বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
করোনা মহামারি

আক্রান্তে ব্রাজিলকে ছাড়াল ভারত

ম গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত এক লাখ ৬৮ হাজার, মৃতু্য ৯০৪ ম মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ পশ্চিমবঙ্গেও আক্রান্তে রেকর্ড
যাযাদি ডেস্ক
  ১৩ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

এবার আক্রান্তের সংখ্যায় ব্রাজিলকেও ছাড়িয়ে গেল ভারত। করোনায় আক্রান্ত ও মৃতু্য বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য প্রদানকারী ওয়েবসাইট 'ওয়ার্ল্ডোমিটার' জানিয়েছে, ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৬৮ হাজার ৯১২ জন। আর মারা গেছে ৯০৪ জন। অন্যদিকে, ব্রাজিলে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে এক হাজার ৮০৩ জন এবং সংক্রমিত হয়েছে ৩৭ হাজারের বেশি। বিশ্বজুড়ে মহামারির ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে গত টানা ছয় দিনের মতো করোনা সংক্রমণের রেকর্ড হয়েছে ভারতে। সংবাদসূত্র : পিটিআই, এনডিটিভি, রয়টার্স, জি-নিউজ

বিশ্বে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের পরই এখন ভারতের অবস্থান। তৃতীয় স্থানে আছে দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম দেশ ব্রাজিল। ভারতে সোমবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ৩৫ লাখ ২৭ হাজারের বেশি। আর মৃতের সংখ্যা এক লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

দেশটিতে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বিপর্যস্ত পশ্চিমাঞ্চলীয় মহারাষ্ট্রপ্রদেশ। এই রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬৩ হাজার ২৯৪ জন সংক্রমিত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩৪৯ জন। মহামারির লাগাম টানতে রাজ্য সরকার চলতি সপ্তাহে পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা করতে যাচ্ছে। সংক্রমণের তালিকায় মহারাষ্ট্রের পরপরই রয়েছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালা, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশ। রাজধানী দিলিস্নতেও একদিনে সংক্রমণের সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছে। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ৭৭৪ জন সংক্রমিত এবং ৪৮ জন মারা গেছে। দিলিস্নর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, রাজধানীতে করোনার চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়েছে এবং এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাটে এই ভাইরাসে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে পাঁচ হাজার ৪৬৯ জন। এ নিয়ে গুজরাটে মোট আক্রান্ত তিন লাখ ৪৭ হাজার ৪৯৫ জনে পৌঁছেছে।

এদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গও করোনা সংক্রমণের নতুন রেকর্ড দেখেছে রোববার। এদিন এ রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার পেরিয়ে যায়। উদ্বেগজনক অবস্থা কলকাতারও। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজারের বেশি হলেও বলা হচ্ছে, এদিন অনেক কম সংখ্যক মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যারা পরীক্ষার আওতায় বাইরে রয়েছে, ভাইরাসের কবলে পড়েছে তাদেরও একটি বড় অংশ।

এদিকে, এরই মধ্যে বিধানসভা ভোট চলছে পশ্চিমবঙ্গে। ফলে অনিবার্যভাবে চলছে মিছিল-মিটিং। এসবে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে দেখা যাচ্ছে না। আবার মাস্কের প্রতিও অনীহা রয়েছে মানুষের। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে হু-হু করে। এ পরিস্থিতিতে কলকাতায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে হাসপাতাসগুলোতে শয্যা সংখ্যাও কমছে। এমনকি অনেক কোভিড হাসপাতালে কার্যত কোনো শয্যা খালি নেই।

ভারতের এ রাজ্যে করোনার সংক্রমণে ঊর্ধ্বমুখী এ হারের জন্য নির্বাচনকেই দুষছেন বিশেষজ্ঞরা। অবিলম্বে মিটিং, মিছিলসহ যাবতীয় প্রচার কর্মসূচি বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। পরিস্থিতি ভয়াবহ আঁচ করে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে বলা হয়েছে, করোনা সচেতনতায় রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রী, প্রার্থী ও যারা প্রচার করছেন, তাদেরই অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, ছত্তিশগড়ের ৫০ জেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে করোনা-বিধি মানা হচ্ছে না। করোনা এতটা দ্রম্নত ছড়ানো সত্ত্বেও করোনা-বিধি শিঁকেয় তুলে উত্তরাখন্ডের হরিদ্বারের কুম্ভ মেলায় লাখো মানুষ সমবেত হয়েছে। সেখানে গঙ্গাতীরে প্রচুর মানুষকে দেখা গেছে। অথচ হরিদ্বারে যে এভাবে করোনা-বিধি লঙ্ঘন করায় কেন্দ্রীয় সরকার কিছুই বলছে না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই কোটি ৯০ লাখ ৩৩ হাজার ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট ১০ কোটি ৪৫ লাখ মানুষকে করোনার টিকা দেওয়া হলো। তবে অনেক রাজ্যই অভিযোগ করেছে, তাদের হাতে যথেষ্ট সংখ্যায় ভ্যাকসিন নেই। কারও হাতে দুই দিনের, কারও কাছে তিনদিনের মতো টিকা মজুত আছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অবশ্য জানিয়েছে, ভ্যাকসিনের কোনো অভাব নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে