ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে শনিবার চতুর্থ দফার ভোটে কোচবিহারের শীতলকুচিতে পাঁচ জন নিহত হওয়ার পরপরই অঞ্চলটি অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও চরমে পৌঁছেছে। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগামী ৭২ ঘণ্টা কোচবিহার জেলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ রাজনৈতিক নেতাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। শনিবার রাতে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ নির্বাচন কমিশনের জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, 'কোচবিহারের ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হয়েছে; কিন্তু আগামী ৭২ ঘণ্টা ওই জেলার ত্রিসীমানায় কোনো জাতীয়, আঞ্চলিক বা অন্য কোনো দলের রাজনৈতিক নেতা বা নেত্রীকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।' একই সঙ্গে উত্তেজনা কমাতেও নেওয়া হয়েছে নতুন উদ্যোগ। কমিশন বলছে, নির্বাচনের পঞ্চম দফা থেকে ভোটগ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা নয়, ৭২ ঘণ্টা আগে শেষ করতে হবে প্রচার-প্রচারণা। তবে নির্বাচন কমিশনের এই নিষেধাজ্ঞা জারির পর তৃণমূলের এমপি সৌগত রায় বলেন, 'মমতাকে আটকাতেই কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।' উলেস্নখ্য, শনিবারই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, রোববার সকালেই নিহতদের বাড়িতে গিয়ে তাদের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। এ লক্ষ্যে শনিবার বিকালেই রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে পৌঁছে যান তিনি। মমতাকে গৃহবন্দি করার দাবি বিজেপির এদিকে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে শনিবার চতুর্থ দফার ভোটে কোচবিহারের শীতলকুচিতে হত্যাকান্ডের দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর চাপিয়ে তাকে গৃহবৃন্দি করার দাবি তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তার দাবি, 'মমতা বুঝতে পেরেছেন হেরে যাবেন, তাই মানুষকে উত্তেজিত করতে শুরু করেছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে নিহতদের দায় পুরোপুরি তার। তিনি মানুষকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করতে, ইভিএম আটকানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন।' দিলীপ ঘোষের ভাষায়, 'সন্ত্রাসীরা মমতার হয়ে ভোট করতো। মমতা তাদের উত্তেজিত করেছেন। তারা কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর হামলা করেছে। পরে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আমার মনে হয়, মমতার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত। প্রচার থেকে সরিয়ে গৃহবন্দি করে রাখা দরকার।' তবে রাজ্যে তোলপাড় সৃষ্টি হওয়া এই ঘটনায় ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে দায়ী করে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন মমতা। তার দাবি, 'এ ঘটনার জন্য দায়ী অমিত শাহ। উনিই ষড়যন্ত্রকারী। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দায়ী করব না। তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে চলে। নির্বাচন কমিশনের কথায় চললেও ওরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে।' প্রচারণায় এবার রাহুল গান্ধী অন্যদিকে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম চার দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি চার দফাও সম্পন্ন হবে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে। তবে নির্বাচনের এই মাঝামাঝি পর্যায়ে এসে দৃশ্যপটে হাজির হচ্ছেন কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী।