা পাইয়ে দিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন মমতা। ভোটের আগে এজেন্সির 'অপব্যবহার'র অভিযোগ তুলে মমতা বলেছেন, 'নির্বাচন কমিশনকে বলছি, টাকার খেলা বন্ধ করুন। আমরা কিন্তু সব বুঝতে পারছি।' পাশাপাশিই নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক বিবেক দুবেকে নিয়েও আপত্তি তুলেছেন মমতা। তার কথায়, 'আমি এবং আমরা জানি উনি কী করে থাকেন।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে