শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ শেষ

পশ্চিমবঙ্গে রক্তাক্ত ভোট, নিহত ৫

হ গুলির ঘটনায় অমিত শাহের পদত্যাগ চাইলেন মমতা হ পেটানোর 'ট্রেনিং' দিচ্ছেন মমতা, আক্রমণ মোদির
যাযাদি ডেস্ক
  ১১ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০
হুগলির একটি কেন্দ্রের সামনে ভোটারদের লাইন

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ শনিবার প্রাণহানি দিয়েই শুরু হয়েছিল। এরপর বেলা যত গড়িয়েছে লাশের সংখ্যা কেবল বেড়েছে। গত তিন দফার ভোটে যা হয়নি, চতুর্থ দফায় সেটিই হলো। এদিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে রাজ্যটির কোচবিহারের শীতলকুচিতে একটি ভোট কেন্দ্রের সামনে চারজন মারা গেছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও অন্তত চারজন। নিহতরা সবাই তৃণমূলের সমর্থক বলে দাবি দলটির। এদিকে, শীতলকুচির আরেকটি কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে আনন্দ বর্মণ নামের ১৮ বছর বয়সি একজনের মৃতু্য হয়েছে। গণমাধ্যমের ভাষ্যমতে, দুই পক্ষের সংঘর্ষের বলি হয়েছেন তিনি। যদিও বিজেপির দাবি, আনন্দ বর্মণ তাদের সমর্থক। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ, ডিডবিস্নউ নিউজ

শীতলকুচিতে চারজন নিহতের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপির হয়ে কাজ করছে। রাতভর মদ-মাংস খেয়ে সকালে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন করানোর ভার যাদের কাঁধে, তাদের নির্বিচারে গুলি চালানোর অধিকার কে দিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জোড়াফুল শিবির।

স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মী বলেন, 'দলে দলে মানুষ ভোট দিতে যাচ্ছিল। সেই সময় বিনা প্ররোচনায় গুলি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনী।' কেন্দ্রের ভেতরে যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছিল, তারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করে তৃণমূল।

অন্যদিকে, বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিক গোটা ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ী করেছেন। তার বক্তব্য, 'কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে লাগাতার উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন মমতা। মাথাভাঙা, শীতলকুচি, কোচবিহারের সভা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ধরতে বলেন তিনি, তাতেই একটি বিশেষ শ্রেণির লোক উত্তেজিত এবং তা থেকে আক্রমণাত্মক হয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয় বাহিনী যদি গুলি চালিয়ে থাকে, তা আত্মরক্ষার্থেই চালিয়েছে। আসলে তৃণমূল জানে, ওরা হারছে। তাই বিশৃঙ্খলতা তৈরি করছে।'

এদিকে, গোটা ঘটনার প্রতিবেদন চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন জানিয়েছে, সিআরপিএফ নয়, গুলি চালিয়েছে সিআইএসএফ (সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্স)। রাজ্য নির্বাচন পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে জানিয়েছেন, তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। বাধা দেওয়া হচ্ছিল ভোটদানেও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ধরা হয়। রাইফেলও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তাতেই গুলি চলে।

কিন্তু স্থানীয় এক বাসিন্দার যুক্তি, 'নিহতদের পরিচয় তাদের বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি তাদের সমর্থন নয়। তারা ভোটার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়ে যদি গুলি চালাতে হয়, তাহলে পায়েও তো গুলি চালাতে পারত। তা না করে সোজাসুজি বুকে গুলি করা হলো কেন?'

গুলির ঘটনায় অমিত শাহের পদত্যাগ চাইলেন মমতা

এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি চালানোর ঘটনায় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে ষড়যন্ত্র করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিজেপির ভোটবাক্স ভর্তি করতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

মমতা বলেন, 'আমি বরাবর বলে আসছি, কেন্দ্রীয় বাহিনী আমার শত্রম্ন নয়। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় যে চক্রান্ত চলছে, তা প্রমাণ হয়ে গেল। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটারদের গুলি করে মেরে দেওয়া হয়েছে।'

পেটানোর 'ট্রেনিং' দিচ্ছেন মমতা

কড়া আক্রমণ মোদির

অন্যদিকে, কোচবিহারের শীতলকুচিতে হতাহতের ঘটনায় শুরু থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে দায়ী করছে বিজেপি। এবার শিলিগুড়ির সভায় একই সুর শোনা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখেও। সরাসরি মমতার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর আক্রমণের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে