শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
বিধানসভা নির্বঅচন

বিরোধ মাথাচাড়া দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসে

হ ফুরফুরার পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে সখ্য নিয়ে প্রশ্ন হ নন্দীগ্রাম থেকেই লড়বেন তৃণমূল নেত্রী মমতা
যাযাদি ডেস্ক
  ০৪ মার্চ ২০২১, ০০:০০
আনন্দ শর্মা আব্বাস সিদ্দিকী অধীর রঞ্জন চৌধুরীর

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতির মঞ্চে হঠাৎই সামনের সারিতে চলে এসেছেন মুসলমান সমাজের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী। যিনি ভক্ত-সমর্থকদের মাঝে 'ভাইজান' বলে সমধিক পরিচিত। লোক সমাবেশ করতে পারেন বলে এই 'ভাইজানে'র রয়েছে বেশ নামঢাক। এদিকে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সেই আব্বাস সিদ্দিকীর দল 'ইনডিয়ান সেকু্যলার ফ্রন্ট' (আইএসএফ)-এর সঙ্গে জোট বাঁধা নিয়ে রাজ্য কংগ্রেসে চরম বিরোধ দেখা দিয়েছে। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ

কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা দলটির রাজ্য সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর দিকে একের পর এক প্রশ্নের তীর ছুড়েছেন। সম্প্রতি কলকাতায় ব্রিগেডের মঞ্চে আইএসএফ প্রধানের উপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। টুইটারে তিনি লিখেছেন, 'আইএসএফের মতো শক্তির সঙ্গে কংগ্রেসের সমঝোতা নেহরু-গান্ধীর ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণার সঙ্গে খাপ খায় না। বিষয়টি কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে আলোচনা হওয়া উচিত ছিল।'

আনন্দ আরও লিখেছেন, 'মৌলবাদীদের (তার ভাষ্যমতে) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস কখনো বাছ-বিচার করতে পারে না। মৌলবাদীতার বিরুদ্ধে আমাদের সব উপায়ে অবশ্যই লড়াই করতে হবে। ওই মঞ্চে পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস সভাপতির উপস্থিতি ও সমর্থন বেদনাদায়ক ও লজ্জাজনক! তার অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত।'

এদিকে, অধীর চৌধুরীও সহকর্মীর প্রশ্নের দ্রম্নত জবাব দিয়েছেন। আশ্বস্ত করেছেন যে, দলের নেতৃত্বের অনুমোদন ছাড়া তিনি কোনো পদক্ষেপ নেবেন না। তিনি লিখেছেন, 'এই মন্তব্য বেদনাদায়ক ও দুর্ভাগ্যজনক! জোট গড়ে ওঠায় পশ্চিমবঙ্গে যাদের অসুবিধা হচ্ছে, তাদের কেউ হয়তো তাকে বিভ্রান্ত করে থাকতে পারেন। সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজা, বিমান বসুরা সবাই মঞ্চে ছিলেন। তারা সবাই আব্বাস সিদ্দিকীর হাত ধরলেন, এমন ধারণা কী করে হলো, ভাবতে অদ্ভুত লাগছে। যাদের বিরুদ্ধে আনন্দ শর্মাদের মতো মানুষদের বলা উচিত, তাদের বিরুদ্ধে না বলে উনি নিশানা করছেন তাদের, যারা মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়ছে!'

কমিউনিস্টদের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা 'দুর্ভাগ্যজনক' বলে মন্তব্য করে অধীর আরও বলেন, 'কিভাবে চলতে হবে, সেটা কোনো ব্যক্তির বিষয় নয়। এআইসিসির সঙ্গে কথা বলে রাজ্য কংগ্রেস পথ ঠিক করে এবং এই পশ্চিমবঙ্গে আমরা সেটাই করছি।'

এর আগে গত রোববার ভাষণ দেওয়ার সময় কংগ্রেস সভাপতিকে হতাশ দেখাচ্ছিল। যখন বাম-কংগ্রেস সমাবেশে সিদ্দিকীর উপস্থিতিতে সমর্থকরা স্স্নোগান দেন তখন। এসময় তিনি ভাষণ বন্ধ করে দেন। সিপিএম নেতা মো. সেলিম মঞ্চে এসে বলেন, সিদ্দিকীর ভাষণ দেওয়া দরকার। এসময় বিরক্ত হয়ে চলে যান অধীর। আরেক বাম নেতা বিমান বোস এগিয়ে আসেন এবং কংগ্রেস নেতাকে ভাষণ চালিয়ে যেতে বলেন।

এরপর থেকেই অধীর চৌধুরীকে বেশ কয়েকবার ওই ঘটনা ভুল বোঝাবুঝি বলে ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, 'আব্বাসকে দেখে উলস্নাসিত সমর্থকদের সামনে কথা বলা বন্ধ করি। আমি অপেক্ষায় ছিলাম স্স্নোগান থামলে আবার কথা বলব। এই ঘটনায় এতো মনোযোগের পেছনে অন্য কারণ থাকতে পারে।'

এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের জন্য আগামী সপ্তাহে প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে বামফ্রন্ট। সূত্রের খবর, বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকায় থাকতে পারে একাধিক চমক।

সম্ভবত এবার ভোটে লড়বেন না সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। তার জায়গায় নারায়ণগড়ে প্রার্থী হতে পারেন তপন সিনহা। এছাড়া যুব নেত্রী মধুজা সেন রায় প্রার্থী হতে পারেন ঝাড়গ্রাম থেকে। প্রার্থী হবেন পশ্চিম মেদিনীপুরের সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষও।

নন্দীগ্রাম থেকেই লড়বেন মমতা

অন্যদিকে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ১১ মার্চ নন্দীগ্রাম আসনে নিজের মনোনয়নপত্র জমা দেবেন তৃণমূলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, প্রথম তিন দফার ভোটের জন্য দলের প্রার্থী তালিকা বুধবার প্রকাশ করা হবে। সেই তালিকায় নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে থাকবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। গত বিধানসভা নির্বাচনে এই আসন থেকে বিধায়ক হিসেবে জিতে রাজ্য মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিছুদিন আগে তিনি মন্ত্রীত্ব এবং বিধায়ক পদ ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে