বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
খাশোগি হত্যায় মার্কিন পদক্ষেপ

রক্ষা পেলেন সৌদি যুবরাজ

হ 'শীর্ষ নেতা' হওয়ার কারণেই তার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে না হ যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করল সৌদি
যাযাদি ডেস্ক
  ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০
মোহাম্মদ বিন সালমান জামাল খাশোগি

প্রখ্যাত সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকান্ডে জড়িত ৭৬ সৌদি নাগরিকের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেই তালিকায় নাম নেই হত্যার 'নির্দেশদাতা' সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের। মার্কিন প্রশাসন বলছে, সৌদি আরবের 'শীর্ষ নেতা' হওয়ার কারণেই তার ওপর কোনো ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে না। সংবাদসূত্র : সিএনএন, রয়টার্স, বিবিসি

হোয়াইট হাউসে প্রবেশের প্রথম কয়েক সপ্তাহেই বাইডেন প্রশাসন বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে সৌদি আরবের সঙ্গে গড়ে ওঠা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করতে চলেছে, বিশেষ করে যুবরাজ সালমানের সঙ্গে।

বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে মার্কিন গণমাধ্যমকে বলেন, তাদের লক্ষ্য সৌদির সঙ্গে মূল সম্পর্ক না ভেঙে একটি নতুন প্রান্ত থেকে বন্ধন দৃঢ় করে তোলা। ইয়েমেন যুদ্ধ এবং সাংবাদিক খাশোগিকে হত্যার জেরে বেশ কয়েক বছর ধরেই সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে।

তবে বাইডেন প্রশাসনের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, তাদের লক্ষ্য সম্পর্ক পুনরুদ্ধার, ছিন্ন করা নয়। কারণ, এর সঙ্গে দুই পক্ষেরই অভিন্ন স্বার্থ জড়িত। ২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনসু্যলেটে জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়। সৌদির একটি 'কিলিং স্কোয়াড' যুবরাজ সালমানের নির্দেশে ওই হত্যাকান্ড ঘটায় বলে অভিযোগ রয়েছে। হত্যার পর খাশোগির মরদেহ গুম করে দেওয়া হয়, যার সন্ধান আজও মেলেনি।

শুক্রবার খাশোগি হত্যাকান্ডের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই সৌদি আরবের সাবেক গোয়েন্দাপ্রধান আহমেদ আল-আসিরির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগ। নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে দেশটির রাজকীয় বাহিনীর্ যাপিড ইন্টারভেনশন ফোর্স বা আরআইএফের ওপরও।

নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কোনো সম্পত্তি থাকলে তা বাজেয়াপ্ত হবে এবং কোনো মার্কিন নাগরিক নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তদের সঙ্গে ব্যবসা বা যোগাযোগ রাখতে পারবেন না। এ ছাড়া সৌদির আরও ৭৬ নাগরিকের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই বিধিনিষেধ বেছে বেছে তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপরও প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

সৌদি আরব শুরুর দিকে খাশোগি হত্যায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করে, দেশে ফিরিয়ে আনার একটি অভিযানে ভুলক্রমে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত থাকায় পাঁচজনকে মৃতু্যদন্ড দেয় দেশটি। পরে অবশ্য খাশোগির পরিবার ক্ষমা করে দেওয়ায় তাদের সাজা কমিয়ে ২০ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়।

এই হত্যাকান্ডে যুবরাজ সালমান জড়িত থাকার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে সৌদি সরকার। তবে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশিত গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তাকে খাশোগি হত্যার 'নির্দেশদাতা' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এরপরও সৌদি যুবরাজের ওপর কেন কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত কোনো দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় না।' তিনি বলেন, 'আমরা প্রকৃতপক্ষে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, এসব সমস্যা মোকাবিলার আরও কিছু কার্যকর উপায় রয়েছে।

মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান সৌদির

এদিকে, ক্রাউন প্রিন্স ও ডি-ফ্যাক্টো নেতা মোহাম্মদ বিন সালমান যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার অনুমোদন দিয়েছিলেন বলে শুক্রবার প্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে সৌদি আরব। রিয়াদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা 'সৌদি প্রেস এজেন্সি'কে দেওয়া বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রতিবেদনকে 'নেতিবাচক, মিথ্যা ও অগ্রহণযোগ্য' হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে